প্রতিনিধি, ঠাকুরগাঁও: ঠাকুরগাঁও পৌর শহরের টাঙ্গন ব্রিজের নিচ থেকে বস্তাবন্দি অবস্থায় মাহফুজা খাতুন (১৪) নামে মাদ্রাসাছাত্রীকে উদ্ধারের ঘটনায় গতকাল শুক্রবার মোছা. গুলজান আক্তার (৩৮) নামে একজনকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। এর আগে মাহফুজা খাতুনের ভাই এমদাদুল হক বাদী হয়ে চারজনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতনামা ৩-৪ জনকে আসামি করে সদর থানায় এ মামলাটি দায়ের করেন। মামলার অন্য আসামিরা হলেনÑদিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার ভাবকী বিজয়পুর গ্রামের আমিরুল ইসলামের ছেলে মো. আসহাবুল ইয়ামিন (১৭), তার পিতা আমিরুল ইসলাম (৪৮), তার মা জমিলা বেগম (৩৭) ও অজ্ঞাতনামা ৩-৪ জন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, গ্রেপ্তারকৃত গুলজান আক্তার কিছুদিন আগে পার্শ্ববর্তী দিনাজপুরের বীরগঞ্জ উপজেলার ভাবকীতে মাহফুজা খাতুনদের বাড়িতে দীর্ঘদিন ধরে ভাড়া থাকতেন। ওই সময় প্রতিবেশী ও মামলার ১নং আসামি আসহাবুল ইয়ামিনের সঙ্গে কৌশলে মাহফুজার প্রেমের সম্পর্ক তৈরি করে দেন। ওই ভাড়া বাড়িতে ইয়ামিন ও মাহফুজার দৈহিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কোনো এক সময় কৌশলে গুলজান আক্তার ইয়ামিন ও মাহফুজার দৈহিক সম্পর্কের ভিডিও মোবাইলে গোপনে ধারণ করে নিজের কাছে সংরক্ষণ করেন। পরে স্থানীয়রা ইয়ামিন ও মাহফুজাকে দৈহিক মেলামেশার সময় হাতেনাতে ধরে ফেললে মাহফুজার পরিবার বিষয়টি সম্পর্কে জানতে পারে। ছেলে ও মেয়ের বয়স কম হওয়ায় রেজিস্ট্রি বিয়ে দিতে না পেরে ইজাব কবুলের মাধ্যমে স্থানীয়ভাবে বিয়ে দেয়া হয়। পরবর্তী সময়ে গুলজানকে ভাড়া বাড়ি থেকে বের করে দিলে সে ক্ষিপ্ত হয়ে বিভিন্ন রকম ষড়যন্ত্রের অংশ হিসেবে এ ঘটনা ঘটিয়েছে বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়।
এছাড়া এ ঘটনার ফলে ইয়ামিন, গুলজানসহ মামলার অন্যান্য আসামি গত বৃহস্পতিবার ফজরের নামাজের জন্য খাতুনে জান্নাত কামরুন্নেছা মহিলা কওমি মাদরাসায় মাহফুজা ওজু করতে গেলে কৌশলে তাকে ধরে নিয়ে আসে এবং প্রাণে মেরে ফেলার জন্য গলায় ওড়না পেঁচিয়ে বস্তায় ঢুকিয়ে টাঙ্গন ব্রিজের ওপর আসার পর কিছু মুসল্লি দেখে ফেললে বস্তাবন্দি অবস্থায় মাহফুজাকে রেখে তারা পালিয়ে যায়। পরে স্থানীয়রা মাহফুজাকে উদ্ধার করে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করেন। বর্তমানে সে চিকিৎসাধীন। গতকাল সদর থানা পুলিশ তার জবানবন্দি রেকর্ড করে।
এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামাল হোসেন জানান, এ বিষয়ে একটি মামলা হয়েছে। একজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। অন্য আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করছে পুলিশ।