কভিডবিষয়ক জটিলতা ও মৃত্যুহার কমে যাওয়ায় মানুষের মধ্যে এ নিয়ে সচেতনতা এখন কম। স্বাস্থ্যবিধি মানা বা মাস্ক পরার কথা প্রায় ভুলেই যাচ্ছি আমরা। কিন্তু করোনা বারবার ধরন পাল্টাচ্ছে, আর নতুন নতুন ধরন যা সামনে আসবে, সেসব সম্পর্কে গবেষকদের ধারণা কম। এছাড়া বয়স্ক ও ঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তিদের মৃত্যুঝুঁকি তো আছেই। আছে ভোগান্তিও। এসব কারণে করোনাভাইরাস প্রতিরোধের জন্য স্বাস্থ্য সচেতনতা ভুলে গেলে চলবে না।
চারদিকে জ্বর, কাশি, শ্বাসকষ্ট, গলাব্যথা, দুর্বলতা, শরীরে ব্যথা প্রভৃতি লক্ষণ নিয়ে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। মৌসুমি ভাইরাস জ্বরের সঙ্গে উপসর্গ মিলে যাওয়ায় অনেকেই পিসিআর টেস্ট করান না, আবার অনেকের টেস্ট করলেও ফলাফল নেগেটিভ আসে। এরপরও এ সময় জ্বর-কাশি হলে স্বাস্থ্যবিধি অবশ্যই মানতে হবে। অন্তত ৫-৭ দিন ঘরে থাকতে হবে, অন্যদের চেয়ে আলাদা হলে ভালো।
এই বর্ষা মৌসুমে জ্বর, মাথাব্যথা, কাশি হলে প্রথমেই করোনা ও ডেঙ্গু পরীক্ষা করে নিতে হবে। এ দুইয়ের মধ্যে স্পষ্ট তফাত আছে উপসর্গে, আবার দুটো রোগ একসঙ্গেও হতে পারে। ডেঙ্গুতে জ্বরের সঙ্গে প্রবল মাথা, চোখ ও শরীর ব্যথা থাকলেও সর্দি-কাশি তেমনটা থাকে না। কভিড হলে কাশি, গলাব্যথা থাকে। তবে এ মৌসুমে দুটো রোগই হঠাৎ জটিল হতে পারে এবং হাসপাতালে ভর্তির দরকার হতে পারে। তাই সবচেয়ে ভালো হলো প্রতিরোধের চেষ্টা করা।
করণীয়: বাইরে বের হলে অবশ্যই মাস্ক পরতে হবে। যথাসম্ভব জনসমাগম এড়িয়ে চলতে হবে। বয়স্ক ও রোগ প্রতিরোধক্ষমতা দুর্বল, এমন ব্যক্তির বিশেষ কোনো কাজ না থাকলে ঘরে থাকাই ভালো।
নিয়মিত বিরতিতে ২০ সেকেন্ড সাবান দিয়ে ভালোভাবে হাত ধুতে হবে। হাঁচি-কাশির সময় অবশ্যই নাকে-মুখে রুমাল ব্যবহার করতে হবে। কভিডে উপসর্গ দেখা দিলে অবশ্যই পরীক্ষা করে নিতে হবে। জ্বর না সারা পর্যন্ত সাত দিন আলাদা থাকতে হবে। জ্বর নিয়ে ভ্রমণ করা বা জনসমাগম বা অনুষ্ঠান-উৎসবে যাওয়া থেকে বিরত থাকবেন। যারা এখনও টিকা বা বুস্টার ডোজ নেননি, তারা এখনই নিয়ে নিন। জ্বর হলে সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকুন। যথেষ্ট পরিমাণ পানীয়, শরবত, তরল খাবার গ্রহণ করুন। পর্যাপ্ত ফলমূল ও সুষম খাবার খান। জ্বর-ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খাবেন। সর্দি-কাশির জন্য অ্যান্টিহিস্টামিন-জাতীয় যেকোনো ওষুধ খেতে পারেন। চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ করে ঝুঁকিপূর্ণ ও বয়স্ক ব্যক্তিরা চিকিৎসা নিন।
অধ্যাপক এ বি এম আবদুল্লাহ
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ