নিজস্ব প্রতিবেদক: বিদেশফেরত বাংলাদেশিদের পুনরেকত্রীকরণে একযোগে কাজ করতে অঙ্গীকারবদ্ধ হয়েছে দেশের সরকারি ও বেসরকারি খাতের সংগঠনগুলো। গতকাল রাজধানীর একটি হোটেলে ‘পাবলিক প্রাইভেট সেক্টর পার্টনারশিপ ফর রি-ইন্টিগ্রেশন ইন বাংলাদেশ (পিপিপি)’ শীর্ষক প্রথম পর্বের সমাপনী অনুষ্ঠানে এ সংক্রান্ত একটি প্রতিশ্রুতিপত্র সই হয়। প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় এবং ইন্টারন্যাশনাল সেন্টার ফর মাইগ্রেশন পলিসি ডেভেলপমেন্ট (আইসিএমপিডি) এ আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থানমন্ত্রী ইমরান আহমদ বলেন, ‘দায়িত্ব নেয়ার পর আমার প্রথম কাজ ছিল সব অংশীজনদের একসঙ্গে নিয়ে আসা। হয়তো সে কারণেই আজ আমরা এই পর্যায়ে এসেছি। আমরা যদি যারা যার ক্ষেত্রে আলাদা আলাদা কাজ করি তাহলে একসঙ্গে মিলিত হওয়া কখনই সম্ভব হবে না। এজন্য এই পাবলিক প্রাইভেট অংশীদারিত্ব সিস্টেম শুরু হলো এবং আমি আশা করি, এটি সফল হবে। একসঙ্গে কাজ করলে আমরা অভিবাসী কর্মীদের জন্য কিছু একটা করতে পারব।’
জুনের মধ্যে ১০ লাখ কর্মী বিদেশ যাবে আশা প্রকাশ করে মন্ত্রী বলেন, ‘গত বছর অভিবাসী কর্মীরা ২৪ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এ অর্থবছর আমরা একটু পিছিয়ে আছি। হয়তো ২১-২২ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স আসবে। এটা করোনার কারণেই হয়তো। এটাও সত্যি, করোনার মধ্যে অনেক কর্মী ফিরে আসতে বাধ্য হয়েছেন। কিন্তু সব কিছুরই একটি ইতিবাচক দিক আছে। এ অর্থবছরে জুনের মধ্যে ১০ লাখেরও বেশি কর্মী বিদেশ যাবে। ইতোমধ্যে আমরা সাড়ে ৮ লাখ কর্মী পাঠিয়েছি। তারা রেমিট্যান্স পাঠাবে, তবে একটু সময় দিতে হবে। অভিবাসী কর্মীদের দেশের প্রতি একটা প্রতিশ্রæতি আছে। তাদের পাঠানো রেমিট্যান্স কিংবা বৈদেশিক মুদ্রার জোগান যদি ভালো না হতো দেশের মেগা প্রকল্পগুলো দাঁড়াতে পারত না।’
এ সময় তিনি বিদেশ থেকে আগত অভিবাসীদের কল্যাণে ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থায়নে বাংলাদেশে প্রথম সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এক যৌথ ‘প্ল্যাটফর্ম’ তৈরির উদ্যোগ নেয়ার জন্য সহযোগী সংস্থা ইউরোপিয়ান রিটার্ন অ্যান্ড রি-ইন্টিগ্রেশন নেটওয়ার্ক (ইআরআরআইএন) ও বাস্তবায়নকারী সংস্থা আইসিএমপিডি এবং দাতা সংস্থা ইউরোপীয় ইউনিয়নকে ধন্যবাদ জানান।
অনুষ্ঠানে আইসিএমপিডি’র সিল্ক রুট রিজিওনের প্রধান সেডেফ ডিয়ারিং বলেন, ‘বাংলাদেশি অভিবাসী কর্মীরা ফেরত আসছে। করোনার কারণে এমনটি হয়েছে। এখন ফিরে আসার হার কমেছে তবে অনেকে কঠিন পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন। তাদের প্রথম প্রত্যাশাই হচ্ছে অর্থনৈতিক পুনরেকত্রীকরণ। এটি একমাত্র তখনই সম্ভব যখন তাদের কাজের সুযোগ করে দেয়া যাবে অথবা তাদের ক্ষুদ্র ঋণের আওতায় আনা যাবে। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের এই অংশীদারিত্ব অভিবাসী কর্মীদের সেই সুযোগ করে দিতে ভ‚মিকা রাখবে।’
অনুষ্ঠানে বিভিন্ন সরকারি, বেসরকারি, দেশীয় ও আন্তর্জাতিক সহযোগী সংস্থার প্রতিনিধিরা বিদেশফেরত বাংলাদেশিদের সফল পুনরেকত্রীকরণে নিজ নিজ অবস্থান থেকে একযোগে কাজ করে যাওয়ার অভিমত ব্যক্ত করেন।
অন্যান্য অতিথিদের মধ্যে জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো’র মহাপরিচালক মো. শহীদুল আলম, ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডের মহাপরিচালক মো. হামিদুর রহমান, ইআরআরআইএন’র প্রজেক্ট ম্যানেজার মারিয়ান উলব্রিচট এবং আইসিএমপিডি’র বাংলাদেশের কান্ট্রি কো-অর্ডিনেটর ক্যাপ্টেন (অব.) ইকরাম হোসেন উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ্য, ৪২টিরও বেশি সংগঠন প্রতিশ্রুতিপত্রে সই করেছে।