নিজস্ব প্রতিবেদক: সিকিউরিটিজ আইন অমান্য করায় চিক টেক্স লিমিটেড ও ওয়াইফাং সিকিউরিটিজকে জরিমানা এবং চার সিকিউরিটিজ হাউজকে সতর্ক করেছে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এছাড়া ‘প্রাইম ইসলামী সিকিউরিটিজ’-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আবুল কালাম ইয়াজদানিকে ৩০ লাখ টাকা জরিমানা পরিশোধে নতুন সময়সীমা বেঁধে দিয়েছে কমিশন।
বিএসইসির এনফোর্সমেন্ট বিভাগের প্রকাশিত জুন মাসের প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে।
যে চারটি সিকিউরিটিজ হাউজকে সতর্ক করা হয়েছে সেগুলো হলো- এনসিসিবি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেড, বি অ্যান্ড বি এন্টারপ্রাইজ, প্রুডেন্সিয়াল সিকিউরিটিজ ও প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেড।
জানা যায়, ওয়াইফাং সিকিউরিটিজের (ডিএসইর ট্রেক হোল্ডার নং-২১০) পরিচালক, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, কর্মচারী ও তাদের আত্মীয়দের মার্জিন ঋণ সুবিধা দেওয়া হয়েছে। ৩১ মার্চ, ২০১৫ তারিখ হাউজটি তাদের কাস্টমার কনসোলিডেটেড অ্যাকাউন্টে তিন কোটি ২৯ লাখ ৭৮ হাজার ৭৬ টাকা ঘাটতি দেখিয়েছে। নন মার্জিনেবল ‘জেড’ ক্যাটাগরির শেয়ার ক্রয়ে মার্জিন ঋণ প্রদান করেছে ওয়াইফাং সিকিউরিটিজ।
এছাড়া সিকিউরিটিজ ও এক্সচেঞ্জ কমিশন (স্টক-ডিলার, স্টক-ব্রোকার ও অনুমোদিত প্রতিনিধি) বিধিমালা, ২০০০-এর আচরণবিধি লঙ্ঘন করেছে ওয়াইফাং সিকিউরিটিজ। এ কারণে হাউজটিকে ৩০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা। পরে গত ১ জুন ভুল স্বীকার করে বিএসইসির কাছে জরিমানা থেকে অব্যাহতি চায় ওয়াইফাং, যা বিএসইসির কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি। তাই সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯ এর ২২ ধারা অনুযায়ী ওয়াইফাং সিকিউরিটিজকে ৩০ লাখ টাকা করে জরিমানা করে। পাশাপাশি তাদের ওই জরিমানা ১৫ দিনের মধ্যে পরিশোধ করতে আদেশ দেওয়া হয়।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের ওটিসি মার্কেটে তালিকাভুক্ত কোম্পানি চিক টেক্স লিমিটেড ৩০ জুন ২০১৫ সমাপ্ত বছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন এবং ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৫ সমাপ্ত পর্যন্ত তৃতীয় প্রান্তিকের অনিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন নির্ধারিত তারিখের মধ্যে প্রকাশ করতে ব্যর্থ হয়েছে। তাই সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জে অর্ডিন্যান্স, ১৯৬৯-এর ২২ ধারা অনুযায়ী কোম্পানির চেয়ারম্যান ও তিন পরিচালককে এক লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়েছে, যা ১৫ দিনের মধ্যে পরিশোধ করতে আদেশ দেওয়া হয়।
আইন অমান্য করায় এনসিসিবি সিকিউরিটিজ অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল সার্ভিস লিমিটেডকে শুনানিতে ডাকে বিএসইসি। এরপর কমিশিনের উপপরিচালক মো. হোসাইন খান স্বাক্ষরিক এক সতর্কবার্তায় সিকিউরিটিজ হাউজটির প্রধান নির্বাহী বরাবর পাঠানো হয়েছে বলে জানা গেছে।
একই সঙ্গে বিঅ্যান্ডবি এন্টারপ্রাইজকে (ডিএসইর ট্রেক হোল্ডার নং-৩৪) সতর্ক করেছে বিএসইসি।
জুনে প্রুডেন্সিয়াল সিকিউরিটিজ ও প্রাইম ব্যাংক সিকিউরিটিজ লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর সতর্কতার চিঠি ইস্যু করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।
এছাড়া এ বিদায়ী মাসে কমিশন শাহজীবাজার পাওয়ারের শেয়ার নিয়ে কারসাজি করার দায়ে প্রাইম ইসলামী সিকিউরিটিজের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) আবুল কালাম ইয়াজদানিকে ৩০ লাখ টাকা জরিমানা করেছে। আর এ জরিমানা মওকুফ চেয়ে কমিশনের কাছে আবেদন করেন ইয়াজদানি। কিন্তু তার অপরাধ অত্যন্ত গুরুতর বিধায় সম্প্রতি আবেদন বাতিল করে দিয়েছে কমিশন। এর ফলে তাকে জরিমানার পুরো টাকাই পরিশোধ করতে হবে। সে হিসেবে বাকি থাকা ২৫ লাখ টাকার পাঁচ লাখ টাকা ৩০ জুনের মধ্যে দিতে বলা হয়েছে। বাকি ২০ লাখ টাকা চারটি সমান কিস্তিতে আগামী বছরের জুনের মধ্যে পরিশোধের নির্দেশ নিয়েছে বিএসইসি।
Add Comment