নিজস্ব প্রতিবেদক: খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ পঞ্চমবারের মতো বেড়েছে। এবার বাড়ানো হয়েছে আগের মতোই ছয় মাস। দুর্নীতিতে দণ্ডিত বিএনপি চেয়ারপারসনের এ-সংক্রান্ত আবেদনে দণ্ড স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে তার মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন দিয়েছে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
২০২০ সালের ২৫ মার্চ সাজা স্থগিতের পর থেকে তিনি প্রায় দুই বছর কারাগারের বাইরে তার গুলশানের বাসায় থাকছেন।
মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ জনসংযোগ কর্মকর্তা শরীফ মাহমুদ অপু বলেন, এ মেয়াদেও আগের মতোই তিনি বিদেশ যেতে পারবেন না এবং দেশে থেকেই চিকিৎসা নিতে হবে।
এ নিয়ে পঞ্চমবারের মতো খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়িয়েছে সরকার। আজ চলতি মেয়াদ শেষ হবে। এর আগে ছয় মাস করে চারবার খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছিল।
গত ১৬ মার্চ আইনমন্ত্রী আনিসুল হক খালেদা জিয়ার পরিবারের আবেদনটি আইনি মতামত দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর কথা জানিয়েছিলেন।
তিনি তখন বলেছিলেন, আগের শর্তে (বিদেশে যাওয়া যাবে না এবং দেশে চিকিৎসা নিতে হবে) তার মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়ানোর জন্য মতামত দেয়া হয়েছে। সবকিছু আগের মতো, নতুন কিছু যুক্ত করা হয়নি।
দেশে কভিড মহামারি শুরু হওয়ার পর খালেদার পরিবারের আবেদনে তাকে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ নির্বাহী আদেশে সাময়িকভাবে মুক্তি দেয় সরকার। তবে শর্ত ছিল, তাকে দেশেই থাকতে হবে এবং বাসায় চিকিৎসা নিতে হবে।
যদিও গত বছর এপ্রিলে খালেদা জিয়া কভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর বাসায় নয়, চারবার এভারকেয়ারে চিকিৎসা নেন। তবে স্বজনদের আবেদন ও বিএনপির নানা কর্মসূচির পরও তাকে বিদেশে নেয়ার অনুমতি দেয়নি সরকার।
২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজা হলে কারাজীবন শুরু হয় খালেদা জিয়ার। পরে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলায়ও তার সাজার রায় হয়।
৭৬ বছর বয়সী এই সাবেক প্রধানমন্ত্রী বহু বছর ধরে আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা জটিলতায় ভুগছেন। কভিডে আক্রান্ত হওয়ার পর ২০২১ সালের এপ্রিলে খালেদাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এরপর কয়েক দফা হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার পর বাসায় ফেরেন তিনি।
সবশেষ গত ১৩ নভেম্বর ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর তার ‘পরিপাকতন্ত্রে’ রক্তক্ষরণ এবং লিভার সিরোসিসের কথা জানান চিকিৎসকরা। দীর্ঘ ৮১ দিন হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে গত ১ ফেব্রুয়ারি তিনি গুলশানের বাসায় ফেরেন।
সে সময় তাকে বিদেশে নেয়ার অনুমতি চাওয়া হয়েছিল পরিবারের পক্ষ থেকে। তবে দণ্ড স্থগিতের শর্তের কথা মনে করিয়ে দিয়ে সরকার তা নাকচ করে দেয়।