সাইদ সবুজ, চট্টগ্রাম: চট্টগ্রামে কোরীয় ইপিজেডের (কেইপিজেড) প্রতিষ্ঠান হিলা ক্লথিং বিডি লিমিটেড। শতভাগ রপ্তানিমুখী শিল্পপ্রতিষ্ঠান হিসেবে চট্টগ্রাম বন্ড কমিশনারেটে নিবন্ধিত এটি। এ সুযোগ কাজে লাগিয়ে বন্ড সুবিধার অপব্যবহার করে দুই বছরে ৫৫ লাখ ৫১ হাজার টাকা রাজস্ব ফাঁকি দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। যে কারণে সম্প্রতি প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করছে চট্টগ্রাম বন্ড কমিশনারেট।
সূত্র জানায়, হিলা ক্লথিং বিডি লিমিটেড ২০১০ সালে ১১ আগস্ট চট্টগ্রাম বন্ড কমিশনারেট থেকে বন্ডেড প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিবন্ধন নেয়। ফলে লাইসেন্সি হিসেবে লাইসেন্সিং রুলসের আওতায় যাবতীয় আমদানি-রপ্তানি ও আনুষঙ্গিক কার্যক্রম সম্পাদনের জন্য প্রতিষ্ঠানটি আইনানুগভাবে চট্টগ্রাম বন্ড কমিশনারেটের কাছে দায়বদ্ধ। ২০১৯ সালের ১ জানুয়ারি থেকে ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত দুই বছর সময়ের প্রতিষ্ঠানটির বার্ষিক নিরীক্ষা করে চট্টগ্রাম বন্ড কমিশনারেট।
এ সময় বেপজার অনলাইন ড্যাসবোর্ড থেকে ইম্পোর্ট পারমিটগুলো যাচাই করে দেখা যায়, বিপুল পরিমাণ পণ্যের বিপরীতে বেপজার গেট পাস ইস্যু করা হয়নি অর্থাৎ আমদানিকৃত পণ্য ইপিজেডের অভ্যন্তরে প্রবেশ করানো হয়নি। কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির এলসি বা রপ্তানিকারকের ইএক্সপি যাচাই করে দেখা যায়, আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান ওই চালানগুলোর মূল্য পরিশোধ করেছে। অর্থাৎ আমদানিকারক যে পরিমাণ পণ্য আমদানি করেছে, সে পরিমাণ পণ্য ইপিজেডের অভ্যন্তরে প্রবেশ করেনি। এতে প্রতীয়মান হয়, হিলা ক্লথিং বিডি লিমিটেড আমদানিকৃত পণ্যগুলো উৎপাদনে ব্যবহার না করে বন্ড সুবিধায় আমদানিকৃত কাঁচামাল অবৈধভাবে অপসারণ করে খোলা বাজারে বিক্রি করেছে।
প্রতিষ্ঠানটি দুই বছরের মোট ১৩টি চালানের বিপরীতে ৪৫ লাখ ৬০ হাজার ৭৮৭ টাকা মূল্যের কাঁচামাল অবৈধভাবে অপসারণ করেছে। যার বিপরীতে ১২৭ দশমিক ৭২ শতাংশ হারে সরকারের রাজস্ব আসে ৫৫ লাখ ৫১ হাজার ৯০৮ টাকা, যা প্রতিষ্ঠানটি ফাঁকি দিয়েছে। ফলে এই টাকা আদায় করতে প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে কারণ দর্শানোর নোটিশ জারি করেছে চট্টগ্রাম বন্ড কমিশনারেট।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্ড কমিশনার এ কে এম মাহবুবুর রহমান শেয়ার বিজকে বলেন, প্রতিষ্ঠানটি কস্টম আইন এবং বন্ডেড ওয়্যারহাউস লাইসেন্সিং বিধিমালা ২০০৮-এর বিধিগুলো লংঘন করেছে; যা শাস্তিযোগ্য অপরাধ। তাই প্রতিষ্ঠানটির কাছে কারণ দর্শানো নোটিশের মাধ্যমে ১০ কার্যদিবসের মধ্যে লিখিত জবাব চাওয়া হয়েছে। একই সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটি ব্যক্তিগত শুনানি চাইলে তা লিখিত জবাবে উল্লেখ করতে বলা হয়েছে। অন্যদিকে নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোনো জবাব পাওয়া না গেলে সরকারি রাজস্ব সংরক্ষণ ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে দলিলপত্র ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা ও তথ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।