নানা কারণে মাংসপেশিতে টান লাগতে পারে। এই অবস্থাকে কখনো বলে মাসল স্পাজম, কখনো মাসল ক্র্যাম্প, কিংবা মাসল পুল। মাংসপেশিতে টান পড়লে অথবা মাসল স্পাজম হলে শরীরের ওই অংশে ভীষণ ব্যথা হয়। অনেক সময় ওই অংশ নাড়াচাড়া করা যায় না। টিস্যু ছিঁড়ে গেলেও একই সমস্যা হতে পারে।
কেন হয়: কোনো অংশের মাংসপেশি অতিরিক্ত নাড়াচাড়া করলে, ব্যায়াম বা অন্য কোনো কারণে টান পড়লে, হঠাৎ ভারী কোনো কিছু ওঠালে, পানি কম খেলে, কিংবা সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের অভাব দেখা দিলে মাসল স্পাজম হতে পারে। সাধারণত খেলোয়াড়, অ্যাথলেট এবং যারা দীর্ঘ সময় বসে কাজ করেন, বা কম্পিউটারে বেশি কাজ করেন, তাদের এ ধরনের সমস্যা বেশি হয়।
যা করবেন: এ রকম অবস্থা হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন। এই সময় সব ধরনের ব্যায়াম বা শারীরিক শ্রম বন্ধ রাখুন। আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে দু-তিন ঘণ্টা পরপর ২০ মিনিটের জন্য বরফের ব্যাগ দিয়ে রাখুন। আঘাতপ্রাপ্ত স্থানটি ব্যান্ডেজ দিয়ে মুড়ে রাখতে পারেন। আঘাতপ্রাপ্ত স্থান যতটা সম্ভব উঁচু স্থানে বা একটা বালিশের ওপর রাখার চেষ্টা করুন।
যা করবেন না: প্রথম কয়েক দিন ওই স্থানে গরম পানি বা গরম সেঁক দেওয়া যাবে না। আঘাতপ্রাপ্ত স্থানে কোনোভাবেই মালিশ করা যাবে না। আঘাতের স্থানটি স্বাভাবিকভাবে নাড়াচাড়া করতে না পারা পর্যন্ত স্বাভাবিক কাজ করা যাবে না।
যা এড়িয়ে চলবেন: ভুল ভঙ্গিতে দাঁড়াবেন না, বা বসে কোনো কাজ করবেন না। অলস সময় কাটাবেন না, সব সময় সচল থাকার চেষ্টা করুন। চিনি, ভাত, আলু, মধু, রুটি বেশি খাবেন না। একেবারে না খেয়ে ওজন কমানোর চেষ্টা করবেন না। কোমলপানীয় ও চর্বিজাতীয় খাবার এড়িয়ে চলুন।
আরও যা করণীয়: প্রতিদিন অন্তত আধঘণ্টা ব্যায়াম করুন। ঘরে বসে হালকা জগিং, সিট আপস, ইয়োগার মতো ব্যায়ামগুলো করতে পারেন। নিয়মিত দ্রুত হাঁটুন। প্রতিদিন নিয়ম করে হাঁটলে পেশি গঠিত হয়, পাশাপাশি হƒদরোগ ও ক্যানসারের ঝুঁকি কমে এবং ডায়াবেটিস, রক্তচাপ ও রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে থাকে। একটু দ্রুত পায়ে হাঁটা ভালো। মিনিটে ১০০ কদম হাঁটাকে বলে ব্রিস্ক ওয়াকিং। পাশাপাশি দৌড়াতে বা জগিং করতে পারেন। শরীরের জয়েন্টগুলোয় যাতে অতিরিক্ত চাপ না পড়ে, সেজন্য বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী ওজন ঠিক রাখুন।
অধ্যাপক ডা. এম আমজাদ হোসেন
অর্থোপেডিক সার্জারি বিভাগ, ল্যাবএইড হাসপাতাল, ঢাকা