নিজস্ব প্রতিবেদক: কাজিরা মুসলিম বিয়ে ও তালাক নিবন্ধন করার নির্ধারিত ফি’র চেয়ে বেশি টাকা যাতে নিতে না পারেন, সেজন্য মন্ত্রণালয়কে নজরদারি বাড়াতে বলেছে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটি। কমিটি বলছে, বিয়ের নিবন্ধকরা একাধিক হিসাবের খাতা রেখে সরকারকে অসত্য তথ্য দেন, যার ফলে ভোগান্তিতে পড়ে মানুষ। সরকার নির্দিষ্ট ফি ঠিক করে দেয়ার পরও নিবন্ধকরা যে বেশি ফি নিচ্ছেন, সেজন্য তাদের জবাবদিহির মধ্যে আনতে বলেছে কমিটি। গতকাল সোমবার সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত কমিটির বৈঠকে মুসলিম বিয়ে ও তালাক নিবন্ধন আইন এবং বিধিমালা নিয়ে আলোচনা করা হয়।
বৈঠক শেষে কমিটির সভাপতি শহীদুজ্জামান সরকার বলেন, ‘আমাদের কাছে অনেক সময় এই বেশি ফি আদায় নিয়ে অভিযোগ আসে। আমরা নিজেরাও দেখেছি সরকার-নির্ধারিত ফি’র বাইরে গিয়ে কাজি সাহেবরা টাকা নেন। তারা দুই রকমের খাতা রাখেন। মন্ত্রণালয়কে এ ব্যাপারে নজরদারি বাড়াতে বলা হয়েছে। বেশি ফি যারা নিচ্ছেন, তাদের একটা জবাবদিহির মধ্যে আনতে হবে।’
‘মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন) বিধিমালা, ২০০৯’-এ বলা আছে, একজন নিকাহ নিবন্ধক চার লাখ টাকা পর্যন্ত দেনমোহরের ক্ষেত্রে প্রতি এক হাজার টাকার জন্য সাড়ে ১২ টাকা ফি নিতে পারবেন।
দেনমোহর চার লাখের বেশি হলে প্রতি এক লাখ বা অংশবিশেষের জন্য ১০০ টাকা নিবন্ধন ফি নিতে পারবেন। সর্বনি¤œ ফি হবে ২০০ টাকা। তালাক নিবন্ধনের ফি ৫০০ টাকা।
একজন নিবন্ধক প্রতি বছর সরকারি কোষাগারে ১০ হাজার টাকা নিবন্ধন ফি এবং নবায়নের জন্য পাঁচ হাজার টাকা জমা দেন।
তালাক নিবন্ধনের নকল সংগ্রহ করার জন্য নিবন্ধকরা টাকা আদায় করেন বলে উল্লেখ করে কমিটির সভাপতি বলেন, এর জন্য টাকার দরকার নেই। তবুও নেয়া হচ্ছে।
বৈঠকে মন্ত্রণালয় জানায়, বিভিন্ন অনিয়মের অভিযোগে ২০২০-২১ অর্থবছরে ৯ নিবন্ধককে কারণ দর্শানোর নোটিস দেয়া হয়। এর মধ্যে দুজনের সনদ বাতিল করা হয়।
বৈঠকে জানানো হয়, ২০১৯ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত মোট সাত কোটি ৮৫ হাজার ৪৫৮ টাকা নিকাহ রেজিস্ট্রার কর্তৃক কোষাগারে জমা পড়েছে।
সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে ‘মুসলিম বিবাহ ও তালাক (নিবন্ধন) বিধিমালা’ জনস্বার্থে আধুনিক ও যুগোপযোগী করতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার জন্য মন্ত্রণালয়কে সুপারিশ করা হয়েছে।
এ বিষয়ে সভাপতি জানান, কমিটি এই বিধিমালাকে যুগোপযোগী করার সুপারিশ করেছে। শহীদুজ্জামান সরকারের সভাপতিত্বে বৈঠকে কমিটির সদস্য মোস্তাফিজুর রহমান, আব্দুল মজিদ খান এবং রুমিন ফারহানা অংশ নেন।
