নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অর্থনৈতিক কার্যক্রমে গতি আনতে নতুন উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। রাজধানীর সঙ্গে যশোরসহ ওই অঞ্চলের জেলাগুলোকে এবং মোংলা বন্দরকে কেন্দ্র করে একটি অর্থনৈতিক করিডোর উন্নয়ন করা হবে। প্রধানমন্ত্রীর দফতর থেকে এ-সংক্রান্ত নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। এ-সংক্রান্ত সম্ভাব্যতা নিরূপণের জন্য এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সহযোগিতায় কাজ করছে বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (বিডা)।
গতকাল রোববার বিডা সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক সভায় এসব কথা জানান সংস্থাটির নির্বাহী চেয়ারম্যান কাজী এম আমিনুল ইসলাম। এ লক্ষ্যে এরই মধ্যে বিডার তিন সদস্যের একটি প্রতিনিধিদল পার্শ^বর্তী ভারত ও মালয়েশিয়ার অর্থনৈতিক করিডোর সফর করেছে। বিডা চেয়ারম্যানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় ওই সফরের অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেন কর্মকর্তারা। এ সভায় বিডা নির্বাহী সদস্য ও বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তা ও গণমাধ্যমকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন। এতে এডিবির কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন ও জ্যোৎস্না বার্মা উপস্থিত ছিলেন।
সভায় বিডার নির্বাহী চেয়ারম্যান বলেন, বাংলাদেশে বিনিয়োগের পরিবেশ উন্নয়নের জন্য বেজার প্রচেষ্টায় অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠছে। এর পাশাপাশি অর্থনৈতিকভাবে সম্ভাবনাময় দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নের মাধ্যমে একটি অর্থনৈতিক করিডোর স্থাপন করা হবে। আমাদের দেশে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে জমির ঘাটতি রয়েছে। এছাড়া আমাদের বিপুল জনসংখ্যা রয়েছে। এ বাস্তবতায় আমাদের বাণিজ্যের পাশাপাশি উৎপাদনের কেন্দ্রস্থল বানাতে হবে বাংলাদেশকে। এজন্য পায়রা বন্দরের সঙ্গে বেনাপোল থেকে শুরু করে সিলেট পর্যন্ত যুক্ত করে আন্তর্জাতিক রুটের সঙ্গে সম্পৃক্ত হওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। সেজন্যই কাজ শুরু করা হয়েছে।
এ লক্ষ্যে বিডার নির্বাহী সদস্য মো. আলতাফ হুসাইন, পরিচালক মো. মোস্তাফিজুর রহমান ও উপ-পরিচালক গাজী একেএম ফজলুল হক সম্প্রতি ভারত ও মালয়েশিয়ার কয়েকটি অর্থনৈতিক করিডোর সফর করেছেন। ওই সফরের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে বক্তব্য রাখেন বিডার নির্বাহী সদস্য আলতাফ হুসাইন। তিনি বলেন, অর্থনৈতিক করিডোরের আওতায় অনেক অবকাঠামো সংযুক্ত হতে হবে। এর মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল, শিল্প-কারখানা ও বন্দর থেকে শুরু করে সব ধরনের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠান স্থাপন করতে হবে। এক্ষেত্রে তিন ফসলি জমি অধিগ্রহণ না করে অপেক্ষাকৃত কম উৎপাদনক্ষম বা এক ফসলি জমি অধিগ্রহণের চেষ্টা করতে হবে। এসব কাজ বাস্তবায়নের জন্য বিডাকে স্বতন্ত্র ও ক্ষমতাসীন কর্তৃপক্ষ হিসেবে গড়ে তোলারও পরামর্শ দেন তিনি।
এ সময় এডিবির কর্মকর্তা জাহিদ হোসেন বলেন, প্রাথমিকভাবে আমরা গবেষণা ও সম্ভাব্যতা যাচাইয়ে কৌশলগত সহায়তা করছি। পরে মাস্টারপ্ল্যান তৈরির জন্য কাজ করা হবে। তারপরই এডিবি অর্থায়নযোগ্য কিছু প্রকল্পের দিকে অগ্রসর হবে। তবে এসব অগ্রগতির জন্য সরকারের বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে পরিকল্পনা পর্যায় থেকেই সমন্বয় প্রয়োজন বলে উল্লেখ করেন এডিবির প্রতিনিধিরা।
Add Comment