নিজস্ব প্রতিবেদক, চট্টগ্রাম: তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেছেন, উন্নয়নের কারণে আগামী নির্বাচনে জনগণ আবারও নৌকায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেবে। গতকাল দুপুরে চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসে সমসাময়িক বিষয় নিয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি এ কথা বলেন।
এক প্রশ্নের জবাবে তথ্যমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘বিএনপি তাদের নয়াপল্টনের অফিসে ১২ বছর আগে থেকে আমাদের সরকারের বিদায়ের ঘণ্টা বাজাচ্ছে। আরও কয় বছর বাজাতে হয়, সেটা জনগণ ঠিক করবে। তারা বিদায় ঘণ্টা বাজানো সত্ত্বেও জনগণ গত দুই নির্বাচনে আমাদের নির্বাচিত করে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দিয়েছে। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি, বঙ্গবন্ধুকন্যার নেতৃত্বে দেশে যে অভাবনীয় উন্নয়ন হয়েছে তাতে আগামী নির্বাচনেও জনগণ আবারও নৌকায় ভোট দিয়ে শেখ হাসিনাকে দেশ পরিচালনার দায়িত্ব দেবে।’
ষাটোর্ধ্বদের পেনশন স্কিম প্রধানমন্ত্রীর একান্তই নিজস্ব চিন্তার ফসল বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘ষাটোর্ধ্বদের সবাই যাতে পেনশনের আওতায় আসে, সেজন্য প্রধানমন্ত্রী দ্রুত একটি আইন প্রণয়নের জন্য নির্দেশনা দিয়েছেন। সবাই এটির আওতায় আসবে। বিদেশে আমাদের কর্মীরা যারা কাজ করেন তারাও এর আওতায় আসবেন। এটির জন্য বিএনপিসহ কোনো রাজনৈতিক দল কখনও দাবি করেনি। এভাবে প্রধানমন্ত্রী আমাদের দেশকে একটি সামাজিক কল্যাণ রাষ্ট্রে রূপান্তর করতে চান।’
সুজন প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে ড. হাছান বলেন, ‘সুজন এরা কারা? সুজন একটি এনজিও, এই এনজিও’র সারাদেশে শাখাও নেই, প্রশাখাও নেই। এরা ব্যক্তিবিশেষ নিয়ে একটা এনজিও। বিভিন্ন সংস্থা থেকে তারা তহবিল সংগ্রহ করে চলে। এমনকি নির্বাচন কমিশনের কাছ থেকেও তারা একসময় তহবিল নিয়েছিল। যেটি নিয়ে প্রশ্ন রেখেছেন সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার।’
যে ‘স্বচ্ছতা’ ও ‘অংশগ্রহণমূলকভাবে’ এবার নির্বাচন কমিশন গঠনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে, তা ‘অভাবনীয়’ বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘৭৫ বছরের গণতন্ত্রের দেশ ভারতসহ কয়েকশ বছরের পুরোনো গণতন্ত্রের দেশেও এভাবে করা হয় না। এখানে সবার সঙ্গে বসা হয়েছে। রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজের প্রতিনিধি, সাংবাদিকদের বিভিন্ন ফোরাম এবং সুজনসহ যারা টকশো করেন, তাদের সঙ্গেও বসা হয়েছে। বিএনপি ঘরানার বুদ্ধিজীবীরাও সেখানে গেছেন। এরপর যে নামগুলো জমা পড়েছে, সেগুলো প্রকাশ করা হয়েছে।’
নির্বাচনকালীন সরকার বিষয়ে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সংবিধান অনুযায়ী অবশ্যই একটি নির্বাচনকালীন সরকার থাকবে। বর্তমান সরকার গত নির্বাচনে নির্বাচিত হয়েছিল, সেই সরকারই নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে সংবিধান অনুযায়ী দায়িত্ব পালন করবে। নির্বাচন কখনও সরকারের অধীনে হয় না, নির্বাচন হয় নির্বাচন কমিশনের অধীনে। নির্বাচনকালে কোনো মন্ত্রী এমনকি মাননীয় প্রধানমন্ত্রীরও একজন কনস্টেবল বদলি করার ক্ষমতা থাকে না। তখন সরকার শুধু রুটিন কাজ করতে পারে। সুতরাং বিএনপি যে ধোঁয়া তুলছে, নির্বাচনকালে সবাইকে নিয়ে একটি সরকার গঠন করার সংবিধান অনুযায়ী সেটি করার কোনো সুযোগ নেই।’
আরেক প্রশ্নে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তারা (রুহুল কবির রিজভী) স্বপ্ন দেখেন ষড়যন্ত্রের, কোনো জায়গা থেকে একটা চিঠি আনলে তারা পুলকিত হন। কোনো জায়গা থেকে খালেদা জিয়ার জন্য একটা চিঠি এলে, কাউকে ধরে একটা বিবৃতি আদায় করতে পারলে তারা পুলকিত হন। রিজভী সাহেবরা যেই বিদায় ঘণ্টা বাজাচ্ছেন, সেই ঘণ্টা তারা বাজাতে থাকুক, জনগণ আমাদের সঙ্গেই আছে।’
এসময় চট্টগ্রাম জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এমএ সালাম ও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন উপস্থিত ছিলেন।