নিজস্ব প্রতিবেদক : পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত বিদ্যুৎ খাতের কোম্পানি ডরিন পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড সিস্টেমস লিমিটেডের সহযোগী প্রতিষ্ঠান চাঁদপুর পাওয়ার জেনারেশন্স লিমিটেড (সিপিজিএল) বিদ্যুৎকেন্দ্রটির বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়েছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রাপ্ত তথ্যমতে, চাঁদপুর পাওয়ার জেনারেশন্স লিমিটেডের চাঁদপুরের বিদ্যুৎকেন্দ্রটির ৯৯ দশমিক ৯০ শতাংশ শেয়ার রয়েছে তালিকাভুক্ত ডরিন পাওয়ার জেনারেশন অ্যান্ড সিস্টেমসের কাছে। আর ১১৫ মেগাওয়াট সক্ষমতার এইচএফওভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্রটিতে গত ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদন শুরু হয়েছে।
বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) স্বাক্ষর করা বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির (পিপিএ) শর্তানুসারে এরই মধ্যে সফলভাবে কেন্দ্রটিতে ১০০ ঘণ্টার পরীক্ষামূলক উৎপাদন সম্পন্ন হয়েছে। গত ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে বাণিজ্যিক উৎপাদন চালুর বিষয়টি অনুমোদনের জন্য গত ১৩ ফেব্রুয়ারি কোম্পানির পক্ষ থেকে বিপিডিবিকে চিঠি দেয়া হয়েছে।
২০১৮ সালের জানুয়ারিতে পিডিবির সঙ্গে এ বিদ্যুৎকেন্দ্রের ১৫ বছরমেয়াদি পিপিএ স্বাক্ষরিত হয়। বাণিজ্যিক উৎপাদনের তারিখ, অর্থাৎ গত ১১ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত এ কেন্দ্র থেকে বিদ্যুৎ উৎপাদন ও সরবরাহ করা হবে। প্রতি বছর কেন্দ্রটি থেকে আনুমানিক এক হাজার ১০২ কোটি ২২ লাখ টাকা আয় হবে।
এদিকে চলতি হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর, ২০২১) ডরিন পাওয়ার জেনারেশন্স অ্যান্ড সিস্টেমস লিমিটেডের সহযোগী দুই কোম্পানির আয় বেড়েছে। একইসঙ্গে বকেয়া ঋণ ও সুদের হার কমায় আর্থিক ব্যয়ও উল্লেখযোগ্যভাবে কমেছে। এর ফলে এ প্রান্তিকে ডরিন পাওয়ারের শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) বেড়েছে। কোম্পানিটির প্রকাশিত চলতি হিসাববছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদনের মাধ্যমে এ তথ্য জানা গেছে।
জানা গেছে, কোম্পানিটির দ্বিতীয় প্রান্তিকে ইপিএস হয়েছে দুই টাকা ৩৩ পয়সা, যা আগের বছর একই সময় ছিল দুই টাকা পাঁচ পয়সা। অর্থাৎ, আগের বছরের তুলনায় ইপিএস বেড়েছে ২৮ পয়সা। আর প্রথম দুই প্রান্তিক বা ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর, ২০২১) ইপিএস হয়েছে চার টাকা ৮৬ পয়সা, যা আগের বছর একই সময়ে ছিল তিন টাকা ৮৫ পয়সা। এছাড়া ২০২১ সালের ৩১ ডিসেম্বর শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে ৪৭ টাকা ৬৯ পয়সা, যা ২০২১ সালের ৩০ জুন ছিল ৪৩ টাকা ২২ পয়সা। আর প্রথম দুই প্রান্তিকে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থপ্রবাহ দাঁড়িয়েছে চার টাকা তিন পয়সা (ঘাটতি); অথচ আগের বছর একই সময়ে ছিল এক টাকা ১২ পয়সা। দ্বিতীয় প্রান্তিকে নগদ অর্থপ্রবাহ কমার কারণ হিসেবে কোম্পানিটি জানিয়েছে, তাদের সহযোগী কোম্পানির পাওনা অর্থ আদায় কম হয়েছে এবং ৩১ ডিসেম্বর, ২০২১ তারিখে ক্লোজিং স্টক উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে।
কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ ৩০ জুন, ২০২১ সমাপ্ত হিসাববছরের আর্থিক প্রতিবেদন বিশ্লেষণ করে উদ্যোক্তা ও পরিচালক ব্যতীত শুধু সাধারণ বিনিয়োগকারীর জন্য ১৩ শতাংশ নগদ এবং সব বিনিয়োগকারীর জন্য ১২ শতাংশ বোনাস, অর্থাৎ সর্বমোট ২৫ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে আট টাকা ৯ পয়সা। ৩০ জুন, ২০২১ তারিখে এনএভি দাঁড়িয়েছে ৪৮ টাকা ৪১ পয়সা (পুনর্মূল্যায়নসহ)। এছাড়া এই হিসাববছরে কোম্পানিটির এনওসিএফপিএস হয়েছে ছয় টাকা ৪৬ পয়সা।
জ্বালানি খাতের ‘এ’ ক্যাটেগরির কোম্পানিটি ২০১৬ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়। ২০০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন ১৬১ কোটি ৭১ লাখ ৩০ হাজার টাকা। ডরিন পাওয়ারের রিজার্ভে রয়েছে ৫০১ কোটি ৯ লাখ টাকা। কোম্পানিটির মোট ১৬ কোটি ১৭ লাখ ১৩ হাজার ৩০৫ শেয়ার রয়েছে। ডিএসইর সর্বশেষ তথ্যমতে, মোট শেয়ারের মধ্যে উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের কাছে ৬৬ দশমিক ৬১ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক ১৮ দশমিক ৮৫ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীর কাছে ১৪ দশমিক ৫৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে।