খাবার নিয়ে মানুষের মধ্যে কিছু ভুল ধারণা চালু আছে। যার মধ্যে কিছু আছে ভুল ও অযৌক্তিক, কোনো কোনোটি আবার যৌক্তিক ও বিজ্ঞানসম্মত। শুধু গ্রামে নয়, শহুরে অনেক শিক্ষিত মানুষও এসব মেনে চলেন।
কলা খেলে ঠাণ্ডা লাগে: ঠাণ্ডা, কাশি ও জ্বরের সময় কলা খেতে দেয়া হয় না। কলায় উচ্চমাত্রার হিস্টামিন থাকে, যা মিউকাস ও শ্লেষ্মার পরিমাণ বাড়ায়। তাই শ্বাসতন্ত্রের কোনো রোগ ১৪ দিনের বেশি থাকলে সপ্তাহে দুই থেকে তিন দিন কলা খাওয়া যেতে পারে। তবে শিশু ও বয়স্কদের ঠাণ্ডা-কফ বা শ্বাসতন্ত্রের রোগে কলা সাময়িকভাবে না দেয়াই ভালো। কিন্তু জেনে রাখুন, কলায় এমন কোনো উপাদান নেই, যা ঠাণ্ডা-সর্দি-কাশি তৈরি করবে।
তেঁতুল খেলে প্রেশার কমে: তেঁতুল পটাশিয়ামের খুব ভালো উৎস, যা সরাসরি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে জড়িত। তবে অনেকে প্রেশার কমাতে প্রচুর লবণ দিয়ে তেঁতুলপানি গুলে খান, যা প্রেশার আরও বাড়ায়। তা ছাড়া রক্তচাপ বাড়লে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে ওষুধ খাওয়াই বাঞ্ছনীয়, তেঁতুলের ওপর ভরসা করলে চলবে না। তবে প্রতিদিন রান্নায় তেঁতুলের ব্যবহার করলে বা শাক-রসুন দিয়ে করা তেঁতুলের টক রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণসহ রক্তের বাড়তি চর্বি কমাতেও সাহায্য করে।
গর্ভাবস্থায় আনারস খাওয়া যাবে না: আনারসে ব্রোমেলিন এনজাইম থাকে। অতিরিক্ত ব্রোমেলিন জরায়ুর সংকোচন-প্রসারণ বাড়ায় ও সারভিক্সকে নরম করে, এ কারণে অসময়ে সংকোচন তৈরি হতে পারে। তবে একটা আনারসে যে পরিমাণ ব্রোমেলিন থাকে, তা মোটেই গর্ভবতী নারীর জন্য ঝুঁঁকিপূর্ণ নয়। কিন্তু দিনে যদি ৮ থেকে ১০টি আনারস একসঙ্গে খাওয়া হয়, সে ক্ষেত্রে এ ধরনের ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। একজন গর্ভবতী নারী নির্ধারিত সার্ভিং অনুযায়ী দৈনিক আনারস খেতে পারবেন। [বাকি অংশ আগামীকাল]
ফাহমিদা হাশেম
জ্যেষ্ঠ পুষ্টিবিদ
ল্যাবএইড কার্ডিয়াক হাসপাতাল