তাজিজুল ইসলাম:‘অমর একুশে বইমেলা’এ যেন এক প্রাণের স্পন্দন। প্রতিবারের মতো এবারও বর্ণিল রঙে সেজেছে বাংলা একাডেমি ও সোহরাওয়ার্দী উদ্যান। নানা বয়সী মানুষের আনাগোনায় মুখর মেলা প্রাঙ্গণ। তবে কভিড-১৯-এর কারণে গত বছরের মতো বইমেলা শুরু হয়েছে কয়েকদিন দেরি করে। চলতি বছর বইমেলা আনুষ্ঠানিকভাবে শুরু হয় ১৫ ফেব্রুয়ারি। ওইদিন বেলা ৩টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গণভবন থেকে ভার্চুয়ালি উদ্বোধন করেন মেলা। শুরুর দিকে ২৮ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত মেলা চালু রাখার কথা থাকলেও, কভিড পরিস্থিতির উন্নতি হলে সময়সীমা বাড়ানোর ইঙ্গিত দেন তিনি।
কভিডকালে মেলার আবহ কেমন ছিলÑসেটা প্রত্যক্ষ করা হয়েছে মেলা প্রাঙ্গণ ঘুরে। দ্বিতীয় দিন পাঠক-দর্শনার্থীদের উপস্থিতি ছিল চোখে পড়ার মতো। কভিড মহামারির এ সময় প্রত্যাশার চেয়ে বেশি দর্শনার্থী ছিলেন বলে মনে করছেন প্রকাশনী সংস্থাগুলোর স্বত্বাধিকারীরা।
প্রথমা প্রকাশনী’র ব্রাঞ্চ ম্যানেজার বলেন, ‘এ কথা সত্য যে, করোনার আগের সময়ের চেয়ে পাঠকসমাগম কিছুটা কম। তবে করোনাকালে আমাদের প্রত্যাশার তুলনায় উপস্থিতি অনেক বেশি।’ মেলা শুরুর দিকটায় বরাবরের মতো বিক্রি কিছুটা কম বলে জানান স্টলসংশ্লিষ্টরা।
মাওলা ব্রাদার্সের একজন বিক্রয়কর্মী জানান, অন্যান্য বছরের মতো এবারও মেলা শুরুর দিকটায় বিক্রি কিছুটা কম। এ সময় মানুষ বই কেনার চেয়ে দেখতে বেশি পছন্দ করেন। এ ছাড়া আগতদের মধ্যে বেশিরভাগ ঘুরতে আসেন এখানে।
মেলা শুরুর আগে থেকে সবচেয়ে আলোচিত বিষয়Ñসামগ্রিক নিরাপত্তা ব্যবস্থা। সম্প্রতি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) কমিশনার মোহা. শফিকুল ইসলাম জঙ্গি হামলার আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। এ জন্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রস্তুত বলে উল্লেখ করেন তিনি। পুরো মেলা প্রাঙ্গণ সিসিটিভি ক্যামেরার আওতাভুক্ত। পোশাকধারী আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের পাশাপাশি উপস্থিতি ছিল সাদা পোশাকধারী সদস্যদেরও।
কভিডকালে বইমেলার সব প্রবেশপথে ছিল আগতদের শরীরের তাপমাত্রা নির্ণয়ের ব্যবস্থা। সবার জন্য বাধ্যতামূলক ছিল মাস্ক পরিধান। মেলায় আসা
পাঠক-দর্শনার্থীদের মতামত জানতে গিয়ে কথা হয় মনিরুল ইসলাম নামে একজন দর্শনার্থীর সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘করোনা প্রকোপের কারণে গতবার এখানে আসতে পারিনি। এ বছর আসতে পেরে খুব ভালো লাগছে।’ মেলার সামগ্রিক পরিস্থিতি নিয়ে জানতে চাইলে তিনি জানান, ‘মেলার সার্বিক পরিস্থিতি খুবই ভালো। বিশেষ করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর তৎপরতা প্রশংসার দাবি রাখে।’