নিজস্ব প্রতিবেদক: ছাত্রদল ও ছাত্রলীগের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনার জের ধরে সুপ্রিম কোর্টে প্রবেশের বিভিন্ন পথসহ সর্বোচ্চ এই আদালত প্রাঙ্গণে আজ থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা কড়াকড়ি করা হচ্ছে। সুপ্রিম কোর্টে প্রবেশের মূল ফটক এদিন সকাল সাড়ে ১০টার পর থেকে বন্ধ থাকবে। তবে মাজার গেট সার্বক্ষণিকভাবে খোলা থাকবে।
প্রবেশপথসহ সুপ্রিম কোর্টের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শনের পর গতকাল শনিবার সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, সুপ্রিম কোর্টের জাজেস স্পোর্টস কমপ্লেক্স-সংলগ্ন মসজিদ গেট সকাল ৮টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত খোলা থাকবে। বাংলাদেশ বার কাউন্সিল-সংলগ্ন গেট দিয়ে সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে শুধু গাড়ি বের হতে পারবে। তবে এ গেট দিয়ে কোনো গাড়ি ভেতরে প্রবেশ করতে পারবে না। এ ছাড়া বাংলা একাডেমির বিপরীত পাশে অবস্থিত গেটটি সার্বক্ষণিকভাবে বন্ধ থাকবে।
গত বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর দোয়েল চত্বরসহ আশপাশের এলাকায় ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া-সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সেদিন পিটিয়ে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের রক্তাক্ত করে ছাত্রলীগ। হামলার শিকার হন তিন আইনজীবীও। পাশাপাশি আইনজীবী তৈমুর আলম খন্দকারের গাড়ি ভাঙচুর করা হয়।
ওই ঘটনার পর সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন নিরাপত্তায় নিয়োজিত সংশ্লিষ্টদের নিয়ে বৈঠকে বসে। নিরাপত্তার বিষয়ে জ্যেষ্ঠ বিচারপতিদের নিয়ে আলোচনায় বসেন প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী। সভা শেষে বিভিন্ন নির্দেশনা দেন তিনি।
গতকাল সুপ্রিম কোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল মো. বজলুর রহমানের নেতৃত্বে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের কর্মকর্তা ও নিরাপত্তায় নিয়োজিত ব্যক্তিরা আদালত প্রাঙ্গণের বিভিন্ন স্থান পরিদর্শন করেন। এ সময় হাইকোর্ট বিভাগের রেজিস্ট্রার মো. গোলাম রব্বানী, আপিল বিভাগের রেজিস্ট্রার মোহাম্মদ সাইফুর রহমান ও শাহবাগ থানার ওসি উপস্থিত ছিলেন। পরিদর্শনের পাশাপাশি অ্যাটর্নি জেনারেল এএম আমিন উদ্দিন ও সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সভাপতি মোমতাজ উদ্দিন ফকিরের সঙ্গেও কথা বলেন তারা।
পরে মোহাম্মদ সাইফুর রহমান বলেন, সুপ্রিম কোর্টের কোন ফটক কখন বন্ধ বা খোলা থাকবে, সে বিষয়ে পরিদর্শন করে সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। গতকাল সকালেও প্রধান বিচারপতি কিছু নির্দেশনা দিয়েছেন। নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের অংশ হিসেবে আজ থেকে সুপ্রিম কোর্টে প্রবেশে কড়াকড়ি আরোপ করা হবে। তবে আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীরা যাতে কোনো ধরনের হয়রানি ছাড়া নির্বিঘ্নে আদালতে প্রবেশ করতে পারেন, তা নিশ্চিত করা হবে।
মোহাম্মদ সাইফুর রহমান আরও বলেন, বিনা প্রয়োজনে কেউ যাতে আদালত প্রাঙ্গণে প্রবেশ করতে না পারেন, তাও নিশ্চিত করা হবে। নির্ধারিত পার্কিং স্থান ছাড়া আদালত প্রাঙ্গণে যত্রতত্র গাড়ি পার্কিং করা যাবে না। যত্রযত্র গাড়ি পার্কিং করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে। এ ছাড়া সুপ্রিম কোর্ট প্রাঙ্গণে সিসিটিভি ক্যামেরা বসানোর কার্যক্রম শুরু হয়েছে।