পুঁজিবাজার থেকে তালিকাচ্যুত হচ্ছে সাভার রিফ্র্যাক্টরিজ

নিজস্ব প্রতিবেদক: পুঁজিবাজার থেকে স্বেচ্ছায় তালিকাচ্যুত হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিবিধ খাতের প্রতিষ্ঠান সাভার রিফ্র্যাক্টরিজ লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদ। মূলত কাঁচামালের অভাব, স্থানীয় বাজারে পণ্যের চাহিদা হ্রাস এবং উৎপাদন সক্ষমতার পূর্ণ ব্যবহার করতে না পারা এবং বিদেশি পণ্য সরবরাহকারীদের থেকে তীব্র প্রতিযোগিতায় টিকতে না পারার কারণে কোম্পানিটির এক কোটি ৫৯ লাখ টাকার পুঞ্জীভূত লোকসান রয়েছে। তাই কোম্পানিটির পর্ষদ তালিকাচ্যুতির সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

আর এ জন্য ইতোমধ্যে কোম্পানিটির স্থায়ী সম্পত্তির অর্থাৎ প্রপার্টি, প্লান্ট ও ইকুইপমেন্ট (পিপিই) এর পুনর্মূল্যায়ন করেছে। যাতে আর্থিক বিবৃতিতে সম্পদের ন্যায্য এবং সত্যিকারের মূল্যের প্রতিফলন ঘটে। ৩১ মার্চ, ২০২২ পর্যন্ত কোম্পানির সম্পত্তির ওপর ভিত্তি করে রহমান মোস্তফা আলম অ্যান্ড কোং, চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট দ্বারা পুনর্মূল্যায়নের এ প্রতিবেদন অনুমোদনও করেছে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদ।

ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) প্রকাশিত তথ্যের ভিত্তিতে পুনর্মূল্যায়নের পর কোম্পানিটির সম্পদের পরিমাণ বেড়েছে। ৩১ মার্চ, ২০২২ তারিখে কোম্পানিটির সম্পদের মূল্য ছিল ৪ কোটি ৫৯ লাখ ৫১ হাজার ২৫ টাকা। পুনর্মুল্যায়নের পর সম্পদমূল্য দাঁড়িয়েছে ১৮ কোটি ৭১ লাখ ৭৮ হাজার ২৮০ টাকা। অর্থাৎ পুনর্মূল্যায়নের পর ১৪ কোটি ১২ লাখ ২৭ হাজার ২৫৫ টাকার সম্পদ বেড়েছে। তবে পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও শেয়ারহোল্ডারদের সম্মতিক্রমে কোম্পানিটির পরিচালনা পর্ষদের স্বেচ্ছায় তালিকাচ্যুতির এ সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে।

এদিকে চলতি হিসাব বছরের তৃতীয় প্রান্তিকে (জানুয়ারি-মার্চ, ২০২২) কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৩৪ পয়সা (লোকসান), আগের বছর একই সময়ে যা ছিল ২৫ পয়সা (লোকসান)। অর্থাৎ তৃতীয় প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি লোকসান বেড়েছে ৯ পয়সা। অন্যদিকে চলতি হিসাব বছরের প্রথম তিন প্রান্তিকে (জুলাই, ২০২১-মার্চ, ২০২২) কোম্পানিটির ইপিএস হয়েছে ৮৭ পয়সা (লোকসান), আগের হিসাব বছরের একই সময়ে যা ছিল ৬৯ পয়সা (লোকসান)। সে হিসেবে আলোচ্য সময়ে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি লোকসান বেড়েছে ১৮ পয়সা। ৩১ মার্চ ২০২২ শেষে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) দাঁড়িয়েছে সাত পয়সা। আর প্রথম তিন প্রান্তিকে শেয়ারপ্রতি নগদ অর্থ প্রবাহ হয়েছে ৫ টাকা ১১ পয়সা (ঘাটতি)।

সর্বশেষ ২০২১ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা করে বিনিয়োগকারীদের জন্য কোনো লভ্যাংশ না দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। আলোচিত সময়ে কোম্পানিটি শেয়ারপ্রাতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৯২ পয়সা (লোকসান)। আর ৩০ জুন তারিখে কোম্পানিটির শেয়ারপ্রতি নেট সম্পদমূল্য (এনএভি) দাঁড়িয়েছে ৯৪ পয়সা। আর ওই হিসাববছরে নগদ অর্থপ্রবাহ হয়েছে তিন টাকা ৯০ পয়সা।

এদিকে গতকাল ডিএসইতে কোম্পানিটির শেয়ারদর ১ দশমিক ৪৩ শতাংশ বা ৩ টাকা ৮০ পয়সা কমে প্রতিটি সর্বশেষ ২৬১ টাকা ১০ পয়সায় হাতবদল হয়, যার সমাপনী দরও ছিল একই। দিনভর কোম্পানিটির শেয়ারদর সর্বনিন্ম ২৬১ টাকা ১০ পয়সা থেকে সর্বোচ্চ ২৬৫ টাকায় লেনদেন হয়। ওইদিন ১৮ হাজার ৩২৭ শেয়ার মোট ৯১ বার হাতবদল হয়, যার বাজারদর ছিল ৪৭ লাখ ৯০ হাজার টাকা। কোম্পানিটি ১৯৮৮ সালে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে বর্তমানে ‘জেড’ ক্যাটেগরিতে অবস্থান করছে। তাদের ৩০ কোটি টাকা অনুমোদিত মূলধনের বিপরীতে পরিশোধিত মূলধন এক কোটি ৩৯ লাখ ৩০ হাজার টাকা। রিজার্ভ ঘাটতির পরিমাণ ৫২ লাখ টাকা।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০