নিজস্ব প্রতিবেদক: কভিড-১৯ সংক্রমণ ঠেকাতে সরকার বুস্টার ডোজের গুরুত্ব তুলে ধরবে, তবে কাউকে এ বিষয়ে জোর করা হবে না বলে জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী জাহিদ মালেক। গতকাল বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প মালিক সমিতির সঙ্গে বৈঠক শেষে তিনি বলেন, ‘সরকারের দায়িত্ব হলো টিকা নেয়ার বিষয়ে মানুষকে অবহিত করা। সরকার সবাইকে আহ্বান জানাবে, তবে কাউকে জোর করা হবে না।’
করোনাভাইরাসের সংক্রমণ যে আবার বাড়ছে, সে কথা তুলে ধরে মন্ত্রী বলেন, ‘টিকা নিয়ে কী সুবিধা আছে, না নিলে কী অসুবিধা- এই বিষয়গুলো আমরা মানুষকে জানাব। বাকি সিদ্ধান্ত মানুষের নিজের। এখানে চাপিয়ে দেয়ার কোনো বিষয় নেই। আমরা চাপিয়ে দিতে পারবও না।’
জাহিদ মালেক বলেন, ‘আমরা বলতে পারি, যারা এখনও বুস্টার ডোজ নেননি, শিগগির নিয়ে নিন। বুস্টার ডোজ নেয়া থাকলে আক্রান্তের পরও মৃত্যুঝুঁকি কমে যায়। এজন্য আমি মনে করি এখনই বুস্টার ডোজ নেয়া দরকার।’
তিন মাস পর বুধবার দেশে করোনাভাইরাসে দৈনিক শনাক্ত রোগীর সংখ্যা আবার দুইশ ছাড়িয়েছে। পাশাপাশি নমুনা পরীক্ষার বিপরীতে দৈনিক শনাক্তের হারও তিন শতাংশের বেশি থাকছে দুদিন ধরে, যা টানা কয়েক সপ্তাহ এক শতাংশের নিচে ছিল। দেশে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ফের বাড়তে থাকায় বুস্টার ডোজ নেয়ার ওপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
করোনাভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় গঠিত কভিড-১৯ সংক্রান্ত জাতীয় কারিগরি পরামর্শক কমিটিও তাদের সুপারিশে বলেছে, এখনও যারা তৃতীয় ডোজ নেননি তারা যেন শিগগিরই নিয়ে নেন।
কমিটি সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ফের কিছু বিধিনিষেধ ফেরানোর পরামর্শ দিয়েছে। এর মধ্যে বিদেশ থেকে আসা ব্যক্তিদের জন্য ‘কভিড নেগেটিভ’ সনদ ও টিকা সনদ বাধ্যতামূলক করা, পাশাপাশি জনসমাগম বর্জন, মাস্ক পরা বাধ্যতামূলক করা এবং ‘নো মাস্ক, নো সার্ভিস’ নীতি আবার চালুর পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের হিসেবে বুধবার পর্যন্ত ২ কোটি ৭৪ লাখ ৮৯ হাজারের বেশি মানুষ বুস্টার ডোজ নিয়েছে। আর করোনাভাইরাসের দ্বিতীয় ডোজ নিয়েছেন ১১ কোটি ৮৫ লাখের বেশি মানুষ। ১২ কোটি ৮৯ লাখের বেশি মানুষ প্রথম ডোজ নিয়েছেন।
ওষুধ শিল্প মালিক সমিতির সঙ্গে বৈঠকের পর স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, ‘ওষুধের কাঁচামালের দাম বেড়েছে, তবে ওষুধের দাম যেন অস্বাভাবিক না বাড়ে সেজন্যই ওষুধ শিল্প মালিকদের সঙ্গে তিনি বৈঠক করেছেন। ডলারের দাম বেড়েছে, কাঁচামাল বিদেশ থেকে আনতে হয় সেই জিনিসের দাম বেড়েছে। সেগুলোর দাম বাড়লে তার একটা তো প্রভাব পড়বেই। এসব বিষয়ে আমরা কথা বলেছি, সবকিছু যেন সহনীয় পর্যায়ে থাকে, সে বিষয়ে আমরা ওষুধ শিল্প সমিতিকে বলেছি। তারাও আমাদের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে একমত হয়েছেন।’
স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের সচিব ড. মুহাম্মদ আনোয়ার হোসেন হাওলাদার, ওষুধ প্রশাসন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ ইউসুফ এবং বাংলাদেশ ওষুধ শিল্প সমিতির সভাপতি নাজমুল হাসানসহ অন্য কর্মকর্তারা সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।