মৌলভিত্তির কোম্পানিগুলোর দরপতন

মো. আসাদুজ্জামান নূর: ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে গতকাল ফের মূল্য সূচকের বড় পতনে লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে। বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, সূচকের পতন বয়ে এনেছে মৌলভিত্তির ও বড় মূলধনি কোম্পানিগুলোর দরপতন। প্রধান মূল্যসূচক ৫৭ পয়েন্ট হ্রাস পেয়েছে। এর মধ্যে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো, গ্রামীণফোন ও ওয়ালটন হাইটেক কমিয়েছে ৩১ পয়েন্টের বেশি।

পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্টরা বলছেন, রাশিয়া-ইউক্রেন সংকট ও নেগেটিভ ইকুইটি-সংক্রান্ত বিষয় কেন্দ্র করে গত সপ্তাহের পতনের রেশ এখনও কাটেনি। আস্থা সংকটে রয়েছেন বিনিয়োগকারীরা। তারা এখনও শেয়ার বিক্রি অব্যাহত রেখেছেন। ফলে পুঁজিবাজারে ধারাবাহিক পতন দেখা যাচ্ছে।

পতনের ধারা অব্যাহত থাকায় গতকাল ডিএসইতে লেনদেন হওয়া ৩৭৯টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের মধ্যে দর বেড়েছে ৯৮টির, কমেছে ২৪৭টির ও অপরিবর্তিত ছিল ৩৪টির। বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের মূল্য হ্রাসের কারণে দরপতন দেখা গেছে প্রায় সব খাতে।

অন্যদিকে, লেনদেনও রয়েছে তলানিতে। পতনের চাপ থেকে বের হয়ে কোনোভাবে ৭০০ কোটির ঘর অতিক্রম করতে পারছে না। যদিও আগের কার্যদিবসের চেয়ে লেনদেন সামান্য বেড়েছে। গতকাল ডিএসইতে ৬৫১ কোটি ৫৬ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট হাতবদল হয়েছে, যা আগের দিনের চেয়ে ৭ কোটি টাকা বেশি। বৃহস্পতিবার ডিএসইতে ৬৪৪ কোটি ৫৫ লাখ টাকার লেনদেন হয়েছিল।

লেনদেনে এগিয়ে ছিল বিবিধ খাত। ১৫ দশমিক ৩৪ শতাংশ লেনদেন করে খাতটি শীর্ষে ছিল। যদিও খাতটির প্রায় ৭০ শতাংশ কোম্পানির দরপতন হয়েছে। দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ওষুধ ও রসায়ন খাতে লেনদেন হয়েছে ১৩ দশমিক ২৫ শতাংশ, সেই সঙ্গে ৬৭ শতাংশ কোম্পানির দরপতন দেখা গেছে। এ ছাড়া বস্ত্র ১১ দশমিক ৯০, ট্যানারি ১১ দশমিক ৩৩ ও প্রকৌশল আট দশমিক ৪৫ শতাংশ লেনদেন করে তালিকার পরের অবস্থানে ছিল।

এগুলোর মধ্যে বস্ত্র খাতে ৭১, ট্যানারি খাতে ৬৬ ও প্রকৌশল খাতে ৬৯ শতাংশের বেশি কোম্পানির দরপতন হয়েছে। বাকি খাতের লেনদেন আট শতাংশের নিচে ছিল এবং ৭৯ শতাংশ মিউচুয়াল ফান্ড ও পাট খাতের সব কোম্পানির দর বৃদ্ধি ছাড়া অন্য খাতে দরপতন দেখেছেন বিনিয়োগকারীরা।

গতকাল দিনশেষে ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স ৫৭ পয়েন্ট কমে অবস্থান করে ছয় হাজার ৬৩৮ পয়েন্টে। সূচকে বড় ধাক্কাটা ছিল ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পানির। ৩ দশমিক ৪৩ শতাংশ দরপতনে কোম্পানিটি সূচক কমিয়েছে ১৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ। এরপর সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ২৮ পয়েন্ট সূচক হ্রাস পেয়েছে গ্রামীণফোনের দরপতনে। কোম্পানিটির শেয়ারদর গতকাল ১ দশমিক ৭৩ শতাংশ কমেছে। এ ছাড়া ২ দশমিক ১৬ শতাংশ মূল্য হ্রাসে ওয়ালটন হাইটেক সূচক ফেলেছে ৮ দশমিক ৬২ পয়েন্ট। সব মিলিয়ে এই তিন কোম্পানির কারণে সূচক পড়েছে ৩১ দশমিক ৫৭ পয়েন্ট।

এ ছাড়া লাফার্জহোলসিম বাংলাদেশ, রবি, ইউনাইটেড পাওয়ার, বেক্সিমকো ফার্মা, রেনাটা, স্কয়ার ফার্মা, ওরিয়ন ফার্মার মতো কোম্পানিগুলোর দরপতনে সূচক হ্রাস পেয়েছে। সব মিলিয়ে এই ১০ কোম্পানি সূচক নামিয়েছে ৪২ দশমিক ১৮ পয়েন্ট।

বিপরীতে সূচক টেনে তোলার চেষ্টায় ছিলÑবীকন ফার্মা, ব্র্যাক ব্যাংক, তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল, সোনালী পেপার, কেয়া কসমেটিকস, ন্যাশনাল ব্যাংক, বিডি থাই ফুড, ডেসকো, পূবালী ব্যাংক ও আরএন স্পিনিং মিলস লিমিটেড। কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম বাড়ায় সূচকে যোগ হয়েছে মাত্র ৪ দশমিক ৭৬ পয়েন্ট।

এ ছাড়া অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইএস বা শরিয়াহ্ সূচক ১০ পয়েন্ট কমে অবস্থান করছে এক হাজার ৪৩১ পয়েন্টে ও ডিএস৩০ সূচক ২৪ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে দুই হাজার ৪৩৮ পয়েন্টে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০