ঠাকুরগাঁওয়ে লোডশেডিংয়ে মানা হচ্ছে না শিডিউল

শামসুল আলম, ঠাকুরগাঁও : সারাদেশের মতো ঠাকুরগাঁওয়েও চলছে লোডশেডিং। জ্বালানি সংকটের কারণে বিদ্যুৎ উৎপাদন হ্রাস পাওয়ায় লোডশেডিংয়ের বিষয়ে জ্বালানি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে আগেই বলা হয়েছে। লোডশেডিং নিয়ে বিদ্যুৎ গ্রাহকদের তেমন কোনো ক্ষোভ না থাকলেও ঘোষিত শিডিউল না মেনে লাগামহীন লোডশেডিং করার কারণে বিদ্যুৎ অফিসের প্রতি সাধারণ গ্রাহকদের ক্ষোভ দানা বাঁধতে শুরু করেছে। অপরদিকে বিদ্যুৎ অফিস চাহিদার তুলনায় অর্ধেক বিদ্যুৎ পাচ্ছেন বলে নিজেদের অসহায়ত্ত প্রকাশ করেছে।

ঠাকুরগাঁও গ্রিড পাওয়ার ডিস্ট্রিবিউশন নিয়ন্ত্রণ কক্ষের দেয়া তথ্যমতে, ঠাকুরগাঁওয়ে বিদ্যুতের চাহিদা মোট প্রায় ৮০ মেগাওয়াট। এর মধ্যে পল্লী বিদ্যুতের চাহিদা প্রায় ৬০ মেগাওয়াট এবং পিডিবির আওতাভুক্ত (নেসকো লি.) এলাকায় ২০ মেগাওয়াট। লোডশেডিংয়ের পূর্ব নির্ধারিত শিডিউল থাকার পরেও কেন সেটা অনুসরণ করা হচ্ছে না এমন এক প্রশ্নের জবাবে গ্রিড নিয়ন্ত্রণ কক্ষের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা জানান, শিডিউল বাস্তব পরিস্থিতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। আমরা চাহিদার তুলনায় বিদ্যুৎ পাচ্ছি অর্ধেকের সামান্য বেশি, তাহলে শিডিউল কীভাবে মেনে চলা যাবে? আমরা এলডিসির পরামর্শ মতোই লোড বরাদ্দ করি।

ঠাকুরগাঁও নেসকোর দুটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ। এর একটি রোড এলাকায় ডিপিএস ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্র। এখান থেকে তিনটি ফিডারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। এ তিনটি ফিডার হলো-রোড বাজার, মথুরাপুর, কলেজপাড়া।

অন্যদিকে গোয়ালপাড়া ৩৩/১১ কেভি উপকেন্দ্রের মাধ্যমে ৫টি ফিডারে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হয়। নেসকোর দুটি উপকেন্দ্রের মোট বিদ্যুৎ চাহিদা ১৯ মেগাওয়াট।

গত সপ্তাহ থেকে লোডশেডিং শুরু হওয়ার পর থেকেই লক্ষ্য করা গেছে নেসকোর ওয়েব সাইটে প্রকাশিত লোডশেডিং শিডিউল নিয়ন্ত্রণ কক্ষগুলো মানছে না। কোনো কোনো ফিডার চব্বিশ ঘণ্টায় ৮-৯ বার পর্যন্ত লোডশেডিং করা হয়েছে। এক ঘণ্টা নয়, কোনো কোনো দিন ৬ থেকে ৭ ঘণ্টা লোডশেডিং করা হচ্ছে। কেন লোডশেডিং শিডিউল মানা হচ্ছে নাÑএমন প্রশ্নের জবাবে নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলী মামুনুর রশিদ জানান, আমাদের ২০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ চাহিদার বিপরীতে পাচ্ছি ৫০-৬০ শতাংশ। অর্থাৎ প্রায় অর্ধেক। এই অর্ধেক বিদ্যুৎ পেয়ে আমরা কী করে সবাইকে একই সঙ্গে বিদ্যুৎ দেব? তাহলে এমন মনগড়া শিডিউলের দরকার আছে কি না এমন প্রশ্নের জবাবে নির্বাহী প্রকৌশলী বলেন, বাস্তবতার সঙ্গে ওই শিডিউলের কোনো মিল নেই, এ কারণেই সেটা মানা সম্ভব হচ্ছে না। 

সংকটকালীন লোডশেডিং মেনে নিতে গ্রাহকদের কোনো আপত্তি নেই। কিন্তু লোক দেখানো শিডিউল তৈরি করে ইচ্ছামতো কোনো কোনো ফিডারে অস্বাভাবিক লোডশেডিং চাপিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত কোনোমতেই মেনে নিতে পারছেন না গ্রাহকরা। তারা অবিলম্বে নেসকো লি.-এর লোডশেডিং শিডিউল যথাযথ অনুসরণ করার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ করেন।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০