দেশে ঐতিহ্যগতভাবে ইফতারে তেলে ভাজা ইফতারি বিশেষ করে ছোলা, পেঁয়াজু, বেগুনি, হালিম, চপ, কাটলেট ইত্যাদি খাওয়া হয়। অনেকে এসব ছাড়া ইফতারে তৃপ্তি পান না। প্রশ্ন হলোÑএসব খাবার কি স্বাস্থ্যসম্মত? অবশ্যই নয়।
এক গ্রাম তেল থেকে ৯ কিলোক্যালরি শক্তি পাওয়া যায়। ইফতারে খাওয়া হয় ভাজাপোড়ায় উচ্চ ক্যালরিযুক্ত খাবার, যে কারণে পুরো মাস রোজা পালনের পরও কেউ কেউ বলে থাকেন, এক কেজি ওজনও কমল না। আবার উল্টো ঘটনাও ঘটে। রোজার পরে দেখা যায়, রোজাদারের অনেকের ওজন বেড়েছে। বেড়ে গেছে রক্তের কোলেস্টেরলও। তেলে ভাজা-ভুনা খাবার ওজন বৃদ্ধি করে, রক্তে কোলেস্টেরল বাড়ায় এবং ডায়াবেটিস, হার্টের রোগ ও উচ্চ রক্তচাপ বাড়ায়।
যাদের কিডনির সমস্যা আছে, তারা যদি ইফতারে ডালের তৈরি ভাজা যেমন ছোলা, পেঁয়াজু খান তবে জটিলতা বাড়তে পারে। ভাজাজাতীয় খাবার বেশি খেলে শরীরে এক্রিলেমাইড নামক একধরনের টক্সিক উপাদানের মাত্রা বাড়তে শুরু করে, যা ক্যানসার রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বাড়ায়। তাই সুন্দর ও সুস্থ থাকতে হলে তেলে ভাজা খাবার বাদ দিতে হবে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কথা হলো পোড়া তেল ব্যবহার করা যাবে না। আগের দিনে ব্যবহƒত তেল আবার পরদিন ব্যবহার করা উচিত নয়। এমন তেলে কার্বনের পরিমাণ বেশি থাকে, যা শরীরের ক্ষতি করে।
এই রোজায় স্বাস্থ্যসম্মত ইফতার করুন। ইফতারে পানীয় হিসেবে থাকতে পারে ফলের জুস, ডাবের পানি, ইসবগুলের ভুসির শরবত, মিল্কশেক, লাচ্ছি, লেবুর শরবত বা বেলের শরবত। ফল হিসেবে থাকতে পারে দুই বা তিনটি খেজুর। এ ছাড়া ফলের সালাদ থাকতে পারে। এ ছাড়া চিড়া, কলা, স্যুপ, খিচুড়ি, দুধ, ওটস ও দুধ এবং কর্নফ্লেক্স খাওয়া যেতে পারে। দুধের তৈরি খাবার, চিড়ার পোলাও, মোমো এবং বাষ্পে সেদ্ধ যেকোনো খাবার খাওয়া যেতে পারে ইফতারে।
ইফতারের পর রাতে এক কাপ ভাত, মাছ অথবা সবজি ও ডাল খাওয়া যেতে পারে। আর সাহ্?রিতে তিন বা চার কাপ ভাত, মাছ বা মাংস, সবজি ও দুধ বা দই খাওয়া যেতে পারে।
হাসিনা আকতার লিপি
ক্লিনিক্যাল পুষ্টিবিদ ও কনসালট্যান্ট
ল্যাবএইড ও পার্ক ভিউ হাসপাতাল অ্যান্ড ডায়াগনস্টিক লিমিটেড, চট্টগ্রাম
