‘নদীরক্ষা আইন আছে, প্রয়োগ নেই’

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাষ্ট্রীয়ভাবে যে নদী দূষণ করা হয়, সেটা আগে বন্ধ করা দরকার। এছাড়া আজ পর্যন্ত নদীদূষণকারী ও দখলদারদের কোনো বিচারের নজির নেই। নদীরক্ষা আইন আছে, প্রয়োগ নেই। তাহলে নদী রক্ষা হবে কীভাবে।
গতকাল ‘বিশ্ব ধরিত্রী দিবস, ২০২২’ উপলক্ষে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি মিলনায়তনে বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা), জাতীয় নদী রক্ষা আন্দোলন ও জাতীয় নদী জোট আয়োজিত ‘বাংলাদেশ নদ-নদী’ শীর্ষক বিশেষ আলোচনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। সভায় মূল বক্তব্য তুলে ধরেন জাতীয় নদী রক্ষা কমিশনের সাবেক চেয়ারম্যান ড. মুজিবুর রহমান হাওলাদার।
সভায় বাপার সাধারণ সম্পাদক শরিফ জামিল বলেন, আদালতের রায়ে বলা আছে, নদীর সীমানা আগে নির্ধারণ করতে হবে, দখলদারদের চিহ্নিত করতে হবে। অথচ আদালতের নির্দেশনা অমান্য করে নদীসীমার ভেতরে ওয়াক ওয়ে পিলার নির্মাণ করা হচ্ছে। এভাবেই ঢাকার নদী ধ্বংস করা হচ্ছে। অবৈধ উচ্ছেদ না করে বরং বৈধতা দেয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, নদী বাঁচাতে হলে আমাদের অভিন্ন নদীর যে ন্যায্য দাবি আছে, সেটা আদায় করতে হবে। আন্তর্জাতিকভাবে আদায় যেভাবে করে, আমাদেরও আদায় করতে হবে।
নদী দখলদারদের শাস্তি নিশ্চিত হয় না বলে অভিযোগ করে বাপার সাধারণ সম্পাদক বলেন, নদীদূষণ ও দখলদারদের যদি দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া না হয়, তাহলে নদী রক্ষা করবেন কীভাবে? আমরা আজ পর্যন্ত কোনো দখলকার, দূষণকারী ও কোনো দায়িত্বশীল কর্মকর্তাকে দায়িত্ব পালন না করার জন্য শাস্তি দেয়া হয়েছে, এমন দেখিনি। আজ যদি একজন সাধারণ মানুষ নদীতে এক টুকরি মাটি ফেলে, দেখবেন কালই এসি (ল্যান্ড) এসে জরিমানা করবেন। কিন্তু বড় বড় ভবন তৈরি হচ্ছে, তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে তাদের দেখা যায় না।
জাতীয় নদী জোটের আহŸায়ক শারমিন মোরশেদ বলেন, আমার এত বছরের আন্দোলনে আমি বলতে পারি, নদীদূষণ বেশি হয়েছে রাষ্ট্রীয়ভাবে এবং বড় বড় প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে। আমি রাষ্ট্রকে দায়ী করব এজন্য যে, আইনের যথাযথ প্রয়োগ তারা করতে পারেনি। একটা কাজ করলে নদী বাঁচতে পারে, তা হলো নদী রক্ষার আইন বাস্তবায়ন করা।
সভায় বক্তারা বলেন, নদীদূষণ যেমন বন্ধ করা দরকার, তেমনই সাধারণ মানুষকেও সচেতন হতে হবে। সবাইকে নদী রক্ষার আওয়াজ তুলতে হবে। আমাদের আগে নির্ণয় করতে হবে, নদী কোথা থেকে কীভাবে দূষিত হচ্ছে। সাধারণ মানুষকে যদি জিজ্ঞেস করি, আপনারা যে বর্জ্য ফেলছেন, তা কোথায় যাচ্ছে? বেশিরভাগ মানুষই বলতে পারবে না। কারণ আমাদের মানুষ এতটাই অসচেতন এ বিষয়টি নিয়ে। বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক খন্দকার বজলুল হকের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন জাতীয় নদী রক্ষা আন্দোলনের সমন্বয়ক ডা. মো. আব্দুল মতিন, জাতীয় নদী জোটের আহŸায়ক শারমীন মুরশিদ প্রমুখ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০