বাংলাদেশের অন্যতম সুন্দর প্রতœতাত্ত্বিক নিদর্শন আতিয়া মসজিদ। চার গম্বুজবিশিষ্ট বর্গাকৃতির মসজিদ এটি। গম্বুজটি বেশ সুন্দর। এটি অষ্টভুজাকৃতির ড্রামের ওপর অবস্থিত। মসজিদের পূর্ব দিকে ছোট তিন গম্বুজবিশিষ্ট আয়তাকৃতির বারান্দা রয়েছে। টাঙ্গাইলের দেলদুয়ার উপজেলায় অবস্থান এ মসজিদের। উপজেলার আতিয়া গ্রামের লৌহজং নদীর পাশে রয়েছে মসজিদটি। টাঙ্গাইলের সবচেয়ে প্রাচীন মসজিদ এটি।
সুলতানি ও মোগল স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যের সমন্বয় রয়েছে আতিয়া মসজিদে। এ মসজিদের চার কোণে চারটি অষ্টভুজাকৃতির পার্শ্ব বুরুজ রয়েছে। মসজিদের পুব ও উত্তর দেয়ালের অলঙ্করণ চমৎকার। এতে টেরাকোটা ও ইট খোদাই করা হয়েছে। মোটিফ ব্যবহার করা হয়েছে এখানে।
১৬১০ থেকে ১৬১১ সালের মধ্যে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছে বলে ধারণা করা হয়। তবে ১৬০৯ সালে মসজিদটি নির্মাণ করা হয়েছিল বলে মনে করেন অনেকে। সম্রাট জাহাঙ্গীরের সময় বায়েজীদ খান পন্নীর পুত্র আতিয়া পরগনার জমিদার সাইদ খান পন্নী শাহ মসজিদটি নির্মাণ করেন বলে জানা যায়। প্রসঙ্গত, সাইদ খান পন্নীই করটিয়ার বিখ্যাত জমিদার পরিবারের প্রতিষ্ঠাতা। আতিয়া মসজিদের নির্মাণকাজে নিযুক্ত ছিলেন প্রখ্যাত স্থপতি মুহাম্মদ খাঁ।
এক সময় ১০ টাকার নোটে মুদ্রিত ছিল আতিয়া মসজিদ। মসজিদটি মূল নকশা ঠিক রেখে ১৮৩৭ সালে সংস্কার করা হয়। দেলদুয়ার জমিদার বাড়ির রওশন খাতুন চৌধুরানী তখন এর সংস্কার করেন। ১৯১৯ সালে আবারও সংস্কার করা হয়। তখন দেলদুয়ারের জমিদার আবু আহম্মেদ গজনবী ও করটিয়ার জমিদার ওয়াজেদ আলী খান পন্নী মসজিদটির সংস্কার করেন। মসজিদটিতে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ার পাশাপাশি মক্তবের ক্লাস করানো হয়। প্রতিবছর দেশ বিদেশের অনেক পর্যটক এর স্থাপত্যশৈলী দেখতে আসেন।
আতিয়া মসজিদে যাওয়ার জন্য প্রথমে টাঙ্গাইলে আসতে হবে। এখান থেকে সিএনজিতে চড়ে আতিয়া মসজিদে যাওয়া যায়।
Add Comment