রাজনীতির মাধ্যমে ‘রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা’ চান সিইসি

নিজস্ব প্রতিবেদক: রাজনীতির মাধ্যমেই ‘রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা’ এনে অনুকূল পরিবেশ তৈরি করা সম্ভব হলে ইসির পক্ষে নির্বাচন করা ‘সহজ’ হবে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী হাবিবুল আউয়াল। আর সে জন্য নির্বাচন কমিশনের পাশাপাশি রাজনৈতিক দলগুলোকে একে অপরের সঙ্গে বসার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।

সিইসির ভাষায়, রাজনীতির মাধ্যমে যদি পলিটিক্যাল স্ট্যাবিলিটি এনে নির্বাচনের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি হয়, তাহলে ইসির পক্ষে নির্বাচন করাটা অনেক সহজ হয়। আপনাদের সহযোগিতা লাগবে। প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি, আপনাদের প্রত্যাশা মতো একটি অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনের যথাসাধ্য চেষ্টা করে যাব।

গতকাল বৃহস্পতিবার নির্বাচন ভবনের সম্মেলন কক্ষে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপের দশম দিনে এ মন্তব্য করেন সিইসি।

এদিন গণফোরাম এবং ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (ন্যাপ) বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক করেন নির্বাচন কমিশনের সদস্যরা। নির্বাচনী সহিংসতার প্রসঙ্গ এ সময় গুরুত্ব পায় সিইসির কথায়।

ভোটে হার নয়, কোনো না কোনোভাবে জিততেই হবেÑএ মানসিক ‘দৈন্যকেই’ নির্বাচনী সহিংসতার জন্য দায়ী করেন কাজী হাবিবুল আউয়াল। তিনি বলেন, আমাদের মনস্তাত্ত্বিক সমস্যা আছে, আমি ইলেকশন করব এবং আমাকে জিততেই হবে। হারতে যে হতে পারে, এটা কিন্তু কেউ মেনে নিচ্ছে না। এ মনস্তাত্ত্বিক দৈন্য আমাদের মধ্যে আছে। তাই সহনশীলতা যদি জাগ্রত করা না যায়, তাহলে সংকট থেকে যাবে।

বুধবার ঠাকুরগাঁওয়ের রানীশংকৈল উপজেলায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে ভোটকেন্দ্রে গুলিতে ছয় মাস বয়সী এক শিশুর মৃত্যু হয়। প্রার্থীদের সমর্থকদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ গুলি করে। সেই প্রসঙ্গে সিইসি বলেন, নির্বাচন হাড্ডাহাড্ডি যখন হয়, তখন ভোটের শেষে মারামারিটা হয়। কালকে (বুধবার) একটা বাচ্চা মারা গেছে। নির্বাচন শেষে এ ঘটনা ঘটে। রাত ১০-১১টার দিকে ফোন করেছি ডিসি, এসপিকে ঘটনাটা যে কী হলো। নির্বাচনটা শেষ হয়ে গিয়েছিল এবং শেষ হওয়ার মেম্বার প্রার্থী হামলা করে বসল।

রাজনৈতিক দলগুলোর উদ্দেশে সিইসি বলেন, ‘রাজনৈতিক সংস্কৃতি ধারণ করা, লালন করা, উন্নত করার’ দায়িত্ব তাদের। রাজনীতি আপনারা নিয়ন্ত্রণ করেন। আপনাদের দায়িত্ব অনেক বড়। আমরা কখনও রাজনীতি নিয়ন্ত্রণ করতে পারব না। আমরা খুব নগণ্য ব্যক্তি, আপনাদের অনেক বড় করে দেখি। আমাদের অনেক বড় প্রত্যাশা।

নির্বাচনে ভোটাররা যাতে নির্বিঘেœ, স্বাধীনভাবে তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন, সে বিষয়ে কমিশনের সর্বাত্মক প্রচেষ্টার কথাও গণফোরামের সঙ্গে বৈঠকে নতুন করে বলেন কাজী হাবিবুল আউয়াল।

সবার সহযোগিতা চেয়ে সিইসি বলেন, আমরা চেষ্টা করব সর্বাত্মকভাবে। আর আপনাদেরও সহযোগিতা চাইব। আপনাদের আমাদের সঙ্গে থাকতে হবে। নির্বাচনের মাঠে আপনারাও যদি থাকেন, আমরাও যদি থাকি, তাহলে যে কোনো অপশক্তিকে প্রতিরোধ করা সহজ হবে।

এ দিনের বৈঠকে মোকাব্বির খানের নেতৃত্বে গণফোরামের প্রতিনিধি দল ১০ দফা সুপারিশ তুলে ধরে ইসির কাছে। দলটির সাধারণ সম্পাদক আ ও ম শফিক উল্লাহ লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘গত দুটো নির্বাচন গ্রহণযোগ্য হয়নি। আগামী সংসদ নির্বাচন ইসির জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।’

ইসির কাছে দলটির প্রত্যাশা, এই কমিশন ‘গ্রহণযোগ্য পরিবেশ’ সৃষ্টি করে সব দলের অংশগ্রহণে ও গণমানুষের আস্থা অর্জনে ‘যুগান্তকারী পদক্ষেপ’ নিতে সক্ষম হবে। আর বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ (ন্যাপ) দিয়েছে ১১ দফা প্রস্তাব।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০