শ্রীলঙ্কার মতো অবস্থা বাংলাদেশে হবে না: পরিকল্পনামন্ত্রী

নিজস্ব প্রতিবেদক: অর্থনৈতিক সঙ্কটে ধুঁকতে থাকা শ্রীলঙ্কার সঙ্গে বাংলাদেশের তুলনা চলে না বলে মন্তব্য করেছেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান। কেউ কেউ শ্রীলঙ্কার জায়গায় বাংলাদেশকে বসিয়ে রায় দেন, এটা গ্রহণযোগ্য নয়। এ ধরনের মনোভাব মোটেও ঠিক নয়। দুই দেশের সমাজ ও অর্থনীতি ভিন্ন। তাদের মূল্যায়ন তারা করবেন। আমরা সতর্কতার সঙ্গে আমাদের অর্থনীতি পরিচালনা করি।

গতকাল জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) বৈঠকের পর সংবাদ সম্মেলনে সাংবাদিকদের প্রশ্নে একথা বলেন পরিকল্পনামন্ত্রী।

ক্রমাগত উন্নতিতে এক যুগ আগে যে শ্রীলঙ্কা উচ্চ মধ্যম আয়ের দেশে ওঠার পথে ছিল, সেই শ্রীলঙ্কা এখন দেনার দায়ে জর্জর হয়ে এখন দেউলিয়া হওয়ার পথে। জ্বালানি তেল কিনতে না পারায় দেশটিতে এখন বিদ্যুৎ মিলছে না, গাড়ি চালানো দুষ্কর হয়ে উঠছে, কাগজের অভাবে পরীক্ষা নেয়া যাচ্ছে না শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, দ্রব্যমূল্য আকাশচুম্বী। এই পরিস্থিতিতে জনবিক্ষোভে সরকারও পতনের দ্বারপ্রান্তে।

সঙ্কটে পড়া দক্ষিণ এশিয়ার দেশটি বাংলাদেশ থেকেও ঋণ চেয়েছে। কিন্তু সার্বিক পরিস্থিতি দেখে তাদের ঋণ না দেয়ার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

বড় ঋণে বড় প্রকল্প নেয়া শ্রীলঙ্কার হালের অভিজ্ঞতার আলোকে এক প্রশ্নে পরিকল্পনামন্ত্রী মান্নান বলেন, দেশের জন্য যেসব প্রকল্প হাতে নেয়া প্রয়োজন তা আমরা নিচ্ছি। আমরা কোনো অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প নিচ্ছি না।

একই সভায় ১২ হাজার ১৬ কোটি ৮৮ লাখ টাকা ব্যয়ে ১২টি প্রকল্পের অনুমোদন দিয়েছে একনেক। এর মধ্যে সরকারি অর্থায়ন ৭ হাজার ৯৯০ কোটি ১৪ লাখ টাকা, বৈদেশিক অর্থায়ন ৩ হাজার কোটি ৩৯ লাখ টাকা ও সংস্থার নিজস্ব অর্থায়ন ৫৯৪ কোটি ৪৩ লাখ টাকা।

সভা শেষে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান জানান, ১২টি প্রকল্পের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। দেশের গুরুত্ব বিবেচনায় প্রকল্পগুলো সভায় অনুমোদন দেয়া হয়।

সভায় অনুমোদন দেয়া প্রকল্পগুলো হলোÑস্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের ৩ হাজার ৩৯৭ কোটি ৮১ লাখ টাকা ব্যয়ে আরবান ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড সিটি গভর্ন্যান্স (ইউডিসিজি) প্রকল্প, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের ৬৯ কোটি ৫৬ লাখ টাকা ব্যয়ে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ শিল্পকলা একাডেমি ও আঞ্চলিক সাংস্কৃতিক কেন্দ্র, মিঠামইন, কিশোরগঞ্জ প্রকল্প; বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়ের ৪৪৩ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ব্যয়ে বাংলাদেশ ওশানোগ্রাফিক রিসার্চ ইনস্টিটিউট (দ্বিতীয় পর্যায়) প্রকল্প এবং সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ৩৮৫ কোটি ২১ লাখ টাকা ব্যয়ে সরকারি শিশু পরিবার এবং ছোটমনি নিবাস হোস্টেল নির্মাণ বা পুনর্নির্মাণ প্রকল্পের প্রথম সংশোধনী প্রকল্প।

এছাড়া রয়েছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৫৬২ কোটি ৬৯ লাখ টাকা ব্যয়ে ইরিগেশন ম্যানেজম্যান্ট ইমপ্রুভমেন্ট প্রকল্প; পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের এক হাজার ৯৬ কোটি ৬০ লাখ টাকা ব্যয়ে তজুমদ্দিন ও লালমোহন উপজেলায় উপকূলীয় বাঁধ পুনর্বাসন, নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন ও তীর সংরক্ষণ প্রকল্প (প্রথম পর্যায়); পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ২০৫ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ব্যয়ে নেত্রকোনার পূর্বধলা উপজেলার সেচ ও নিষ্কাশন ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্প এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের ৬৫৪ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে কিশোরগঞ্জের ১০টি উপজেলায় নদী তীর প্রতিরক্ষা কাজ, ওয়েভ প্রটেকশন এবং খাল পুনঃখনন প্রকল্প। স্থানীয় সরকার বিভাগের ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ঝিনাইদহ জেলা গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন প্রকল্প; বৃহত্তর পাবনা ও বগুড়া জেলার গ্রামীণ অবকাঠামো উন্নয়ন (দ্বিতীয় পর্যায়) ১৪০০ কোটি টাকা; বিদ্যুৎ বিভাগের দুই হাজার ২৭২ কোটি ৪৭ লাখ টাকা ব্যয়ে ঢাকায় ডেসকো এলাকায় বৈদ্যুতিক অবকাঠামো সম্প্রসারণ ও শক্তিশালীকরণ প্রকল্প এবং এক হাজার ৯০৫ কোটি ২৬ লাখ টাকা ব্যয়ে স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের মানিকগঞ্জ প্ল্যান্ট নির্মাণ প্রকল্পও অনুমোদন পেয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০