শেয়ার বিজ ডেস্ক: রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ থামার লক্ষণ নেই। অনড় অবস্থানে দুই পক্ষ। এই পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়াকে কোণঠাসা করতে একগুচ্ছ অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা চাপিয়েছে কয়েকটি দেশ। এ কারণে আন্তর্জাতিক বাজারে বেড়েছে তেলের দাম। তাই পরিস্থিতি সামাল দিতে বাজারে তেল ছাড়ার ঘোষণা দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। খবর: এএফপি।
বিশ্ব বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় গত মঙ্গলবার বৈঠকে বসে ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি (আইইএ)। ওই বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়, আন্তর্জাতিক বাজারে ভারসাম্য বজায় রাখতে ৬ কোটি ব্যারেল অপরিশোধিত তেলের জোগান দেবে সংস্থাটির অন্তর্ভুক্ত দেশগুলো। এর অর্ধেক দেবে আমেরিকা।
বৈঠক শেষে বাইডেন বলেন, আমি ঘোষণা করছি, আরও ৩০টি দেশের সঙ্গে যৌথভাবে আন্তর্জাতিক বাজারে ৬ কোটি ব্যারেল তেল জোগান দেয়া হবে। এই উদ্যোগে আমেরিকা নেতৃত্ব দেবে। আমরা ৩ কোটি ব্যারেল তেল ছাড়ব। প্রয়োজনে জোগান আরও বাড়াতে প্রস্তুত ওয়াশিংটন। বিবৃতিতে মার্কিন প্রেসিডেন্ট আরও বলেন, ‘যদি প্রয়োজন হয়, আরও পেট্রোলিয়াম সরবরাহে প্রস্তুত রয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।’
বিভিন্ন তেল উৎপাদনকারী দেশের মিলিত উদ্যোগে তৈরি হয়েছে এনার্জি এজেন্সি। আন্তর্জাতিক বাজারে অপরিশোধিত তেলের দাম নিয়ন্ত্রণে সংস্থাটির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ২৪ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনে হামলা চালায় রাশিয়ার সামরিক বাহিনী। সেই থেকে চলছে লড়াই। এরই পরিপ্রেক্ষিতে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে শিক্ষা দিতে অন্য আর্থিক নিষেধাজ্ঞার পাশাপাশি রাশিয়ার কয়েকটি ব্যাংককে আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেনের ‘সুইফট’ ব্যবস্থা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। ইউরোপীয় ইউনিয়নের প্রধান উরসুলা ভন ডার লিয়েন জানান, কয়েকটি রুশ ব্যাংককে ‘সুইফট’ থেকে বাদ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। ফলে ওই ব্যাংকগুলো গোটা বিশ্বে আর কাজ করতে পারবে না। ধাক্কা খাবে রাশিয়ার আমদানি-রপ্তানি।
এছাড়া আন্তর্জাতিক বাজারে তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাসের বড় জোগানদাতা রাশিয়া। বিশেষ করে মস্কোর গ্যাস সাপ্লাইয়ের ওপর নির্ভরশীল ইউরোপের দেশগুলো। ফলে স্বাভাবিকভাবেই রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের কারণে ধাক্কা খাচ্ছে তেলের জোগান। ইতোমধ্যে আন্তর্জাতিক বাজারে ব্যারেল প্রতি অপরিশোধিত তেলের দাম দাঁড়িয়েছে প্রায় ১০৭ ডলারে। এই দাম গত সাত বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। এই হারে দাম বাড়লে বিপাকে পড়বে অনেক দেশ। তবে ‘ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সি’ তেলের জোগান বাড়ালে কিছুটা স্বস্তি আসবে।