গতকালের পর
হাঁপানি: ইনসুলিন বা গ্লকোমিটার ব্যবহারের মতো হাঁপানির রোগীরাও ইনহেলার বা নেবুলাইজার ব্যবহার করলে রোজা ভাঙে না, বিশ্বের আলেমরাই এই মতামত দিয়েছেন। তাই যাদের ইনহেলার দরকার হয়, তারা এটি চালিয়ে যাবেন। শ্বাসকষ্ট বেশি বেড়ে গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। পরিপাকতন্ত্রের সমস্যা: ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হলে রোজা ভাঙতে হতে পারে। কারণ, প্রচুর পানি ও স্যালাইন খেয়ে তখন পানিশূন্যতা রোধ করতে হবে। সবচেয়ে ভালো হলো ডায়রিয়া যাতে না হয়, সে জন্য বাসি-পচা খাবার, রেস্তোরাঁর খাবার, ফুটপাতের খাবার এড়িয়ে চলা। বিশুদ্ধ পানি পান করা। শাকসবজি কম খাওয়া হয় বলে কারও কারও কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বেড়ে যায়। বরং ভাজাপোড়া খাবারই বেশি খাওয়া হয়। কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে তাজা ফলমূল, প্রচুর শাকসবজি ও আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণ করুন। ইসবগুল বা তোকমার শরবত খেতে পারেন। অতিরিক্ত তেল ও ভাজাপোড়া খাবার পরিহার করুন। প্রচুর পানি পান করবেন। রোজায় পেপটিক আলসারের সমস্যা বেড়ে যায়। খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তনের কারণেই এমনটা হয়ে থাকে। পেট ফাঁপা, গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বেড়ে যেতে দেখা যায়। এ ধরনের সমস্যা এড়াতে ইফতারে একসঙ্গে অনেক পরিমাণে খাবেন না। বারবার অল্প পরিমাণে খাবার খান। সাহ্রি খেয়েই শুয়ে পড়বেন না। সামান্য হাঁটাহাঁটি বা পায়চারি করুন। অতিরিক্ত তেল-মসলাযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন। সাহরিতে একেবারেই সহজপাচ্য খাবার বেছে নিন। দরকার হলে গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ সেবন করতে পারেন। যেকোনো অসুস্থতায়: রোজায় হঠাৎ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন। যেমন বমি, ডায়রিয়া, জ্বর, সংক্রমণ হতেই পারে। অসুস্থ হলে রোজা ভাঙতে হবে। ইসলাম এ বিষয়ে ছাড় দিয়েছে। এই ভাঙা রোজা পরে পূরণ করা যায়। সম্পূর্ণ সুস্থ না হয়ে ওঠা পর্যন্ত রোজায় বিরতি নিন। অনেকের ধারণা, রোজা রেখে রক্ত পরীক্ষা করা যাবে না। এটি ঠিক নয়। দিনের বেলাও যেকোনো রক্ত পরীক্ষা করা যাবে। অসুস্থ হলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন। রোজা রেখে দিনের বেলা অতিরিক্ত পরিশ্রম ও ব্যায়াম না করাই ভালো। এতে শরীর পানিশূন্য হবে। কেউ ব্যায়াম বা হাঁটাহাঁটি করতে চাইলে রাতে করতে পারেন। প্রচণ্ড রোদ ও গরম যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন। যথেষ্ট বিশ্রাম নিন। শৃঙ্খলা ও সদভ্যাস মেনে চলার মাধ্যমে রোজায় আপনি সুস্থ থাকতে পারেন। সুস্থ না থাকলে রোজায় সিয়াম পালন করা পুরোপুরি সম্ভব হবে না। তাই সংযম পালন করুন, মাহে রমজানে সুস্থ থাকুন।
অধ্যাপক ডা. এ বি এম আবদুল্লাহ
প্রধানমন্ত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক ও ইউজিসি অধ্যাপক