শেয়ার বিজ ডেস্ক: আফগানিস্তানে আফিমসহ যাবতীয় মাদক চাষ নিষিদ্ধ করেছে দেশটির বর্তমান সরকার। সম্প্রতি এক প্রজ্ঞাপন জারির মাধ্যমে এই আইনটির কথা জানায় কর্তৃপক্ষ। খবর: এনডিটিভি।
তালেবানের সর্বোচ্চ নেতা হেবাতুল্লাহ আখুন্দজাদা এক আদেশে জানান, আফগানিস্তানের সর্বোচ্চ নেতার ডিক্রি অনুযায়ী সব আফগানদের জানানো যাচ্ছে, এখন থেকে সারাদেশে পপি চাষ কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করা হচ্ছে। কেউ এই নিষেধাজ্ঞা অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে শরিয়াহ্ আইন অনুযায়ী বিচার হবে।
কাবুলে এক সংবাদ সম্মেলনে দেশটির ভারপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আলহাজ খলিফা সিরাজউদ্দিন হাক্কানি বলেন, সব ধরনের মাদকদ্রব্যের উৎপাদন, ব্যবহার বা পরিবহন নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
এর আগে ২০০০ সালেও তালেবান সরকার এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু পরে তা বাস্তবায়িত হয়নি।
বিশ্বে সবচেয়ে বেশি আফিম উৎপাদিত হয় আফগানিস্তানে। পপি গাছ তথা আফিম চাষ দীর্ঘদিন ধরে আফগান জনগোষ্ঠীর আয়ের একটি বড় উৎস।
জাতিসংঘের সবশেষ পরিসংখ্যান বলছে, ২০২০ সালে সারাবিশ্বে উৎপাদিত মোট আফিমের প্রায় ৮৫ শতাংশ আফগানিস্তানে উৎপাদিত হয়েছে। সংস্থার মতে, ২০১৭ সালে ১০৪ কোটি ডলার আয় আসে আফিম থেকে। সাম্প্রতিক মাসগুলোয় এর চাষ বেড়েছে বলে জানান কৃষক ও তালেবান নেতারা।
গত বছর ১৫ আগস্ট তালেবান আফগানিস্তানের মসনদে বসে। এরপর সেপ্টেম্বরের শুরুতে তারা অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রথম মন্ত্রিসভার ঘোষণা দেয়। অবশ্য সরকার গঠন করলেও বিশ্বের কোনো দেশ এখন পর্যন্ত তালেবান সরকারকে স্বীকৃতি দেয়নি। এর জেরে বিশ্বের বেশিরভাগ দেশ ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন দাতা সংস্থাও আফগানিস্তানে মানবিক সহায়তাসহ অর্থ সহায়তা বন্ধ করে দেয়। আফগানিস্তানে মাদক নিয়ন্ত্রণ করা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রধান দাবির মধ্যে একটি। এছাড়া শিক্ষা বিশেষ করে নারীশিক্ষাও অন্তর্ভুক্ত করেছে দাতাসংস্থাগুলো। কিন্তু তা পালনে ব্যর্থ হওয়ায় যুক্তরাষ্ট্র ও তাদের মিত্রদের সেনা প্রত্যাহার ও দাতাদের মুখ ফিরিয়ে নেয়ায় চরম আর্থিক সংকটে পড়ে দেশটি। এমন পরিস্থিতিতে আটকে আছে তালেবান সরকারের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি। দেশের অর্থনীতিকে চাঙা করতে তাই আন্তর্জাতিক স্বীকৃতির তৎপরতা চালাচ্ছে সরকার।