ইমাম মহসীন হত্যার রহস্য উদঘাটন বগুড়া পিবিআইয়ের

প্রতিনিধি, বগুড়া: জয়পুরহাটের কালাই উপজেলার মসজিদের ইমাম মহসীন আলী হত্যার রহস্য উদঘাটন এবং জড়িত যুবক শাহিনুর ওরফে শাহীনকে (২৬) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) বগুড়া। এ হত্যাকাণ্ডের মাত্র ১৩ দিনের মাথায় আসামিকে গাজীপুর থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারের পর জড়িত শাহিনুর ওরফে শাহিন হত্যার দায় স্বীকার করে আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার পিবিআই বগুড়ার পুলিশ সুপার আকরামুল হোসেন প্রেস ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানিয়েছেন।

গ্রেপ্তারকৃত শাহিনুর (৩৩) নওগাঁ জেলার বদলগাছি থানার চাকরাইল গ্রামের নঈম উদ্দিনের ছেলে। আর নিহত মহসীন আলী (২৬) জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলার বেলগাড়িয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে। 

গ্রেপ্তারের পর শাহীনুর জানায়, ১২ বছর সংসার করার পর তার স্ত্রী শারমিন সুলতানা শাকিলা এক বছর আগে তাকে তালাক দেন। শাহীনুরের সঙ্গে সংসার করাকালে শাকিলার গর্ভে একটি কন্যাসন্তান জš§গ্রহণ করে। 

ওয়াসিফা নামের সেই কন্যাসন্তান শাহীনুরের কাছে থাকে এবং স্থানীয় একটি স্কুলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে লেখাপড়া করে। এরপর চার মাস আগে পার্শ্ববর্তী জয়পুরহাট জেলার কালাই উপজেলার বেলগাড়িয়া গ্রামের মোহাম্মদ আলীর ছেলে মসজিদের ইমাম মহসীনকে বিয়ে করে। শাহিনুরের সন্দেহ মহসীন তার স্ত্রীর সঙ্গে পরকীয়া সম্পর্ক গড়ে তুলে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করেন। এ সন্দেহ থেকে শাহীনুর মহসীন আলীকে হত্যার পরিকল্পনা করে।

পরিকল্পনা অনুযায়ী শাহীনুর নিজের নাম পরিচয় গোপন করে মহসীনের মোবাইল ফোন নম্বর সংগ্রহ করে তার সঙ্গে যোগাযোগ শুরু করে সখ্য গড়ে তোলেন। গত ৭ জুন সন্ধ্যায় শাহীনুর মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করে কালাই উপজেলার মোলামগাড়ি বাজারে মহসীনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। সেখানে দুইজনে চা পান করে এবং বিভিন্ন গল্প করে সময় কাটান। রাত সাড়ে ৯টার দিকে শাহীনুর তার বাইকে মহসীনকে নিয়ে মোলামগাড়ি বাজার থেকে করিমপুরগামী রাস্তায় নিয়ে যান। একপর্যায় ফাঁকা জায়গায় মোটরবাইক থামিয়ে মহসীনকে নিজের পরিচয় দেন এবং তার স্ত্রী শাকিলাকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করেছে বলে দোষারোপ করতে থাকেন। একপর্যায় তার সন্তান ওয়াসিফার উপবৃত্তির জন্য তার মা শাকিলার জš§নিবন্ধন ও ভোটার আইডি কার্ডের ফটোকপি দিতে বলে। এতে মহসীন আপত্তি জানায় এবং তাৎক্ষণিক তার কাছে নেই বলে জানিয়ে দেন।

এ সময় শাহীনুরের কাছে থাকা একটি লোহার পাত দিয়ে মহসীনের মাথার পেছনে আঘাত করলে তিনি মাটিতে পড়ে যান। এ সময় শাহীনুর লোহার পাত দিয়ে মহসীনের মাথায় আরও কয়েকটি আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে মরদেহ রাস্তার পার্শ্বে ধানক্ষেতে ফেলে মোটরবাইক নিয়ে চলে যান। পরদিন  মহসীনের মরদেহ ধানক্ষেতে পড়ে থাকতে দেখে কালাই থানা পুলিশ উদ্ধার করে এবং থানায় অজ্ঞাত আসামিদের নামে নিহতের বাবা মোহাম্মদ আলী মামলা দায়ের করেন।

পিবিআই বগুড়ার পুলিশ সুপার আকরামুল হোসেন বলেন, মরদেহ উদ্ধারের পর পিবিআই ছায়া তদন্ত শুরু করেন। একপর্যায়ে গত মঙ্গলবার পিবিআই বগুড়ার সদস্যরা গাজীপুর জেলার গাছা থানা এলাকার ছয়দানা হাজিরপুকুর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করে।

তিনি আরও বলেন, হত্যাকাণ্ডের পর থেকেই শহীনুর ঘন ঘন স্থান পরিবর্তন করছিল। পিবিআইএর টিম তার পেছনে লেগে থেকে গ্রেপ্তার করে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০