প্রতিনিধি, মুন্সীগঞ্জ: ধর্ম অবমাননার অভিযোগে করা মামলায় মুন্সীগঞ্জ সদর উপজেলার বিনোদপুর রাম কুমার উচ্চবিদ্যালয়ের বিজ্ঞান ও গণিতের শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মণ্ডল জামিন পেয়েছেন।
গতকাল বেলা সোয়া ১টার দিকে মুন্সীগঞ্জ জেলা অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের বিচারক মোতাহারাত আক্তার ভূঁইয়া এ আদেশ দেন।
জামিনের পক্ষে যুক্তিতর্ক তুলে ধরেন অভিযুক্ত শিক্ষক হৃদয় চন্দ্র মন্ডলের আইনজীবী শাহীন মোহাম্মদ আমানুল্লাহ। সরকার পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন অ্যাডভোকেট পল্টু।
এর আগে গত ২৩ ও ২৮ মার্চ আদালতে হৃদয় মণ্ডলের জামিন চাওয়া হয়েছিল। সে সময় আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন।
জানা যায়, গত ২০ মার্চ দশম শ্রেণির একটি অনির্ধারিত ক্লাসে গিয়ে ছাত্রদের সঙ্গে বিজ্ঞান নিয়ে আলোচনা করছিলেন হৃদয় মণ্ডল। সেখানে একজন ছাত্র বিজ্ঞানের সঙ্গে ধর্মের তুলনা করে কিছু প্রশ্ন করে। হৃদয় মণ্ডল সেগুলোর জবাব দেন। ক্লাসের এক ছাত্র ওই আলোচনা মোবাইলে রেকর্ড করে এবং তা ছড়িয়ে দেওয়া হয়। দুদিন পর কিছু ছাত্র ও স্থানীয় লোকজন মিলে হৃদয় মণ্ডলের বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। পরে পুলিশ গিয়ে তাকে থানায় নিয়ে যায়। স্কুল কর্তৃপক্ষ তাকে চাকরি থেকে সাময়িক বরখাস্ত করে।
ওই রাতেই স্কুলের অফিস সহকারী আসাদ বাদী হয়ে ধর্মীয় অনুভূতিতে আঘাতের অভিযোগে মামলা করলে সেই মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয় শিক্ষক হৃদয় মণ্ডলকে।
এ বিষয়ে হৃদয় মণ্ডলের আইনজীবী শাহিন মোহাম্মদ আমানুল্লাহ বলেন, আদালতের রায়ে আজ আমরা ন্যায্য বিচার পেয়েছি। আমার মক্কেল হৃদয় মণ্ডল কোথাও ধর্ম অবমাননা করেন নাই। তিনি ধর্মের বিরুদ্ধে কিছু বলেন নাই। এই আদেশের মাধ্যমে ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
রায় ঘোষণার পর প্রতিক্রিয়ায় হৃদয় মণ্ডলের স্ত্রী ববিতা হাওলাদার বলেন, আমার স্বামী জামিন পাওয়ায় আমি খুশি। আমি তাকে নিয়ে যেন নিরাপদে থাকতে পারি। আমার স্বামী যেন নিরাপত্তাহীনতায় না ভোগেন।
তবে রাষ্ট্রপক্ষের অতিরিক্ত দায়রা জজ আদালতের এপিপি সিরাজুল ইসলাম পল্টু হৃদয় মণ্ডলের জামিনের বিরোধিতা করেন।