বাজেটে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাবনা উপেক্ষিত

নিজস্ব প্রতিবেদক: তেল-গ্যাস জ্বালানির বিকল্প হিসেবে নবায়নযোগ্য জ্বালানির সম্ভাবনা থাকলেও তা উপেক্ষা করা হচ্ছে। পেট্রোলিয়াম, এলএনজি ও কয়লা আমদানির ব্যয় বৃদ্ধির কারণে বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাত চাপের মুখে পড়েছে। ভর্তুকি উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধির পরও ব্যয় সমন্বয় করা কঠিন। বাড়তি উদ্যোগ না নিলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি ভালো বিকল্প হওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও তা উপেক্ষা করা হয়েছে।

রাজধানীর গুলশানে একটি হোটেলে আয়োজিত ‘২০২৩ অর্থবছরের জাতীয় বাজেটে জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতের অবস্থান’ শীর্ষক সংলাপে এ কথা উল্লেখ করেন সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণা পরিচালক খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম। তিনি বলেন, আমার মনে হয়, অনেক সময় দেশের ভেতরে সস্তা বিদ্যুৎ রেখে আমরা দামি বিদ্যুৎ নিয়ে আসছি কি না! আমাদের কাছে কিছুটা প্রশ্নের জায়গা তৈরি করেছে। আমরা কম দামে বিদ্যুৎ আনার বিষয়টা নিশ্চিত করতে পারছি কি না, সেটা চিন্তা করতে হচ্ছে।

তিনি আরও বলেন, আরেকটা বিষয় হচ্ছে ওভার জেনারেশন ক্যাপাসিটি। আমাদের দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদন সক্ষমতার প্রায় ৪২ শতাংশ অব্যবহƒত থেকে যাচ্ছে। এই অব্যবহƒত বিদ্যুৎ কোনো সমস্যা হতো না, যদি এটার জন্য কোনো অর্থ পরিশোধ করতে না হতো। কিন্তু সরকারকে এই অব্যবহƒত বিদ্যুতের জন্যও অর্থ পরিশোধ করতে হচ্ছে। এটি সরকারের জন্য একটি বড় দুশ্চিন্তার জায়গা।

সংলাপে জ্বালানি বিশেষজ্ঞ এবং কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) জ্বালানি-বিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে গেছে। আমাদের অভ্যন্তরীণ জ্বালানি চাহিদাও বেড়েছে। সুতরাং আমাদের জ্বালানির দাম বাড়বে, জ্বালানির দাম বাড়লে বিদ্যুতের দাম বাড়বে। এটাই বাস্তবতা। কিন্তু এ খাতে দীর্ঘদিন ধরে অন্যায় ব্যয় ও লুণ্ঠনমূলক ব্যয় চলে আসছে, যে ব্যয়কে বিশেষ আইনের দ্বারা সুরক্ষিত করা হয়েছে। সময় এসেছে এ বিষয়টি নিয়ে কথা বলার। সরকার বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন করছে। বেশি দামে বিদ্যুৎ কিনে কম দামে দিচ্ছে। তাহলে সেই ঘাটতি কোথা থেকে আসবে, যেখানে ২০ থেকে ২২ হাজার কোটি টাকা ঘাটতি তৈরি হয়েছে।

তিনি আরও বলেন, জ্বালানি অধিকার হলো সঠিক দামে, সঠিক মানে ও সঠিক মাপে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে হবে। আমরা কি সঠিক দামে বিদ্যুৎ পাচ্ছি? যে দাম নির্ধারণ করা হয় সেটা কি সঠিক? নিঃসন্দেহে নয়। আমরা জ্বালানি খাতে ১০ দফা কিংবা ২১ দফা সংস্কারের কথা বলেছি। সেখানে সবাই বলেছি, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে তাদের বোর্ড থেকে আমলাদের অপসারণ করতে হবে। প্রশাসন অচল হয়ে যাচ্ছে। কোনো অন্যায়ের প্রতিকার হচ্ছে না।

বাংলাদেশ ইন্ডিপেনডেন্ট পাওয়ার প্রডিউসার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ইমরান করিম বলেন, সরবরাহ সিস্টেমে ঘাটতি রয়েছে, সে কারণে লোডশেডিং হচ্ছে। বিদ্যুতে আমাদের সত্যিকারের ক্যাপাসিটি ১৬ হাজার মেগওয়াট। আমাদের অন্তত ২০ শতাংশ বেশি বিদ্যুৎ উৎপাদনের ক্ষমতা থাকা প্রয়োজন। সংলাপে আরও বক্তব্য দেন পাওয়ার সেলের প্রকৌশলী মোহাম্মদ হোসাইন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ও জ্বালানি বিশেষজ্ঞ বদরুল ইমাম, বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ড. ম. তামিম প্রমুখ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০