দূর পাহাড়ের নাফাখুম

রবিউল কমল: রাজধানীর সায়েদাবাদ থেকে রাতে বাসে উঠলে সকালে পৌঁছে যাওয়া যায় বান্দরবান সদরে। সেখানে নাশতা সেরে যেতে হবে থানচি। সদর থেকে থানচির দূরত্ব ৭৬ কিলোমিটার। উঁচু-নিচু পাহাড়ি রাস্তায় এ ৭৬ কিলোমিটার যেতে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা সময় লাগে। এ পথেই পড়বে নীলগিরি, নীলাচল ও চিম্বুক।

যাওয়ার উপায় দুটোÑমিনিবাস অথবা চাঁদের গাড়ি। বান্দরবান শহরে নামলেই চাঁদের গাড়ি পাওয়া যাবে। একটি গাড়িতে জায়গা হবে ১০ থেকে ১২ জনের। তাই দল বেঁধে গেলেই চাঁদের গাড়ি নেওয়া ভালো। এর ভাড়া পড়বে তিন হাজার থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা। তবে পিক আওয়ারে সেটা সাত হাজার থেকে ১২ হাজারেও ওঠে। এ ছাড়া লোকজন কম হলে মিনিবাসে ওঠা হবে বুদ্ধিমানের কাজ। বাসে জনপ্রতি ভাড়া পড়বে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা।

চাঁদের গাড়িতে গেলে পাহাড়ি রাস্তার সৌন্দর্য দারুণভাবে উপভোগ করা যায়। তবে অনেকের ‘মোশন সিকনেস’ দেখা দিতে পারে। উঁচুতে ওঠার সময় কান বন্ধ হয়ে আসতে পারে। এ জন্য চুইংগাম চিবুতে থাকুন।

সকালে বান্দরবান থেকে রওনা দিলে দুপুর নাগাদ থানচি বাজারে যাওয়া যায়। সেখানে দুপুরের খাবার সেরে নেওয়াটা ভালো। তাহলে শরীর দুর্বল হওয়া বা ক্লান্ত হওয়া থেকে কিছুটা আরাম পাওয়া যাবে।

থানচি নেমে রেমাক্রি যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে বিজিবি ক্যাম্পে নাম লেখাতে হবে। ঠিকানা ও ফোন নাম্বার উল্লেখ করতে হবে। থানচি বাজার থেকে ইঞ্জিনচালিত নৌকা রয়েছে। আগেভাগে নৌকা ভাড়া করে রাখা ভালো। তাহলে ঝামেলা অনেক কমে যাবে।

রেমাক্রি যাওয়ার পথে নৌকা থেকে বেশ কয়েকবার নামতে হবে। কারণ যেতে হবে স্রোতের বিপরীতে। আর পানি কম থাকলে ছয় জনের বেশি নৌকায় ওঠা যায় না। থানচি বাজার থেকে নৌকায় রেমাক্রি যেতে আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা লাগে।

রেমাক্রিতে থাকার জন্য টিলার ওপর কাঠের তৈরি কটেজ রয়েছে। এসব কটেজের বেশিরভাগের ঘুমানোর ব্যবস্থা মেঝেতে চাদর পেতে। খাটের ব্যবস্থা নেই। তবে শোওয়ার জন্য বালিশ, চাদর আর শীতের সময় লেপের ব্যবস্থা থাকে। রেমাক্রি বাজারে বেশ কিছু খাবারের দোকান আছে।

তবে পিক আওয়ারে খাবারের দাম বেশি রাখা হয়। অফ পিকে সেটা তুলনামূলকভাবে অনেক কম। তাই পিক আওয়ারে গেলে আগেভাগেই সব ব্যবস্থা করে যাওয়া উচিত। এমনকি আসার টিকিটও।

রেমাক্রিতে বিশ্রাম ও রাত্রি যাপনের পর খুব সকালে নাফাখুম যাত্রা করা উচিত। কারণ নাফাখুমের পুরো ট্রেইলটা হেঁটে যেতে হয়। এতে দুই থেকে আড়াই ঘণ্টা লেগে যায়। রেমাক্রি থেকে স্থানীয় গাইড পাবেন, তারা নাফখুম পর্যন্ত পথ দেখিয়ে নিয়ে যাবে। নিজের দলের সঙ্গে থাকুন, একা বেশি এগিয়ে বা পিছিয়ে যাবেন না।

যাওয়া-আসা

তিন দিনের ছুটি কাটাতে চাইলে নাফাখুম ঘুরে আসতে পারেন। চার রাত আর তিন দিনের মধ্যে দুই রাত বাসে ও দুই রাত থাকতে হবে রেমাক্রিতে। নাফাখুম যাওয়া-আসায় একদিন চলে যাবে।

কটেজ ভাড়া

জনপ্রতি ১২০ টাকা। তবে পিক আওয়ারে জনপ্রতি ২০০ থেকে ২৫০ টাকা।

গাইড

রেমাক্রি ও নাফাখুম যেতে একজন রেজিস্টার্ড গাইড সঙ্গে নিতে হবে। গাইডরাই থাকা-খাওয়া ও নৌকার ব্যবস্থা করে থাকেন।

প্রয়োজনীয় জিনিস

মশা থেকে দূরে থাকতে হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়াই উচিত। চুইংগাম, ক্যাপ, হ্যাট, সানগ্লাস, পাওয়ার ব্যাংক, ফার্স্ট এইড বক্স, পানি, খাবার, রাবারের স্যান্ডেল বা বার্মিজ স্যান্ডেল, শর্টস বা থ্রি কোয়ার্টার।

 

 

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০