রেলওয়ের রানিং স্টাফদের ধর্মঘট প্রত্যাহার, সচল হচ্ছে ট্রেন

নিজস্ব প্রতিবেদক: সারাদেশে ট্রেন ধর্মঘট প্রত্যাহার করে নিয়েছে রেলওয়ের রানিং স্টাফ কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের সঙ্গে সমঝোতা আলোচনা শেষে ঐক্য পরিষদ এই ধর্মঘট প্রত্যাহারের ঘোষণা দেয়।
বুধবার (১৩ এপ্রিল) দুপুরে কমলাপুর রেল স্টেশনে ঐক্য পরিষদের সদস্যদের সাথে আলোচনা শেষে রেলমন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজন সাংবাদিকদের বলেন, ‘যেসব দাবির কথা উঠেছে তা আমরা সবার সঙ্গে আলোচনা করে সমাধান করবো। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমরা দেখা করবো। প্রধানমন্ত্রী ১৯ এপ্রিল আমাকে সময় দিয়েছেন। আমি এবং আমার সচিব প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করবো। আশা করছি সব সমস্যার ফয়লাসা আমরা সেদিন করতে পারবো। রানিং স্টাফরা পূর্বের মতো সব সুযোগ সুবিধা পাবেন। তাদের সব দাবি পুরণ হবে বলে আমি আশা করছি।’
রেলমন্ত্রী আরও বলেন, ‘আমরা রেলের রানিং স্টাফদের দাবির সঙ্গে একমত। তাদের দাবি আদায়ে আমরা অর্থ মন্ত্রণালয়কে চিঠি দিয়েছি। কিন্তু গত ১০ এপ্রিল বেসমারিক কর্মচারীদের পেনশন ও আনুতোষিক হিসাবের ক্ষেত্রে মূল বেতনের সঙ্গে কোনো ভাতা যোগ করার সুযোগ নেই বিধায় রেলওয়ের রানিং স্টাফদের মূল বেতনের সঙ্গে ‘রানিং ভাতা’ পেনশন ও আনুতোষিক সুবিধা প্রদানের প্রস্তাবে নির্দেশক্রমে পুনরায় অর্থ বিভাগের অসম্মতি জানিয়েছে।’
তিনি আরও বলেন, ‘অর্থ মন্ত্রণালয়ের এমন ঘোষণায় রানিং স্টাফরা কর্মবিরতিতে গেছেন। এতে রেলে অচলাবস্থা তৈরি হয়েছে। বিষয়টি নিয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে কথা হয়েছে। তারা এই অফিসিয়াল আদেশ প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন। ফলে বিষয়টি নিয়ে ফের অর্থ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে আলোচনার সুযোগ রয়েছে।’
এদিকে সমাঝোতা আলোচনার পর রেলওয়ের রানিং স্টাফ কর্মচারী ঐক্য পরিষদের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সাইদুর রহমান বলেন, ‘রেলমন্ত্রীসহ প্রশাসনের সবার সঙ্গে আমাদের কথা হয়েছে। উনারা আমাদের দাবি দাওয়াগুলো গুরুত্বের সঙ্গে শুনেছে। সমাধানের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। সেই আলোচনার প্রেক্ষিতে আমি এখন সবাইকে কাজে যোগদানের জন্য আহ্বান জানাচ্ছি।’
এর আগে গতকাল রাত ৩টা ২০ মিনিট থেকে পূর্ব-নির্ধারিত মাইল-এজ বা ভাতা বাতিল করে অর্থ মন্ত্রণালয়ের প্রজ্ঞাপন বাতিলের দাবিতে সারা দেশে ট্রেন চলাচলে সহযোগীতা বন্ধ করে দেয় রেলওয়ে রানিং স্টাফ কর্মচারী ঐক্য পরিষদ। ফলে বুধবার সকাল ৬টা থেকে সারাদেশের কোথাও ট্রেন চলেনি।
এতে বুধবার ভোর ৬টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ১৮টি ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে।
কমলাপুর স্টেশন ম্যানেজার মো. মাসুদ সারওয়ার বলেন, কমলাপুর রেলস্টেশন থেকে দিনে ৭২টি ট্রেন দেশের বিভিন্ন গন্তব্যে যাত্রী নিয়ে ছেড়ে যায়। কিন্তু আজ ধর্মঘট থাকায় ভোর ৬টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত ১৮টি ট্রেনের শিডিউল বিপর্যয় ঘটেছে। এসব ট্রেনের টিকিটের টাকা যাত্রীদের ফেরত দেওয়া হচ্ছে। একইভাবে দেশের অন্যান্য স্টেশন থেকে টিকিটের টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে।
তবে কী পরিমাণ যাত্রী টিকিটের টাকা ফেরত নিয়েছেন তার সঠিক তথ্য দিতে পারেননি তিনি।
রেল কর্মচারীদের আন্দোলনের কারণে সকাল থেকে কমলাপুর স্টেশনে দাঁড়িয়ে আছে কয়েকটি ট্রেন। বিষয়টি জানতে না পেরে যারা কমলাপুরে এসেছেন তারা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন। অফিসগামী যাত্রীরাও পড়েছেন সমস্যায়। হঠাৎ ট্রেন বন্ধের সিদ্ধান্তের কারণে যাত্রীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
ট্রেন চালকদের দাবি, নির্দিষ্ট আট ঘণ্টার বেশি কাজ করলে যে অতিরিক্ত ভাতা (মাইলেজ) দেওয়া হয়, সেটা যেন সুনির্দিষ্টভাবে সরকারের পক্ষ থেকে একটি নীতিমালা করে সেটা পরিশোধের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কিন্তু সম্প্রতি অর্থ মন্ত্রণালয় এক প্রজ্ঞাপন জারি করে রেলের রানিং স্টাফদের মাইলেজ সুবিধা বাতিল করে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০