গতকালের পর
কীভাবে বুঝবেন
১. পুঁজ বের হওয়াই কান পাকার লক্ষণ। এই তরল দুর্গন্ধযুক্ত বা দুর্গন্ধহীন হতে পারে। অনেক সময় পুঁজ রক্তমিশ্রিত থাকতে পারে। কান পাকা রোগের মধ্যে একটি ধরন আছে, যেখানে কান কিছুদিন শুকনা থাকে, আবার কিছুদিন পরপর ভেজা অর্থাৎ পানি বা পুঁজ বের হয়। আরেক ধরনের কান পাকা রোগে কান কখনোই শুকায় না।
২. কানে কম শোনা ও বন্ধ বন্ধ অনুভূতি লাগা, এমনকি সারাক্ষণ অস্বস্তি বোধ হওয়া।
৩. কানে বা মাথার ভেতরে শোঁ শোঁ শব্দ হওয়া, মাথা ঘোরা, ভারসাম্য নষ্ট হওয়া।
৪. হঠাৎ প্রদাহে অনেকের কানে তীব্র ব্যথাসহ জ্বর আসতে পারে।
চিকিৎসা
প্রচুর পরিমাণে পুঁজ পড়াসহ কান পাকার অন্যান্য লক্ষণ থাকলে রোগীকে মুখে খাওয়ার অ্যান্টিবায়োটিক, কানে অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ, বয়সভেদে নাকের ড্রপ এবং অ্যান্টিহিস্টামিন দিয়ে চিকিৎসা করা হয়ে থাকে। অবশ্য পালনীয় কিছু নিয়মও মেনে চলতে বলা হয়। যেমন ডুব দিয়ে গোসল না করা, সাঁতার না কাটা। গোসলের সময় ইয়ার প্লাগ অথবা নারিকেল তেলভেজা তুলা কানে দিয়ে গোসল করা। ঠাণ্ডা পরিহার করা, ফ্রিজের পানি, আইসক্রিম না খাওয়া। অযথা কান পরিষ্কার না করা। কানের ভেতর মোরগের পাখনা, কচুর ডগা, ম্যাচের কাঠি, কলমের মুখ প্রভৃতি ঢুকিয়ে পরিষ্কার করা সম্পূর্ণ নিষেধ।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে এ ধরনের চিকিৎসায়ই সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। কানের পর্দার ছিদ্রও বন্ধ হয়ে যায়। যদি পর্দার ছিদ্রটা বড় হয় এবং বারবার পুঁজ পড়ে, তাহলে অনেক সময় ওষুধে কাজ হয় না। সে ক্ষেত্রে তিন থেকে ছয় মাস পর্যন্ত অপেক্ষা করা হয়। ছয় মাসেও যদি জোড়া না লাগে, কানে কম শোনে, তাহলে ছোট একটা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে পর্দা জোড়া লাগিয়ে দেয়া হয়। তবে সে ক্ষেত্রে কান শুকনো থাকতে হবে। কানের সংক্রমণ হলে শুরুতেই যথাযথ চিকিৎসা করানো হলে কান পাকা প্রতিরোধ করা সম্ভব। (শেষ)
ডা. মো. আব্দুল হাফিজ শাফী
নাক কান গলা রোগ বিশেষজ্ঞ এবং হেড-নেক সার্জন
এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, সিলেট