দক্ষিণ কোরিয়ার রফতানি বেড়েছে ১৩.৭ শতাংশ

 

শেয়ার বিজ ডেস্ক: চলতি বছরের জুনে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় দক্ষিণ কোরিয়া থেকে রফতানি বেড়েছে ১৩ দশমিক সাত শতাংশ। গত মাসে দেশটি থেকে মোট রফতানি হয়েছে ৫১ দশমিক চার বিলিয়ন ডলার। দেশটির বাণিজ্য, শিল্প ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। খবর সিনহুয়া।

দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনীতির প্রায় অর্ধেকটাই রফতানিনির্ভর। গত আট মাস ধরে দেশটির রফতানিতে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা দেখা গেছে।

চলতি বছরের শুরু থেকে প্রথম ছয় মাসই বিদেশে পণ্য চালানে দুই অংকের প্রবৃদ্ধি ছিল।

এদিকে গত মাসে দক্ষিণ কোরিয়ায় আমদানিও আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় বেড়েছে ১৮ শতাংশ। ওই সময় দেশটি মোট ৪০ বিলিয়ন ডলারের পণ্য আমদানি করেছে।

সব মিলিয়ে গত মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্য উদ্বৃত্ত দাঁড়িয়েছে ১১ দশমিক চার বিলিয়ন ডলারে।

জানুয়ারি থেকে জুন সময়ে দক্ষিণ কোরিয়া থেকে মোট রফতানি হয়েছে ২৭৯ দশমিক চার বিলিয়ন ডলার। আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এটি ১৫ দশমিক আট শতাংশ বেশি। ২০১৪ সালে প্রথমার্ধের পর এটিই সবচেয়ে বেশি রফতানি। ওই বছরের একই সময় দেশটি থেকে রফতানি হয়েছিল ২৮৯ দশমিক পাঁচ বিলিয়ন ডলারের পণ্য।

দক্ষিণ কোরিয়ার পণ্যদ্রব্য রফতানির পরিমাণ তিন মাস নি¤œমুখী থাকার পর গত বছরের নভেম্বরে আবার তা ঘুরে দাঁড়ায়। এরপর থেকে রফতানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এতে শিল্প পুনরুদ্ধারে ইতিবাচক ভূমিকা রাখবে বলে মনে করছেন বিশ্লেষকরা।

আন্তর্জাতিক বাজারে বাণিজ্য পতন সত্ত্বেও দক্ষিণ কোরিয়ার রফতানির ইতিবাচক চিত্র নিষ্প্রভ রফতানি শিল্পকে ঘুরে দাঁড়াতে সাহায্য করছে।

শিল্প, বাণিজ্য ও জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের তথ্যমতে, ২০১৬ সালে দেশটির মোট রফতানি হয়েছে ৪৯৫ দশমিক পাঁচ বিলিয়ন ডলার মূল্যের। আগের বছরের তুলনায় এটি পাঁচ দশমিক ৯ শতাংশ কম। এর আগে ২০১৫ সালেও রফতানি আগের বছরের তুলনায় আট শতাংশ কমেছিল। তবে ২০১৪ সালে এটি দুই দশমিক চার শতাংশ বৃদ্ধিতে ছিল।

দক্ষিণ কোরিয়ায় ১৯৫৬ সালের পর টানা দুবছর রফতানি কমার ঘটনা এটি দ্বিতীয়। ১৯৫৭ ও ১৯৫৮ সালে রফতানি কমেছিল ৯ দশমিক সাত ও ২৫ দশমিক ৯ শতাংশ।

আন্তর্জাতিক অর্থনীতিতে শ্লথগতির কারণে গত দুবছর দক্ষিণ কোরিয়ার অর্থনীতির অন্যতম চালিকাশক্তি রফতানি কমেছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।

তবে চলতি ২০১৭ সালের শুরুতেই দক্ষিণ কোরিয়ার রফতানি দুই দশমিক ৯ শতাংশ বাড়বে বলে পূর্বাভাস দিয়েছিলেন বিশ্লেষকরা। আন্তর্জাতিক বাজারে ডিসপ্লে প্যানেল, কম্পিউটার ও তেল পণ্যের মতো প্রধান রফতানি পণ্যের চাহিদা বাড়ায় রফতানি ঘুরে দাঁড়াতে সহায়তা করেছে।

বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটির অর্থনীতির জন্য সামগ্রিকভাবে গত বছর ভালো যায়নি। একের পর এক কোরীয় কনগ্লোমারেট নানা কারণে বিপর্যয়ের মুখে পড়েছে। বহুল আলোচিত নোট৭ স্মার্টফোন বিস্ফোরণের কারণে স্যামসাং ইলেকট্রনিকসকে বিপুল পরিমাণ পণ্য বাজার থেকে প্রত্যাহার করতে হয়েছে। আর্থিক ক্ষতি ছাড়াও স্যামসাংকে ইমেজ সংকটের মোকাবিলা করতে হয়েছে। দেশটির সাবেক প্রেসিডেন্টের সঙ্গে দুর্নীতিতে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার হয়েছেন স্যামসাংয়ের কর্ণধার।

দক্ষিণ কোরিয়ার বৃহত্তম ও বিশ্বের সপ্তম বৃহত্তম নৌপরিবহন কোম্পানি হানজিন শিপিং লাইনস দেউলিয়া হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার বৃহত্তম রিটেইলার লোটে গ্রুপের কর্ণধারকে বিনিয়োগকারীদের বিশ্বাস ভঙ্গের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হয়েছে। জাহাজ নির্মাণ সংস্থা স্যামসাং, হুন্দাই, এসটিএক্স; গাড়ি নির্মাতা হুন্দাই ও ইস্পাত কোম্পানি পসকো পুনর্গঠন প্রক্রিয়ার মধ্যে ছিল। করপোরেট কোরিয়ার এ দুর্দশার মধ্যে বাড়তি শঙ্কার কারণ হয়ে এসেছিল কোরীয় পরিবারগুলোর রেকর্ড পরিমাণ ঋণ।

 

Add Comment

Click here to post a comment

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০