নিজস্ব প্রতিবেদক: দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী যে বিভিন্ন সময়ে বিএনপির অনেক নেতাকর্মীকে অপহরণ ও গুম করেছে, সেটা ‘আয়নাঘর’ তথ্যচিত্রে উঠে এসেছে। তাই অনলাইন নিউজ পোর্টাল নেত্র নিউজের তথ্যচিত্র ‘আয়নাঘর’ নিয়ে জাতিসংঘের প্রতি তদন্তের আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে আয়োজিত এক কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন মির্জা ফখরুল ইসলাম।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ৭৮তম জš§দিন উপলক্ষে রোগমুক্তি ও আশু সুস্থতা কামনা এবং দেশব্যাপী চলমান আন্দোলনে নিহতদের আত্মার মাগফিরাত ও আহতদের সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিল কর্মসূচির আয়োজন করে ঢাকা মহানগর (উত্তর-দক্ষিণ) বিএনপি।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘নেত্র নিউজে বাংলাদেশ সরকারের গোয়েন্দা সংস্থা পরিচালিত নির্যাতন সেল আয়নাঘরে রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের নির্যাতনের যে ভয়ংকর চিত্র প্রকাশিত হয়েছে, তাতে বিএনপি গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করছে।’ বিএনপির উল্লেখসংখ্যক নেতাকর্মী জোর করে অপহরণ ও গুমের শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ করেন দলটির মহাসচিব।
তিনি বলেন, সিলেটের সংসদ সদস্য ও সাংগঠনিক সম্পাদক এম ইলিয়াস আলী, ঢাকা সিটি করপোরেশনের সাবেক কমিশনার চৌধুরী আলমসহ প্রায় ৬০০ নেতাকর্মী গুম হয়েছেন। যাদের অবস্থান সম্পর্কে সরকার কখনোই সদুত্তর দিতে পারেনি। উপরন্তু কয়েকজনকে ‘আয়নাঘর’ থেকে বের করে ভয় দেখিয়ে জোর করে বলিয়েছেন, তারা নিজেরাই বিভিন্ন পারিবারিক কারণে লুকিয়েছিলেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, নেত্র নিউজের প্রতিবেদনে ‘নির্যাতন সেল’ সম্পর্কে প্রচারিত তথ্যে বিএনপির দাবি প্রমাণিত হয়েছে। ফ্যাসিবাদী সরকার ক্ষমতায় টিকে থাকার জন্য অপহরণ, গুম, খুন ও নির্যাতনের মাধ্যমে ভয়ংকর মানবাধিকার লঙ্ঘন করেছে। এ বিষয়ে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল উদ্বেগ জানিয়ে বিবৃতি দিয়েছে। জাতিসংঘ মানবাধিকার কমিশনের হাইকমিশনারের কাছে এই জঘন্যতম বর্বরোচিত মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে নিন্দা জানানো হয়েছে। তারাও অবিলম্বে স্বাধীন ও নিরপেক্ষ তদন্তের দাবি জানিয়েছে।
বক্তব্যে বেশ কয়েকটি দাবি তুলে ধরেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল। এসব দাবির মধ্যে রয়েছেÑবিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে। ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আসতে সব মামলা প্রত্যাহার করতে হবে। ৩৫ লাখ মানুষের বিরুদ্ধে দায়ের করা ‘মিথ্যা মামলা’ প্রত্যাহার করতে হবে। এই সরকারকে অবিলম্বে পদত্যাগ করতে হবে। পদত্যাগ করে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করতে হবে। সেই সঙ্গে সংসদকে বিলুপ্ত করতে হবে। নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করে সেই নির্বাচন কমিশনের অধীনে নির্বাচন দিতে হবে।