একচেটিয়া ব্যবসা ও যাত্রীদের দুর্ভোগ নিরসনে ব্যবস্থা নিন

সড়কে তুচ্ছ কারণে কলহে লিপ্ত হয় পরিবহন শ্রমিকরা। গতকাল ৩টা ৪০ মিনিটে রাজধানীর কারওয়ান বাজারে মোহাম্মদপুর-ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার রুটের গণপরিবহন স্বাধীনের বাস থেকে নামার পর এয়ারপোর্ট অ্যাভিনিউ পরিবহনের (গুলিস্তান-আবদুল্লাহপুর রুট) একটি বাসে হৈ-হুল্লোড় দেখে এগিয়ে যাই। ভেতরে ইউনিফর্ম পরিহিত ট্রাফিক পুলিশের সদস্যও ছিলেন। এক ব্যক্তি চালকের সঙ্গে বচসায় লিপ্ত। তাকে থামানোর চেষ্টা করছে পুলিশ। কী যেন ক্ষতিপূরণ চাইছে ওই ব্যক্তি। না পেয়ে নেমে গিয়ে হাতে থাকা ইটের টুকরো নিক্ষেপ করে বাসের (এয়ারপোর্ট অ্যাভিনিউ) বাম পাশের লুকিং গ্লাস ভেঙে ফেলল। তাকে মারতে গাড়ি থেকে নামতে উদ্যত হেলপারকে ট্রাফিক পুলিশ সদস্য বললেন, ‘আপনি নামবেন না’।

পরে দেখি, একটু সামনে সদরঘাট-মিরপুর ১২ নম্বর রুটের খাজা পরিবহনের একটি বাসের লুকিং গ্লাস নেই। এটির বেঁকে যাওয়া কাঠামো ঠিক করছেন বাসের হেলপার। বিড়বিড় কী যেন বলছেন। কান পেতে শুনি, বলছে ‘ক্ষতিপূরণ দাওনি। এখন নিজেরটা (লুকিং গ্লাস) কিন।’ চিনতে পারি লোকটিকে। এ ব্যক্তিই এয়ারপোর্ট অ্যাভিনিউ বাসের লুকিং গ্লাস ভেঙেছেন। সবই পানির মতো পরিষ্কার হয়ে গেল। আগে ও ভেঙেছে এরটা ((লুকিং গ্লাস), পরে এ ভেঙেছে ওরটা ((লুকিং গ্লাস)!

গণপরিবহনে চলাচলকারীরা নিত্যই এমন দৃশ্য ‘উপভোগ’ করেন। স্বগতই বলে ফেলেন, ‘যাত্রীদের সঙ্গে বিরোধে জোট বাঁধ। এখন নিজেরা নিজেরা কামড়াকামড়ি কর।’

মোহাম্মদপুর-ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার রুটের গণপরিবহন স্বাধীনের চালক-পরিবহন শ্রমিক একটু বেশিই স্বাধীন। নিয়মনীতির তোয়াক্কা করেন না।  যাত্রীদের সঙ্গে প্রায়ই দুর্ব্যবহার করেন। এ রুটে আর কোনো গাড়ি না থাকায় তাদের দৌরাত্ম্যে একপ্রকার অসহায় ছিলেন যাত্রীসাধারণ। একচেটিয়া ব্যবসা করছিল স্বাধীন। মাঝখানে এ রুটের একটি অংশে ‘মেশকাত’ পরিবহনের বাস থাকায় কিছুটা প্রতিযোগিতা ছিল। দৌরাত্ম্য কম ছিল। কোথায় হারিয়ে গেছে মেশকাত। আর কোনো বাসও নামাচ্ছিল না কেউ।

উপদ্রব বেড়েছে স্বাধীনের! ১ জুন মোহাম্মদপুর-চিটাগং রুটে চালু হয় ‘অভিনন্দন’ পরিবহনের বাস। স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলছিল সবাই। মোহাম্মদপুরের যাত্রীরা হাফ ছেড়ে বাঁচল। কেউ তো বলেই ফেলেছিলেন, “এবার যদি স্বাধীনের ‘স্বাধীনতা’ থামে।”

স্বস্তি রইল চার দিন। স্বাধীন আবার একচেটিয়ার রাজত্ব শুরু করল। ৫ জুন থেকে হাওয়া হয়ে গেল ‘অভিনন্দন’ পরিবহনের বাস। দুর্ভোগ আবার শুরু হলো মোহাম্মদপুরের বাসিন্দাদের। এ রুটে আর কোনো পরিবহনের বাস না থাকায় স্বাধীনের বাসেই চলতে হবে তাদের। মোহাম্মদপুর-ডেমরা স্টাফ কোয়ার্টার রুটে পরিবহন খাতে একচেটিয়া ব্যবসা ও  যাত্রীসাধারণের দুর্ভোগ নিরসনে কার্যকর ব্যবস্থা নেয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের দৃষ্টি আকর্ষণ করছি।

কামাল আহমদ

ইকবাল রোড, মোহাম্মদপুর, ঢাকা

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০