সাময়িক যুদ্ধবিরতির ঘোষণা রাশিয়ার

শেয়ার বিজ ডেস্ক: ইউক্রেনের বিরুদ্ধে সাময়িক যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিয়েছে রাশিয়া। স্থানীয় সময় গতকাল ১০টায় দেশটি সরকারিভাবে ঘোষণা করল যুদ্ধবিরতির বিষয়টি। খবর: বিবিসি, রয়টার্স।

ইউক্রেনে রুশ আগ্রাসনের ১০ দিনের মাথায় মস্কোর তরফ থেকে এই ঘোষণা দেয়া হয়। জানা গেছে, এই মুহূর্তে ইউক্রেনে আটকে রয়েছেন একাধিক দেশের কয়েক হাজার নাগরিক। তাদের দেশ থেকে বেরোনোর সময় দিল রাশিয়া। এছাড়া কয়েক দিন আগে দুই দেশের সরকার সাধারণ নাগরিকদের ওপর হামলা না চালানোর বিষয়ে একমত হয়। আর তাই ইউক্রেনের বিরুদ্ধে এই সাময়িক যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করে রাশিয়া ইউক্রেনের সাধারণ নাগরিকদেরও নিরাপদ স্থানে সরে যাওয়ার সময় দিল।

ইউক্রেনের সাধারণ নাগরিকদের নিরাপদে ইউক্রেন ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য মারিউপোল, ভোলনোভাখা দিয়ে মানব করিডোর গঠন করছে রাশিয়া। বেলারুশে রুশ ও ইউক্রেনীয় প্রতিনিধিদলের বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে জানান রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র।

এর আগে শুক্রবার মস্কোয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক মুখপাত্র বলেন, ‘আজ, ৫ মার্চ মস্কোর স্থানীয় সময় বেলা ১০টা থেকে খণ্ডকালীন যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে রাশিয়া। ইউক্রেনের মারিউপুল ও ভোলনোভাখার বাসিন্দারা যেন নিরাপদ স্থানে সরে যেতে পারেন, সেজন্যেই এই যুদ্ধবিরতি দেয়া হয়েছে।’ রাশিয়ার যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করা শহর দুটি হলো মারিওপোল ও ভোলনোভাখা।

যুদ্ধের ময়দানে আটকে পড়া সাধারণ নাগরিকদের নিরাপদ আশ্রয়ের উদ্দেশে শহর ছেড়ে বেরিয়ে যাওয়ার জন্য এই পদক্ষেপ নিয়েছে মস্কো।

রুশ সংবাদমাধ্যম স্পুটনিকের বরাত দিয়ে বিবিসি ও রয়টার্স জানায়, ‘গ্রিনউইচ মিন টাইম’ হিসেবে ইউক্রেনে সকাল ৬টায় যুদ্ধবিরতি ঘোষণা করেছে রাশিয়া। নাগরিকদের যুদ্ধবিধ্বস্ত এলাকাগুলো থেকে বেরিয়ে নিরাপদ জায়গায় যাওয়ার জন্য প্রায় সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা সময় দিয়েছে

পুতিনের বাহিনী। তবে অনেকে বলছেন, তাৎক্ষণিকভাবে বিষয়টি স্পষ্ট নয় যে, কতক্ষণ এই রুট খোলা থাকবে। এদিকে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর তরফ থেকে এখনও বিষয়টি নিশ্চিত করা হয়নি।

বিশ্লেষকদের একাংশ মনে করেন, বেলারুশে যুদ্ধ থামাতে ইউক্রেন ও রাশিয়ার মধ্যে আলোচনার সুফল মিলছে এবার। তৃতীয় দফায় আবার বৈঠকে বসতে চলেছে রাশিয়া ও ইউক্রেনের।

এদিকে সাময়িক যুদ্ধবিরতি হওয়ায় কিয়েভ ও খারকিভ থেকে বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের উদ্ধার কার্যক্রম কিছুটা সহজ হয়েছে। শুক্রবার জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে রাশিয়া জানায়, খারকিভ থেকে অন্য দেশের নাগরিকদের বের করে আনতে বাস প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

যুদ্ধ শুরুর পর দুই দেশের মধ্যে প্রথম বৈঠক হয় ২৮ ফেব্রুয়ারি। সাবেক সোভিয়েত রাষ্ট্র বেলারুশের উদ্যোগে দেশটির ইউক্রেন সীমান্তবর্তী শহর গোমেলে এ বৈঠক হয় দুই দেশের প্রতিনিধিদলের মধ্যে। এরপর দ্বিতীয় দফা বৈঠক হয় গত বৃহস্পতিবার (৩ মার্চ)। প্রথম বৈঠকে কোন কোন বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল, তা স্পষ্টভাবে জানা না গেলেও দ্বিতীয় দফার বৈঠকে তিনটি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দেয়া হয়। এগুলো হলোÑঅবিলম্বে যুদ্ধবিরতি, অস্ত্রবিরতি ও অবিরাম গোলাবর্ষণে ধ্বংস হয়ে যাওয়া শহর ও গ্রাম থেকে বেসামরিক লোকজনকে সরিয়ে নেয়ার জন্য মানবিক করিডোর চালু। এর মধ্যে তৃতীয় বিষয়, অর্থাৎ অবিরাম গোলাবর্ষণে ধ্বংস হয়ে যাওয়া শহর এবং গ্রাম থেকে বেসামরিক লোকজনকে সরিয়ে নেয়ার জন্য মানবিক করিডোর চালুর ব্যাপারে রুশ ও ইউক্রেন প্রতিনিধিদল ঐকমত্যে পৌঁছেছেন বলে গত বৃহস্পতিবারই জানিয়েছিল আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো।

বর্তমানে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ, খারকিভ, শেরনিগভ, মারিউপোল ও ভোলনোভাখা

শহরে সংঘাত চলছে। এসব শহরের মধ্যে মারিউপোল ও ভোলনোভাখা শহরের অবস্থা সবচেয়ে নাজুক।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০