নিজস্ব প্রতিবেদক: তালিকাভুক্ত সোনালী আঁশ কর্তৃপক্ষ মুনাফা ও সম্পদ বেশি দেখিয়ে আসছে। পুনর্মূল্যায়নে বৃদ্ধি পাওয়া স্থায়ী সম্পদের ওপর অবচয় চার্জ না করে কোম্পানি এ মুনাফা ও সম্পদ বেশি দেখিয়ে আসছে বলে নিরীক্ষা আপত্তি দিয়েছে নিরীক্ষা প্রতিষ্ঠান। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইট সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
বাংলাদেশ অ্যাকাউন্টিং স্ট্যান্ডার্ড (বিএএস)-১৬ অনুযায়ী, স্থায়ী সম্পদের ওপরে অবচয় চার্জ করতে হয়। ফলে মুনাফা ও সম্পদ কমে আসে। কিন্তু সোনালী আঁশে ২০০৬-০৭ অর্থবছরে পুনর্মূল্যায়নে স্থায়ী সম্পদ বৃদ্ধি পেলে তার ওপর অবচয় চার্জ করা হচ্ছে না। যাতে ওই সময় থেকেই মুনাফা ও সম্পদ বেশি দেখানো হচ্ছে।
এদিকে কোম্পানি কর্তৃপক্ষ ২০০৬ সালের শ্রম আইন মানছে না বলে নিরীক্ষক আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন। কোম্পানিটিতে ২০০৫-০৬ অর্থবছর থেকে ২০১৪-১৫ অর্থবছর পর্যন্ত সময় ৪৭ লাখ ৩৩ হাজার টাকার ফান্ড গঠন করা হয়েছে। কিন্তু আইন অনুযায়ী দুই-তৃতীয়াংশ বিতরণ করা বাধ্যতামূলক হলেও তা করা হয়নি।
এদিকে কোম্পানিটিতে পাঁচ কোটি ৬০ লাখ টাকার অস্পর্শনীয় সম্পদ ও অনুপার্জিত মুনাফা বেড়েছে বলে ২০১৫-১৬ অর্থবছরের আর্থিক হিসাবের নোট-৫-এ উল্লেখ করা হয়েছে। এতে কোম্পানির পুঞ্জীভূত মুনাফা বেশি করে দেখানো হয়েছে বলে নিরীক্ষক আপত্তিকর মন্তব্য করেছেন।
উল্লেখ্য, কোম্পানিটি ১৯৮৫ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘এ’ ক্যাটাগরিতে অবস্থান করছে। ৩০ জুন ২০১৬ পর্যন্ত সমাপ্ত হিসাববছরের আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে বিনিয়োগকারীদের জন্য ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। ওই সময় কোম্পানির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে এক টাকা ৫৯ পয়সা, শেয়ারপ্রতি সম্পদমূল্য (এনএভি) ছিল ২২৪ টাকা ৫৪ পয়সা এবং কার্যকরী নগদ অর্থের প্রবাহের পরিমাণ (এনওসিএফপিএস) দাঁড়িয়েছে ৩৫ টাকা ৩৩ পয়সা। এটি আগের বছর একই সময়ে শেয়ারপ্রতি লোকসান ছিল ৬০ পয়সা, এনএভি ছিল ২২৩ টাকা ৯৫ পয়সা এবং এনওসিএফপিএস দাঁড়িয়েছে মাইনাস ২২ টাকা ৬৬ পয়সা।
চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) ইপিএস হয়েছে ২৯ পয়সা, যা এর আগের বছর একই সময়ে ১৯ পয়সা ছিল। অর্থাৎ ইপিএস বেড়েছে ১০ পয়সা।
অন্যদিকে চলতি বছরের ৩০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত কোম্পানির শেয়ারপ্রতি সম্পদ (এনএভি) ২২৪ টাকা ৮৩ পয়সা দাঁড়িয়েছে, যা একই বছর ৩০ জুন পর্যন্ত সময়ে ২২৪ টাকা ৫৪ পয়সা ছিল। তিন মাসে এনএভি ২৯ পয়সা বেড়েছে।
গতকাল কোম্পানিটির শেয়ারদর আগের দিনের চেয়ে এক দশমিক ১৪ শতাংশ বা দুই টাকা ১০ পয়সা কমে প্রতিটি শেয়ার সর্বশেষ ১৮১ টাকা ৭০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দর ছিল ১৮২ টাকা ৭০ পয়সা। দিনজুড়ে ১২ হাজার ৪০০ শেয়ার মোট ১৫০ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ২২ লাখ ৭২ হাজার টাকা। শেয়ারদর সর্বনি¤œ ১৮১ টাকা ৫০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ১৮৫ টাকা ৬০ পয়সায় হাতবদল হয়। গত এক বছরে শেয়ারদর ১১২ টাকা ৭০ পয়সা থেকে ২১৮ টাকা ৯০ পয়সার মধ্যে ওঠানামা করে। ১০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন দুই কোটি ৭১ লাখ ২০ হাজার টাকা। রিজার্ভের পরিমাণ ৫৮ কোটি দুই লাখ টাকা। ২০১৫ সালে কোম্পানিটি ১০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ ঘোষণা করেছিল। আলোচ্য সময়ে কর-পরবর্তী লোকসান করেছিল ১৬ লাখ ২০ হাজার টাকা, যা আগের বছর মুনাফা ছিল ১৬ লাখ ২০ হাজার টাকা। কোম্পানিটির তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ ২০১৬) ইপিএস ছিল ৪০ পয়সা। এটি আগের বছর একই সময় ছিল ২৬ পয়সা। অর্থাৎ ইপিএস বেড়েছে ১৪ পয়সা। ৩১ মার্চ ২০১৬ পর্যন্ত এনএভি ছিল ২২৪ টাকা ৮৪ পয়সা। যা আগের বছর একই সময় ছিল ২২৩ টাকা ৬৫ পয়সা। কোম্পানিটির ২৭ লাখ ১২ হাজার শেয়ার রয়েছে।
Add Comment