নিজস্ব প্রতিবেদক: পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম বলেছেন, সাবেক রাষ্ট্রদূত এম খায়রুজ্জামানকে মালয়েশিয়া থেকে যত দ্রুত সম্ভব দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়। গতকাল তিনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
দেশে ফেরত পাঠানোর জন্য খায়রুজ্জামানকে কারাবন্দি করে রাখা হয়েছে জানিয়ে তিনি বলেন, একজন প্রবাসী বিদেশে আটকে থাকলে যে প্রক্রিয়ায় ফেরত আনা হয় তাকেও সেভাবে ফেরত আনা হবে। কী অভিযোগে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে সেটি জানতে চাইলে তিনি বলেন, মালয়েশিয়ান কর্তৃপক্ষ চিঠিতে একটি অভিবাসন আইন ভঙ্গের কথা বলেছে।
খায়রুজ্জামানের জাতিসংঘ শরণার্থী কার্ড আছে কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, সেটা আমি জানি না। কিন্তু মালয়েশিয়ান সরকার নির্দিষ্টভাবে উল্লেখ করেছে, মালয়েশিয়ান অভিবাসন আইন ভঙ্গ করার জন্য তাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলেন, ফেরত আনার পর স্বরাষ্ট্র ও আইন মন্ত্রণালয় ঠিক করবে তার বিরুদ্ধে যে মামলাটি ছিল সেটি কিভাবে পুনরুজ্জীবিত করা হবে।
অন্যদিকে মালয়েশিয়ার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হামজা জাইনুদ্দিন জানিয়েছেন, বাংলাদেশের অনুরোধে সাবেক রাষ্ট্রদূত এম খায়রুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করেছে মালয়েশিয়ার কর্তৃপক্ষ। গতকাল তিনি বলেন, প্রক্রিয়া মেনে রাষ্ট্রদূতকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হামজা জাইনুদ্দিনের বরাত দিয়ে খবর প্রকাশ করেছে মালয়েশিয়ার সংবাদপত্র দি স্টার।
মিডিয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, বুধবার খায়রুজ্জামানকে গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি ১০ বছরের বেশি মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছিলেন। ১৯৭৫ সালের জাতীয় চার নেতা হত্যা মামলায় জড়িত সন্দেহে সাবেক সেনা কর্মকর্তা খায়রুজ্জামান অভিযুক্ত ছিলেন। ১৯৭৫ সালে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চাকরি পাওয়ার পর তিনি মিসর, ফিলিপাইন এবং পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বিভিন্ন বিভাগে কর্মরত ছিলেন। ১৯৯৬ সালে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তাকে অবসরে পাঠানো ও গ্রেপ্তার করা হয়।
২০০৩ সালে বিএনপি সরকারের আমলে তিনি চাকরিতে মহাপরিচালক হিসেবে পুনর্বহাল হন। পরের বছর নির্দোষ বলে আদালত রায় দেন। ২০০৫ সালে তিনি মিয়ানমারে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত হন। পরে ২০০৭ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে মালয়েশিয়ায় রাষ্ট্রদূত হিসেবে নিযুক্ত হন।
২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর তাকে ডেকে পাঠানো হলে তিনি বিপদ আঁচ করতে পেরে কুয়ালালামপুরে জাতিসংঘ উদ্বাস্তু কার্ড সংগ্রহ করেন এবং ওই সময় থেকে তিনি মালয়েশিয়ায় অবস্থান করছিলেন।