তিল যখন বিপদের কারণ

তিল নিয়ে যত কাব্যই রচিত হোক, তিল নিয়ে বিপদও হতে পারে। যেমন ম্যালিগন্যান্ট মেলানোমা। তিল থেকে হতে পারে ত্বকের এই ক্যানসার।

মেলানোমা কী: ত্বকের গভীর স্তরে অবস্থিত মেলানিন নামক কালো রং সৃষ্টিকারী কোষের ক্যানসারই হলো ম্যালিগন্যান্ট মেলানোমা।

কোথায় হয়: ত্বকের যে অংশে সূর্যালোক বেশি পড়ে (যেমন হাত, পা, ঘাড়), সেসব অংশে বেশি হয়। তবে ত্বক ছাড়াও চোখ, নাক, পায়ুপথ, যোনিপথ, এমনকি মস্তিষ্কের আবরণীতেও মেলানোমা হতে পারে।

কেন হয়: জানা কারণগুলোর মধ্যে সবচেয়ে বড় কারণটি হলো রোদ। যাদের শরীরে অতিরিক্ত তিল থাকে, তাদের ম্যালিগন্যান্ট মেলানোমা হওয়ার ঝুঁকি বেশি। এ ছাড়া পুরুষ ও ৬০ বছরের বেশি বয়সীদেরও ঝুঁকি বেশি থাকে। যারা দীর্ঘ সময় রোদে কাজ করেন, তারা ঝুঁকিতে আছেন। এ ছাড়া জিনগত কারণে এটি হতে পারে।

উপসর্গ: তিল বা আঁচিলের সুস্পষ্ট পরিবর্তন ক্যানসারের একটা লক্ষণ। তবে সব তিলই যে ক্যানসারে রূপ নেবে, এমন নয়। যে সুস্পষ্ট পরিবর্তনগুলো বিপদের পূর্বাভাস হতে পারে, সেগুলো এ, বি, সি, ডি দিয়ে প্রকাশ করা হয়। এ: অ্যাসিমেট্রি বা অসাম্য তিলকে মাঝ বরাবর দুই ভাগ করলে দুটি অর্ধবৃত্তের মতো দৃশমান না হওয়া। বি: বর্ডার বা প্রান্ত চারদিকের সীমানা সমান না হওয়া বা এবড়োখেবড়ো হওয়া। সি: কালার বা রং প্রাথমিক অবস্থা থেকে রঙের পরিবর্তন হওয়া। ডি: ডায়ামিটার বা ব্যাস ছয় মিলিমিটারের বেশি বড় হওয়া। এ ছাড়া কোনো তিল বা আঁচিলে রক্তপাত, চুলকানি বা প্রদাহ বিপদের কারণ হতে পারে।

প্রতিরোধব্যবস্থা: রোদ থেকে ত্বককে রক্ষা করা জরুরি। দীর্ঘ সময় রোদে কাজ বা খেলাধুলা করলে রোদ প্রতিরোধ করার ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। পর্যাপ্ত কাপড়, হ্যাট, ছাতা ও সানস্ক্রিন সূর্যরশ্মির খারাপ প্রভাব থেকে ত্বককে সুরক্ষা দেয়। যাদের শরীরে অস্বাভাবিক বা অতিরিক্ত তিল আছে, তারা বেশি সতর্ক থাকবেন। তিলের ছবি তুলে রেখে তাতে কোনো পরিবর্তন (এ, বি, সি, ডি) হয় কি না, তা সময় সময় পর্যবেক্ষণ করা যেতে পারে। কোনো পরিবর্তন দেখা দিলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।

ডা. আ ন ম মঈনুল ইসলাম

সহকারী অধ্যাপক ও বিভাগীয় প্রধান

রেডিওথেরাপি (ক্যানসার চিকিৎসা) বিভাগ, শেবাচিম

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০