বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের ঋণ আদায়ে শিথিলতা

নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল সিলেট ও সুনামগঞ্জসহ পার্শ্ববর্তী জেলায় বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের আগামী ছয় মাস ঋণ আদায় স্থগিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে বিশেষ পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের আওতায় নতুন করে ঋণ দেয়ার নির্দেশনা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। গতকাল সোমবার বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষিঋণ বিভাগ এ-সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করেছে।

নির্দেশনায় বলা হয়েছে, সম্প্রতি বাংলাদেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সিলেট ও সুনামগঞ্জ জেলাসহ এসব অঞ্চলের পার্শ্ববর্তী মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, কিশোরগঞ্জ ও নেত্রকোনা জেলায় ভারী বৃষ্টিপাত হয়। এতে নদ-নদীর পানি বৃদ্ধির ফলে সৃষ্ট আকস্মিক বন্যায় ফসল, মৎস্য, পোলট্রি ও প্রাণিসম্পদ খাতের সঙ্গে জড়িত এলাকার কৃষকরা ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।

ক্ষতিগ্রস্ত এসব অঞ্চলে কৃষকরা ক্ষতি কাটিয়ে উঠে যেন আবার কৃষি উৎপাদন অব্যাহত রাখতে পারেন, সেই লক্ষ্যে আগের দেয়া ঋণ আদায় স্থগিত রাখতে হবে। পাশাপাশি শস্য-ফসল, মৎস্য, পোলট্রি ও প্রাণিসম্পদ খাতে প্রকৃত চাহিদা ও বাস্তবতার নিরিখে দ্রুত নতুন ঋণ বিতরণ করতে হবে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়, গত বছরের ১৪ সেপ্টেম্বর বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা কৃষক পর্যায়ে চার শতাংশ সুদে কৃষিঋণ বিতরণের জন্য গঠিত তিন হাজার কোটি টাকার বিশেষ পুনঃঅর্থায়ন স্কিমের আওতায় ২০০ কোটি টাকা ঋণ বিতরণের লক্ষ্যে ব্যাংকের অব্যবহƒত স্থিতির ন্যূনতম ২০ শতাংশ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত এই ছয় জেলায় বিতরণ নিশ্চিত করতে হবে।

সার্কুলার জারির তারিখ থেকে পরবর্তী ছয় মাস পর্যন্ত বর্ণিত জেলায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের কাছ থেকে কৃষিঋণ আদায় স্থগিত রাখতে হবে। ব্যাংক-এমএফআই লিংকেজের মাধ্যমে ঋণপ্রাপ্ত কৃষকদের কাছ থেকেও কৃষিঋণ আদায় একইভাবে ছয় মাস স্থগিত রাখতে হবে।

ডাউন পেমেন্টের শর্ত শিথিল করে ঋণ পুনঃতফসিলিকরণ সুবিধা প্রদান করা যাবে; তবে কৃষকের ক্ষতির পরিমাণ বিবেচনায় বিনা ডাউন পেমেন্টেও ঋণ পুনঃতফসিল করা যাবে। এই সঙ্গে কৃষক ও গ্রাহক পর্য়ায়ে নতুন ঋণ সুবিধা দেয়া হবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়, নতুন করে কোনো সার্টিফিকেট মামলা না করে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে অনাদায়ী ঋণগুলো তামাদি হওয়া প্রতিবিধানে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ এবং দায়েরকৃত সার্টিফিকেট মামলাগুলোর তাগাদা আপাতত বন্ধ রেখে সোলেনামার মাধ্যমে মামলার নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করতে হবে।

ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের পুনর্বাসনে বসতবাড়ির আঙিনায় হাঁস-মুরগি ও গবাদি পশু পালন, গো-খাদ্য উৎপাদন ও ক্রয় এবং অন্যান্য আয় উৎসারী কর্মকাণ্ডে ঋণ দেয়ার ব্যবস্থা করতে হবে। বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকরা যাতে প্রকৃত চাহিদা মোতাবেক যথাসময়ে নতুন ঋণ নিতে পারেন এবং ঋণ পেতে কোনোরূপ হয়রানির শিকার না হন, সে বিষয়টি তদারকি করতে হবে।

এছাড়া সংশ্লিষ্ট জেলার লিড ব্যাংক কর্তৃক জেলা কৃষিঋণ কমিটির সভার মাধ্যমে ঋণ বিতরণ পরিস্থিতি তদারকি করতে হবে। এ নির্দেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও নির্দেশনায় বলা হয়েছে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০