মো. আসাদুজ্জামান নূর: দেশের প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) গতকাল মূল্য সূচকের মিশ্র প্রবণতায় লেনদেন শেষ হয়েছে। বস্ত্র, ওষুধ ও রসায়ন, খাদ্যসহ প্রধান খাতগুলোয় দরবৃদ্ধি সূচকের পতন ঠেকিয়েছে। কিন্তু সূচক বাড়লেও লেনদেন কমেছে বড় ব্যবধানে।
পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগের দুই সপ্তাহে দর সংশোধন দেখা গেছে বছরের শুরু থেকেই ঊর্ধ্বমুখী থাকা পুঁজিবাজারে। এরপরে কভিড ও কোম্পানিগুলোর বিভিন্ন সময়ের আর্থিক প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে পোর্টফোলিও রিব্যালেন্সিং ইস্যুকে ঘিরে পুঁজিবাজারের উত্থান-পতন শুরু হয়; যা নতুন করে বিভ্রান্তি তৈরি করছে। এর প্রভাবেই বিনিয়োগ কিছুটা কমেছে।
গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হয়েছে এক হাজার ১৫০ কোটি ৮১ লাখ টাকা; যা আগের কার্যদিবসের চেয়ে ২৯৮ কোটি ৯৪ লাখ টাকা কম। মঙ্গলবার লেনদেন হয়েছিল এক হাজার ৪৪৯ কোটি ৭৫ লাখ টাকা।
গতকালের লেনদেনের ১২ দশমিক ১৩ শতাংশই ওষুধ ও রসায়ন খাতের। আগের কার্যদিবসে দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা খাতটির ৬৭ শতাংশের বেশি কোম্পানির দরবৃদ্ধি দেখা গেছে। বুধবার শীর্ষে থাকলেও মঙ্গলবারের চেয়ে লেনদেন কম হয়েছে।
অন্যদিকে আগের কার্যদিবসে লেনদেনের শীর্ষে থাকা আর্থিক প্রতিষ্ঠান খাতের লেনদেন তলানিতে নেমেছে। সাত দশমিক ৪৬ শতাংশ লেনদেনের মাধ্যমে তালিকার পঞ্চম স্থানে অবস্থান করছে খাতটি। এছাড়া প্রকৌশল ১২ দশমিক ০২ শতাংশ, বিবিধ ১১ দশমিক ৮৩ শতাংশ ও বস্ত্র খাতে ১১ দশমিক ২৬ শতাংশ লেনদেনের মাধ্যমে তালিকার দ্বিতীয়, তৃতীয় ও চতুর্থ অবস্থানে রয়েছে।
এদিকে প্রধান প্রধান খাত ওষুধ ও রসায়ন, বস্ত্র, খাদ্য জ্বালানিতে দরবৃদ্ধি দেখা গেছে। এর মধ্যে বস্ত্র খাতে ৮২ শতাংশ, প্রকৌশল ৬৪ শতাংশ, খাদ্য ৬৬ ও জ্বালানি ৫২ শতাংশের বেশি কোম্পানির দরবৃদ্ধি দেখা গেছে।
গতকাল ডিএসইতে মোট ৩৭৯টি কোম্পানির শেয়ার ও ইউনিট লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ২০৫টির, কমেছে ১২৮টির ও অপরিবর্তিত ছিল ৪৬টির। দিন শেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ৮ পয়েন্ট বেড়ে ডিএসইএক্স অবস্থান করছে সাত হাজার ৮১ পয়েন্টে। অপর দুই সূচকের মধ্যে ডিএসইএস ১.৫ পয়েন্ট বেড়ে এক হাজার ৫১২ পয়েন্টে ও ডিএস৩০ সূচক ৫ পয়েন্ট কমে দুই হাজার ৬০৪ পয়েন্টে অবস্থান করছে।
সূচক বাড়াতে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা রেখেছে ওয়ালটন হাই-টেক ইন্ডাস্ট্রিজ। কোম্পানিটির শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ দর বৃদ্ধিতে সূচক বেড়েছে ১.৯ পয়েন্ট। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ১.২ পয়েন্ট যোগ করেছে রবি। কোম্পানিটির দর বেড়েছে শূন্য দশমিক ৫২ শতাংশ। সূচকে তৃতীয় সর্বোচ্চ ১.১৭ পয়েন্ট যোগ করেছে বাংলাদেশ শিপিং করপোরেশন। কোম্পানিটির দর বেড়েছে ৪.৯ শতাংশ। এ ছাড়া সূচকে পয়েন্ট যোগ করেছে সামিট পাওয়ার, বেক্সিমকো ফার্মা, লিনডে বিডি, তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল, তিতাস গ্যাস, পূবালী ব্যাংক, ন্যাশনাল লাইফ ইন্স্যুরেন্স। সব মিলিয়ে এ ১০ কোম্পানি সূচক বাড়িয়েছে ৮ দশমিক ৫৬ পয়েন্ট।
বিপরীতে সূচক কমিয়েছে স্কয়ার ফার্মা, বেক্সিমকো, ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, পাওয়ার গ্রিড, এক্মি ল্যাবরেটরিজ, ইউনিলিভার, গ্রামীণফোন, ইস্টার্ন ব্যাংক, লংকাবাংলা ফাইন্যান্স ও বীকন ফার্মা। সব মিলিয়ে এ ১০ কোম্পানি সূচক কমিয়েছে ৮ দশমিক ২৭ পয়েন্ট।