সৌদি-কুয়েত যৌথভাবে ডোরা গ্যাসক্ষেত্রের উন্নয়নে কাজ করবে

শেয়ার বিজ ডেস্ক: সৌদি আরব ও কুয়েত যৌথভাবে ডোরা অফশোর গ্যাসক্ষেত্রের উন্নয়নে কাজ করতে সম্মত হয়েছে। এজন্য এক চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছে দেশ দুটি বলে এক বিবৃতিতে উল্লেখ করা হয়েছে। খবর: আরব নিউজ।

সৌদি ও কুয়েতের জ্বালানি মন্ত্রীদের উপস্থিতিতে এ চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে। এই ক্ষেত্র থেকে দিনে ১০০ কোটি ঘনফুট প্রাকৃতিক গ্যাস ও ৮৪ হাজার ব্যারেল কনডেনসেট উৎপাদন করবে। উৎপাদিত গ্যাস দুই দেশ সমানভাবে ভাগ করে নেবে।

সৌদি আরবে এ গ্যাস পাবে আরামকো গালফ অপারেশন্স। কুয়েতের অংশ পাবে কুয়েত গালফ অয়েল।

সম্প্রতি কুয়েতে এই চুক্তিতে সই করেছেন কুয়েতের তেলমন্ত্রী মোহাম্মদ আল-ফারস ও সৌদি প্রিন্স আবদুলআজিজ বিন সালমান।

অত্যাধুনিক প্রযুক্তির সহায়তায় ডোরা গ্যাসক্ষেত্রটির উন্নয়নে প্রকৌশল গবেষণা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য শিগগির কনসালট্যান্ট নিয়োগ দেয়া হবে। কুয়েত গালফ অয়েল কো. ও আরামকো গালফ অপারেশন্স কো.-এর যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত আল খাফজি জয়েন্ট অপারেশন্স কোম্পানির (কেজিও) উন্নয়নে কাজ করবে। কনসালট্যান্ট নিয়োগেও কেজিওকে দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। খাফজি গ্যাসক্ষেত্রের কার্যক্রমও পরিচালনা করে এ প্রতিষ্ঠানটি। ডোরার উন্নয়ন হলে দুই দেশের অভ্যন্তরীণ প্রাকৃতিক গ্যাসের চাহিদা পূরণ হবে।

সব ঠিক থাকলে নিরপেক্ষ অঞ্চলে তৃতীয় গ্যাসক্ষেত্র হিসেবে যাত্রা করবে ডোরা। এর আগে নিরপেক্ষ অঞ্চলে অফশোর খাফজি ও অনশোর ওয়ারফা গ্যাসক্ষেত্র চালু করা হয়। এ দুই ক্ষেত্র থেকে যথাক্রমে দৈনিক ৩ লাখ ও ২ লাখ ৫০ হাজার ব্যারেল কনডেনসেট উৎপাদন করা হয়।

গ্যাস উৎপাদনের এ চুক্তি সংক্রান্ত কার্যক্রম শুরু হয় ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে। চার বছর বিরতির পর দুই দেশ নিরপেক্ষ অঞ্চলে অপরিশোধিত গ্যাস উৎপাদন পুনরায় শুরু করতে চাইলে এ চুক্তির বিষয়টি সামনে আসে।

এতকিছুর পরও কবে উৎপাদন শুরু করা যাবে সে বিষয়ে কিছু জানাতে পারেনি উভয় দেশ। এ বিষয়ে মন্তব্য করতেও রাজি হয়নি কোনো পক্ষ। তবে দেশ দুটিতে গ্যাসে চাহিদা বেড়েছে। এছাড়া ইউক্রেনে রাশিয়া যুদ্ধ শুরু করার পর থেকে গ্যাস নিয়ে মাতামাতি শুরু হয়েছে।

তাছাড়া গ্যাসক্ষেত্রটির অবস্থান দুই দেশের নিরপেক্ষ অঞ্চলে হলেও এখানের সামুদ্রিক সীমানায় ইরানও রয়েছে। দেশটি গ্যাসক্ষেত্রটির ৫ শতাংশ শেয়ার দাবি করেছে। তাই তেহরানের সঙ্গে সমন্বয়ে ব্যাঘাত ঘটলে পুরো বিষয়টি জটিল হতে পারে। তাদের দাবি করা অংশের নাম আরাশ। এখানে কোনো প্রকল্প শুরু করা হলে সম্পদের সমান অংশীদার হতে চাইবে দেশটি। বেশ কয়েকবার বিষয়টি বুঝিয়ে দিয়েছে তারা। এমনকি এখানের গ্যাসক্ষেত্রের উন্নয়নে কাজ শুরু করতে চেয়েছিল ইরান। এমন পরিস্থিতিতে ২০১২ সালে কুয়েত এর প্রতিবাদ করে। এরপর একই বছর তারা সৌদি আরবকে নিজেদের দলে টানে। তবে সেই থেকে আজও উৎপাদনে আসতে সমঝোতায় পৌঁছাতে পারেনি কোনো দেশ। মাঝে ২০১৫ সালে পরমাণু ইস্যুতে ইরানের ওপর নিষেধাজ্ঞা দেয়া হলে কুয়েত আবার গ্যাসক্ষেত্রটির উন্নয়নে নানা পদক্ষেপ নেয়। এ সময় তারা বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের চেষ্টা করে। তবে সেই উদ্যোগ ভেস্তে যায়। ২০১৮ সালে আবার যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প পারমাণবিক চুক্তি থেকে সরে এলে তেহরানের সঙ্গে আলোচনায় বসে কুয়েত। এতেও কার্যত কোনো ফল পাওয়া যায়নি।

তবে এবার সব পক্ষই একটি চুক্তির দ্বারপ্রান্তে। ইরানের ওপর থেকেও নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়া হতে পারে। এর সুফল পাবে ইরানসহ গালফ কো-অপারেশন কাউন্সিলের দেশগুলো। নিরপেক্ষ গ্যাসক্ষেত্রে ইরানের দাবিও মেনে নেয়ার সম্মত হতে পারে সৌদি ও কুয়েত।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০