তুরস্কের পর্যটন খাতে আয় বেড়েছে তিনগুণ

শেয়ার বিজ ডেস্ক: তুরস্কের পর্যটন খাতে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে বার্ষিক ভিত্তিতে তিনগুণ আয় বেড়েছে। প্রথম প্রান্তিকে পর্যটকের আগমন বেড়েছে ২০১৯ সালের একই সময়ের মতো। এ হিসাবে মহামারি-পূর্ব সময়ের অবস্থায় ফিরে গেছে দেশটির পর্যটন খাত। খবর: ডেইলি সাবাহ।

টার্কিশ স্ট্যাটিসটিক্যাল ইনস্টিটিউটের (তুর্কস্ট্যাট) তথ্য অনুযায়ী, গত বছরের এপ্রিল থেকে জুনের তুলনায় চলতি বছরের একই সময় পর্যটন খাতে ১৯০ শতাংশ আয় বেড়ে দাঁড়ায় ৮৭২ কোটি ডলারে।

সংস্কৃতি ও পর্যটন মন্ত্রণালয় জানায়, গত জুনে এক বছর আগের একই সময়ের তুলনায় দেশটিতে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যায় ১৪৫ শতাংশ উল্লম্ফন দেখা গেছে। এ সময় পর্যটক বাড়ে পাঁচ লাখের বেশি। গত ছয় মাসে পর্যটকের সংখ্যা পৌঁছায় ১ কোটি ৬৩ লাখে, যা গত বছরের তুলনায় ১৮৬ শতাংশ বেশি। ইউক্রেনে রাশিয়ার বিশেষ সামরিক অভিযানের প্রভাব তুরস্কের পর্যটন খাতে পড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছিল। কভিড মহামারির প্রভাব কাটিয়ে যুদ্ধের কারণে সংকটে পড়লেও তা কাটিয়ে উঠতে পেরেছে বলে আশা করা হচ্ছে।

সংস্কৃতি ও পর্যটনমন্ত্রী মেহেমেত ইরসয় বলেন, চলতি বছর পর্যটন খাত থেকে নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রা ৩ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের চেয়ে বেশি আয়ের প্রত্যাশা করছি। এ সময় ৩ হাজার ৭০০ কোটি ডলার আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। আর পর্যটকের সংখ্যা ১ কোটি বেড়ে ৪ কোটি ৭০ লাখ হবে বলে আশা করছি।

মন্ত্রণালয় জানায়, দ্বিতীয় প্রান্তিকে ৮৩ দশমিক ৮ শতাংশ আয় এসেছে বিদেশি পর্যটকদের কাছ থেকে এবং ১৬ দশমিক ২ শতাংশ আয়ের উৎস প্রবাসীরা। ২০২১ সালে পর্যটন আয় এর আগের বছরের তুলনায় দ্বিগুণ ছিল (প্রায় ২ হাজার ৫০০ কোটি ডলার), যা মহামারির ধকল

কাটিয়ে উঠতে সহায়তা করে। তবে ২০১৯ সালের চেয়ে কম ছিল আয়। কঠোর বিধিনিষেধ তুলে নেয়ার পর দেশটির এ খাতটির ঘুরে দাঁড়ানো দরকার ছিল।

তথ্যে দেখা যায়, জানুয়ারি থেকে জুনে তুরস্কে বেড়াতে আসা পর্যটকদের বেশিরভাগ জার্মানির নাগরিক। তাদের সংখ্যা ২০ লাখের বেশি, যা এক বছর আগের তুলনায় চারগুণ বেশি। দ্বিতীয় স্থানে ছিল রাশিয়া। প্রায় ১৫ লাখ রুশ তুরস্কে ভ্রমণে আসেন। তৃতীয় ও চতুর্থ স্থানে ছিল যথাক্রমে ব্রিটেন (১৩ লাখ পর্যটক) ও বুলগেরিয়া (১২ লাখ পর্যটক)।

এ সময়ের মধ্যে জনসংখ্যার ভিত্তিতে তুরস্কের বৃহত্তম শহর ও শীর্ষ পর্যটনকেন্দ্র ইস্তানবুলে সবচেয়ে বেশি পর্যটক আসেন। এ শহরে প্রথম ছয় মাসে ৪১ দশমিক ৩ শতাংশ পর্যটক বেড়ে দাঁড়ায় ৬৮ লাখে। দ্বিতীয় অবস্থানে ছিল বিখ্যাত রিসোর্ট শহর আনতালিয়া। ২৪ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে পর্যটকের সংখ্যা দাঁড়ায় ৪০ লাখে। তুরস্কের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলের এডিরিনে (বুলগেরিয়া ও গ্রিসের সীমান্তবর্তী শহর) পর্যটকের সংখ্যা ১০ দশমিক ৭ শতাংশ বেড়ে হয় ১৮ লাখ।

কভিড বিধিনিষেধ শিথিল করার পর ২০২০ সালের তুলনায় গত বছর বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা ৯৪ দশমিক ১ শতাংশ বেড়ে দাঁড়ায় ২ কোটি ৪৮ লাখে। ২০২১ সালে বিদেশি পর্যটকদের মধ্যে শীর্ষে ছিল রুশ নাগরিকরা। সে সময় ১৯ শতাংশ পর্যটক ছিল রাশিয়ার, সংখ্যা যা ৪৭ লাখ। একই সময় তৃতীয় অবস্থানে থাকা ইউক্রেনের পর্যটকদের সংখ্যা ছিল ৮ দশমিক ৩ শতাংশ বা ২১ লাখ। কর্তৃপক্ষ আশা করছে, চলতি বছর পর্যটন খাতের আয় ২০১৯ সালের মতো কিংবা বছরটিকে ছাড়িয়ে যাবে। সে বছর দেশটিতে বেড়াতে আসেন ৫ কোটি ২০ পর্যটক, তাদের মধ্যে ৭০ ও ১৬ লাখ ছিলেন যথাক্রমে রাশিয়া ও ইউক্রেনের। তখন এ খাত থেকে দেশটির রাজস্ব আয় দাঁড়ায় ৩ হাজার ৪০০ কোটি ডলারে।

কর্তৃপক্ষ জানায়, মূল্যস্ফীতির কারণে অভ্যন্তরীণ ভ্রমণ কমেছে। চলতি বছরের প্রথম প্রান্তিকে ৮৮ লাখ মানুষ দেশটির বিভিন্ন স্থানে বেড়াতে যান, যা গত বছরের তুলনায় এক-চতুর্থাংশ। মারমারিস রিসোর্টের ব্যবস্থাপক ফাহরি টান বলেন, মূল্যস্ফীতির কারণে অতিথি ও অপারেটরদের ব্যয় বেড়েছে ১৫০ থেকে ২০০ শতাংশ।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০