সর্বোচ্চ সীমায় দরপতন ২০ কোম্পানির

মো. আসাদুজ্জামান নূর: সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে গতকাল ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) সূচকের মিশ্র প্রবণতায় লেনদেন সম্পন্ন হয়েছে। প্রধান সূচক নামমাত্র বাড়লেও টাকার অঙ্কে লেনদেনের পরিমাণ হ্রাস পেয়েছে। দিনটিতে বেশিরভাগ কোম্পানির শেয়ারের মূল্য হ্রাস পেয়েছে। এর মধ্যে সর্বোচ্চ সীমায় দরপতন হয়েছে ২০টি কোম্পানির।

বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া কয়েকটি কেন্দ্র থেকে নতুন করে বিদ্যুৎ ক্রয়ের অনুমোদন দেয়ার পর দিনভর টানাটানি শেষে সূচক বেড়ে লেনদেন শেষ হয়েছে পুঁজিবাজারে। যেসব কোম্পানির কারণে সূচকে সবচেয়ে বেশি পয়েন্ট যোগ হয়েছে, তার মধ্যে তিনটি ছিল এই ধরনের কোম্পানি।

গতকাল শুরু থেকে বাজারে সূচকের উত্থান-পতন দেখা যায়। দুপুর সোয়া ১২টা পর্যন্ত সূচক আগের দিনের প্রায় সমান অবস্থানে থাকলেও এরপর দুপুর ১টা পর্যন্ত টানা পতন হয়। কিন্তু শেষ দেড় ঘণ্টায় ক্রয়ের চাপে সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়ায় বাজার। লেনদেন শেষ হওয়ার আগ মুহূর্তে আগের দিনের চেয়ে ১০ পয়েন্ট বেশি ছিল সূচক। তবে শেষ সময়ের সমন্বয়ে ২ দশমিক ৪৭ পয়েন্ট যোগ হয়ে শেষ হয় লেনদেন।

আগের দিন সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি সিদ্ধান্ত নেয়, মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়া কেপিসিএলের দুটি, সামিটের একটি, ওরিয়ন ফার্মার সহযোগী প্রতিষ্ঠানের একটিসহ মোট পাঁচটি কেন্দ্র থেকে আরও দুই বছর বিদ্যুৎ কেনা হবে। পরের দিন পুঁজিবাজারে কেপিসিএল, সামিট পাওয়ার ও ওরিয়ন ফার্মা এই তিন কোম্পানি মিলে যোগ করেছে ৫ দশমিক ৪১ পয়েন্ট। সূচকে এই সামান্য পয়েন্ট যোগ হলেও সেটি বিনিয়োগকারীদের আত্মবিশ্বাস বাড়াতে ভূমিকা রাখতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন সংশ্লিষ্টরা।

এক দিনে শেয়ারের দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ থেকে আবার ১০ শতাংশ করা হচ্ছেÑএকটি জাতীয় দৈনিকে সুনির্দিষ্ট কারও বক্তব্য ছাড়া এমন একটি সংবাদ প্রকাশের পর গত রোব ও সোমবার পুঁজিবাজারে দেখা দেয় আতঙ্ক। এর মধ্যে রোববার ঢালাও দরপতনের পর সোমবারও একই পথে ছিল পুঁজিবাজার। এর মধ্যে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি থেকে নিশ্চিত করা হয় যে, এ ধরনের পরিকল্পনা আপাতত নেই। এতে মঙ্গলবার বাজার ঘুরে দাঁড়ালেও বুধবার আবার দরপতনে চিন্তার ভাঁজ তৈরি হয় বিনিয়োগকারীদের কপালে।

এদিকে সূচকে সামান্য পয়েন্ট যোগ হলেও লেনদেন আগের দিনের তুলনায় কিছুটা কম হয়েছে। সূচকের মতো লেনদেনের এ সিংহভাগই হয়েছে একেবারে শেষ বেলায়। দুপুর সোয়া ১টার দিকেও লেনদেন ৪০০ কোটি টাকার কম ছিল। দিন শেষে সেটি দাঁড়িয়েছে ৮২৯ কোটি ৫৯ লাখ টাকায়। আগের দিনে হাতবদল হয়েছিল ৮৬৩ কোটি ২০ লাখ টাকার শেয়ার ও ইউনিট।

লেনদেনে সবচেয়ে বেশি ১৪ দশমিক ৫ শতাংশ হয়েছে বিবিধ খাতে। এরপর লেনদেনের ১৩ দশমিক ৩ শতাংশ ছিল ওষুধ ও রসায়ন খাতের দখলে। তৃতীয় সর্বোচ্চ ৯ দশমিক ৯ শতাংশ টাকার হাতবদল হয়েছে ব্যাংক খাতে। এছাড়া বস্ত্র ৯ দশমিক ৮, ট্যানারি ৯ দশমিক ৫, প্রকৌশল ৭ দশমিক ৮ ও জীবন বিমা খাতে ৬ দশমিক ৭ শতাংশ লেনদেন হয়েছে। আর কোনো খাতের লেনদেন পাঁচ শতাংশ ছাড়ায়নি।

গতকাল লেনদেন হওয়া সিকিউরিটিজের মধ্যে বেড়েছেÑ১৪৩টির দর, কমেছে ১৭১টির। আর দর ধরে রাখতে পেরেছে ৬৫টি কোম্পানি। গতকাল সর্বোচ্চ ২ শতাংশ বা তার আশপাশে দর হারিয়েছেÑএমন কোম্পানির সংখ্যা ৩০টির বেশি। এর মধ্যে দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়ে লেনদেন হয়েছে ২০টির বেশি কোম্পানির। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি ১ দশমিক ৯৮ শতাংশ দর হারিয়েছে ভিএসএফ থ্রেড। প্রায় সমপরিমাণ দর হারিয়েছে বিডিওয়েল্ডিং, জুন স্পিনার্স, এটলাস বাংলাদেশ, আইপিডিসি, এনভয় টেক্সটাইল, দুলামিয়া কটন, সিএপিএম আইবিবিএল মিউচুয়াল ফান্ড ও এক্মি পেস্টিসাইডসের দর।

খাত হিসেবে সবচেয়ে বেশি চাঙা ছিল সিমেন্ট, কাগজ ও প্রকাশনা এবং বিমা। এসব খাতের বেশিরভাগ শেয়ারের দর বেড়েছে। বিদ্যুৎ, জ্বালানি, খাদ্য ও প্রকৌশল এবং ব্যাংক খাতে দেখা গেছে মিশ্র প্রবণতা। বাকি প্রায় সব খাতের বেশিরভাগ কোম্পানি দর হারিয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০