‘দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে দুদকের ভূমিকা অব্যাহত রাখতে হবে’

নিজস্ব প্রতিবেদক: দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) চেয়ারম্যান মঈনউদ্দীন আবদুল্লাহ বলেছেন, ‘২০৪১ সালের মধ্যে উন্নয়নশীল দেশ থেকে উচ্চ আয়ের দেশে পরিণত হওয়ার পরিকল্পনা নিয়ে জাতি এগিয়ে যাচ্ছে। এ লক্ষ্য বাস্তবায়নে দুদকের সবাইকে নিজ নিজ ক্ষেত্রে কাজ করতে হবে। রাষ্ট্র আমাদের দুর্নীতি দমনে কাজ করার ম্যান্ডেট দিয়েছে। এটিই যেন আমরা স্বাধীনতার চেতনা নিয়ে করি; প্রজ্ঞা, সততা ও নিষ্ঠার সঙ্গে যেন আমাদের দায়িত্ব পালন করি; দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করতে দুদক যেন যথাযথ ভূমিকা রাখতে পারে সেই চেষ্টা অব্যাহত রাখতে হবে।’

শনিবার (২৬ মার্চ) মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এ আহ্বান জানান।

দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রধান কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন কমিশনের দুই কমিশনার, দুদক সচিব মো. মাহবুব হোসেন, সব অনুবিভাগের মহাপরিচালক, পরিচালক, উপপরিচালক ও সহকারী পরিচালকরা। এছাড়াও ভার্চুয়ালি সংযুক্ত ছিলেন দুদক বিভাগীয় ও সমন্বিত জেলা কার্যালয়ের কর্মকর্তারা।

সভার শুরুতেই পবিত্র কুরআন থেকে তেলাওয়াত করেন উপ-পরিচালক রফিকুল ইসলাম। এরপর মহান মুক্তিযুদ্ধে আত্মদানকারী সব শহীদের রুহের মাগফেরাত কামনা করে দোয়া করা হয়।

দুদক চেয়ারম্যান তার বক্তব্যে বলেন, ‘আমরা স্বাধীনতা এক দিনে অর্জন করিনি। নির্যাতিত বাঙালির মুক্তির দাবিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু আজীবন আন্দোলন-সংগ্রাম চালিয়ে গেছেন। বঙ্গবন্ধুর মহান ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে দীর্ঘদিনের ধারাবাহিক আন্দোলন, সংগ্রামের ফসল আমাদের এ মহান স্বাধীনতা।’

তিনি বলেন, ‘বঙ্গবন্ধুর ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণে বাঙালির আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেছিল। ১৯৬৬ সালের ছয় দফার মধ্যেই মূলত মহান স্বাধীনতার দাবি নিহিত ছিল। এ ছয় দফার মূল দাবিগুলো সত্তরের নির্বাচনী ইশতেহারেও ছিল, যার ম্যান্ডেট নির্বাচনের ফলে প্রতিফলিত হয়। তারই ধারাবাহিকতায় একাত্তরের মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে আন্দোলনের চূড়ান্ত রূপ নেয়। আমরা স্বাধীন জাতি হিসেবে আজ মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পেরেছি এবং উন্নয়নের অগ্রযাত্রায় শামিল হতে পেরেছি।’

তিনি বলেন, ‘আমরা স্বাধীন হয়েছি। এখন আমাদের দেশের মানুষের সব ধরনের সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্য থেকে মুক্তির সংগ্রামে শামিল হতে হবে। আমরা যারা সরাসরি মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করার সুযোগ পাইনি তাদের জন্য এটাই মুক্তিযুদ্ধ। তাদের এ অর্থনৈতিক অগ্রযাত্রায় বলিষ্ঠ ভূমিকা ও উল্লেখযোগ্য অবদান রাখতে হবে। তবেই আমাদের এ স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধুর ডাক সার্থক হবে।’

কমিশনার (অনুসন্ধান) ড. মো. মোজাম্মেল হক খান বলেন, ‘মহান স্বাধীনতার মূল আকাঙ্ক্ষা ছিল দুর্নীতি, শোষণ ও বৈষম্য থেকে মুক্তি লাভ। সেজন্য স্বাধীনতার চেতনা ধারণ করে সেভাবে জীবনযাপন করতে হবে; আচরণে তার প্রতিফলন ঘটাতে হবে; শুধু বিবৃতিতে সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না। আমাদের স্বাধীনতা অর্থবহ হোক, উন্নত সমৃদ্ধ দেশ হিসেবে বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠা লাভ করুক।’

কমিশনার (তদন্ত) জহুরুল হক বলেন, ‘বিশ্বের কোনো দেশ এত অল্প সময়ে বাংলাদেশের ন্যায় অর্থনৈতিক উন্নতি অর্জন করতে পারেনি। তবে দুর্নীতির সুচকে আমরা এখনো আশানুরূপ অগ্রগতি অর্জন করতে পারিনি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু দুর্নীতিকে কখনো প্রশ্রয় দেননি। তিনি আজীবন এর বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। বঙ্গবন্ধুর কথাগুলো আমাদের জানতে ও মানতে হবে। তা না হলে বঙ্গবন্ধুর আত্মা শান্তি পাবে না।’

এদিকে মহান স্বাধীনতা দিবসে দুদকে কর্মরতদের সংগঠন দুদক সার্ভিস অ্যাসোসিয়েশন (ডুসা) জাতীয় স্মৃতিসৌধে ফুল দিয়ে বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছে। এসময় ডুসার সভাপতি উপপরিচালক মশিউর রহমান ও সাধারণ সম্পাদক উপপরিচালক সৈয়দ নজরুল ইসলামসহ নেতারা উপস্থিত ছিলেন। মশিউর রহমান বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স এবং ভিশন ২০৪১ বাস্তবায়নের লক্ষ্যে আমরা একযোগে কাজ করবো।’  

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০