নিজস্ব প্রতিবেদক: ব্যাংকের বিনিয়োগ এক্সপোজার শেয়ারের ক্রয়মূল্যে নির্ধারণ করার বিষয়ে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত মঙ্গলবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ থেকে একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। প্রজ্ঞাপন জারির পর থেকেই হু হু করে বাড়তে থাকে দেশের পুঁজিবাজারের সূচক। সেই সঙ্গে বাড়ে লেনদেনের পরিমাণও। এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল বৃহস্পতিবার বাজারের শেষ দিনেও ছিল উত্থানের চিত্র। এদিন লেনদেন শেষে সূচক বাড়ে ১২ পয়েন্ট এবং লেনদেন দাঁড়ায় ১ হাজার ১৯০ কোটি টাকায়। সপ্তাহের শেষ দিনেও পুঁজিবাজারের এরকম ঊর্ধ্বমুখী অবস্থানের কারণে আগামী সপ্তাহেও বাজার ভালো যাবে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা। তাই আগামী সপ্তাহে ব্যাংক, আর্থিক খাত এবং বুøচিপ কোম্পানি সবার আগ্রহের শীর্ষে থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।
বাজার সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ব্যাংকের বিনিয়োগ এক্সপোজার শেয়ারের ক্রয়মূল্যে নির্ধারণ করার বিষয়টি নিয়ে অনেক দিন ধরে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) কাজ করে যাচ্ছিল। অবশেষে সেটার সমাধান হয়েছে এবং সেটা বাজারের ভালোর পক্ষেই হয়েছে। অন্য সময় সপ্তাহের শেষ দিন বিনিয়োগ সংগ্রহের চাপে থাকে বাজার। কিন্তু গতকাল সে রকমটি লক্ষ্য করা যায়নি। এতে সপ্তাহের শেষ দিন গতকালও ছিল বাজারে উত্থান।
এর আগে ব্যাংকগুলো বাজার মূল্যে হিসাবের কারণে তাদের নির্দিষ্ট ২৫ শতাংশ বিনিয়োগ করত না। বিনিয়োগ ও বাজার মূল্য সমন্বয়ের জন্য কিছুটা বাকি রেখে দিত। এখন বাজার মূল্য যাই হোক না কেন ব্যাংক তার নির্ধারিত ২৫ শতাংশই বিনিয়োগ করবে।
তারা বলছেন, ব্যাংকের বিনিয়োগ বাড়লে বাজার ভালো অবস্থানে যাবে, এতে বাজার থেকে ব্যাংকের একটি ভালো মুনাফা হবে। যে কারণে বিনিয়োগকারীদের আগ্রহে ব্যাংক খাত থাকবে। একই সঙ্গে আর্থিক খাতেও এর কিছুটা প্রভাব পড়বে। এতে এই খাতটিও আগ্রহে থাকবে এবং ব্যাংক ও আর্থিক খাতের বিনিয়োগের ফলে ব্লচিপ কোম্পাৃনিগুলোতে উত্থান অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছেন তারা। যে কারণে আগামী সপ্তাহে এর প্রভাব নজরে আসবে এবং বাজারের উত্থান অব্যাহত থাকবে বলে মনে করছেন বাজার সংশ্লিষ্টরা।
গতকালের বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসইতে ১ হাজার ১৯০ কোটি ২৬ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে; যা আগের দিন থেকে ৫ কোটি ১৫ লাখ টাকা কম। আগের দিন বুধবার ডিএসইতে ১ হাজার ১৯৫ কোটি ৪১ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছিল।
বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, ডিএসই প্রধান বা ডিএসইএক্স সূচক ১২ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ৬ হাজার ৩১২ পয়েন্টে। অন্য সূচকগুলোর মধ্যে ডিএসইএস বা শরিয়াহ সূচক ৪ পয়েন্ট বেড়ে অবস্থান করছে ১ হাজার ৩৭৫ পয়েন্টে। ডিএস৩০ সূচক ৬ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ২৬৫ পয়েন্টে। গতকাল ডিএসইতে ৩৮১টি কোম্পানি ও মিউচুয়াল ফান্ডের শেয়ার লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে দর বেড়েছে ১২৯টির, কমেছে ১৯৯টির এবং অপরিবর্তিত রয়েছে ৫৩টির।
অন্য বাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জে (সিএসই) ও সূচকের উত্থানে লেনদেন শেষ হয়েছে। গতকাল সিএসই সার্বিক সূচক সিএসপিআই ৭৮ পয়েন্ট বেড়েছে। এদিন সিএসইতে ২১ কোটি ৩০ লাখ টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে।