যারা মানুষের বিপদে এগিয়ে যায় আল্লাহ তাদের বিপদে সাহায্য করেন। কারও বিপদে এগিয়ে যাওয়ার পর সে যদি কৃতজ্ঞতা স্বীকার না করে তাহলে হতাশ হবেন না। আপনি আপনার জয়গায় সফল। একটি ভালো কাজ করতে পারার সফলতা, একজন মানুষকে বিপদ থেকে রক্ষা করতে পারার সফলতা। আমি মনে করি জীবনের প্রত্যেকটি ভালো কাজ একেকটি অর্জন। যে অর্জন আপনাকে শান্তি দেবে, আপনাকে প্রশান্তি দেবে। সবকিছু শেষ হয়ে যাওয়ার পর যে অর্জনগুলো আপনার রয়ে যাবে।
বর্তমান পৃথিবীতে সবচেয়ে কঠিন কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে নিজের স্বার্থ ত্যাগ করে অন্যের স্বার্থে কাজ করা। মানুষকে ভালোবাসা মানুষের জন্য কাজ করা। আমরা কখনও চিন্তা করি না, আমরা কখনও ভাবি না এই ছোট পৃথিবীর ছোট সংসারে আপনি, আমি আমরা খুব অল্প সময়ের জন্য এসেছি। এই অল্প সময়টুকু যত ভালোভাবে কাটানো যায় সেই চেষ্টা করা।
আমরা মানুষ হয়ে মানুষকে কেন ঘৃণা করব? ঘৃণা মানুষকে জ্বালায়-পুড়ায় এক ধরনের অশান্তি সৃষ্টি করে। আপনি কাউকে ঘৃণা করেন এটার আপনার জন্যই অশান্তির কারণ। হতে পারে মানুষটির আচর-ব্যবহার ভালো না। তাই বলে তাকে ঘৃণা করবেন? তাহলে কি আপনি ভালো হতে পারলেন? ভালো মানুষ কাউকে ঘৃণা করে না।
ভালো মানুষ সবকিছু ভালোর চোখে দেখে, আলোর চোখে দেখেন। সবকিছুকে নতুন করে সৃষ্টি করার চিন্তা করে। যার ব্যবহার ভালো না তাকে ঘৃণা না করে তাকে ভালো করার চেষ্টা করেন। বর্তমান পৃথিবীতে সবকিছু উন্নত হচ্ছে, মানুষের জীবন-যাপনের মানও বৃদ্ধি পাচ্ছে, শুধু মানুষের প্রতি মানুষের ভালোবাসাটাই কমে যাচ্ছে। যার ফলে সবকিছু থাকা সত্তে¡ও মানুষের মধ্যে এখন ঝগড়া-ফ্যাসাদ অধিক। কোটি টাকার মালিক কিন্তু মনে শান্তি নেই। শান্তির জন্য টাকা নয় ভালোবাসা প্রয়োজন, যা আমাদের মধ্যে এখন নেই। আপনি চিন্তা করুন আপনি যাকে ভালোবাসেন তাকে আপনি আঘাত করতে পারবেন? না পারবেন না। কারণ ভালোবাসাতে থাকে মায়া, মমতা, অন্যের কষ্ট নিজের করে অনুভব করার ক্ষমতা।
পৃথিবীর বার্তমান এই মারামারি, আহাজারি এসব কিছুর জন্যই আমরাই দায়ী। তাই পৃথিবীকে পরিবর্তন করার দায়িত্বটাও আমাদেরই নিতে হবে। মানুষ সৃষ্টির সেরা জীব, তাই মানুষ হিসেবে আমাদের আচরণও সৃষ্টির হওয়া প্রয়োজন।
একটা কথা সবসময় আমাদের মনে রাখতে হবে কেন আমরা এসেছি পৃথিবীতে? আমাদের করণীয় কী? আল্লাহ আমাদের সৃষ্টি করে পাঠিয়েছেন মারামারি আহাজারি করার জন্য? না। তাই আমাদের মধ্যে ভালোবাসা বৃদ্ধি করতে হবে। একজনের প্রতি অন্যজনের মায়া সৃষ্টি করতে হবে। কেউ কষ্ট পেলে সেই কষ্ট নিজের মধ্যে অনুভব করতে হবে। পৃথিবীর সব মানুষকে নিজের কাছের মানুষ, পাশের মানুষ ভাবতে হবে। পুরো পৃথিবীটাকে একটা পরিবার ভাবতে হবে, এ পরিবারে আপনিও একজন সদস্য।
পৃথিবী আপনার, পৃথিবী আমার, পৃথিবী সবার। এখানে আপনি আমার শত্রæ নন, আমি আপনার শত্রæ নই। তাই আমাদের উচিত সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে কাঁধে কাঁধ রেখে এ পৃথিবীটাকে তৈরি করি নতুন করে। যেখানে থাকবে না স্বার্থের জন্য লড়াই, মারামারি, আহাজারি থাকবে শুধু মায়া, মমতা আর ভালোবাসা।
ইমরান হোসাইন
শিক্ষার্থী, গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগ
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়
