নিজস্ব প্রতিবেদক : রাজধানীর বাজারগুলোতে ফার্মের মুরগির ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দামে কিছুটা স্বস্তি ফিরতে শুরু করেছে। ডিমের দাম ডজনে কমেছে ৩০ টাকা এবং ব্রয়লার মুরগির দাম কেজিতে ২০ টাকা পর্যন্ত কমেছে। বাড়তি দামে কিনতে না চাওয়ায় ডিম ও মুরগির দাম কমে গেছে বলে জানান বিক্রেতারা। তবে ডিম ও ব্রয়লার মুরগির দামে সামান্য স্বস্তি ফিরে এলেও সবজি আগের মতোই বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে। ৬০ টাকার নিচে কোনো ধরনের সবজি নেই বললেই চলে। তবে মরিচের দাম কমেছে অনেকটাই।
বাজারে আসা নতুন শিমের কেজি ২০০ টাকা ছুঁয়েছে। একইভাবে চাল, ডাল, তেল ও পেঁয়াজসহ বেশিরভাগ নিত্যপণ্যের দাম এখনও বেশি। গতকাল রাজধানীর বাজারগুলোতে এমন চিত্র দেখা গেছে।
শুক্রবার রাজধানীর বাজারগুলোতে এক ডজন ফার্মের ডিম ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায় বিক্রি হতে দেখা গেছে। আর মুদি দোকানে প্রতিটি ডিম ১১-১২ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। কয়েক দিন আগে মুদি দোকানে প্রতিটি ডিম ১৬ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়। আর হাঁসের ডিমের ডজন বিক্রি হয় ২১৫ থেকে ২২৫ টাকায়। দেশি মুরগির ডিমের ডজন বিক্রি হচ্ছে ২৩৫ থেকে ২৪৫ টাকায়।
রাজধানীর গোপীবাগের ব্যবসায়ী আহমেদ হোসেন বলেন, ‘গত দুই দিনে ডিমের দাম ডজনে কমেছে অন্তত ৩০ টাকা। বাজারে এখন পর্যাপ্ত ডিম রয়েছে। অথচ চাহিদা সেই তুলনায় কম।’ তিনি উল্লেখ করেন, ক্রেতাদের চাহিদা কমে যাওয়ায় বিক্রেতারাও ডিম আনা কমিয়ে দিয়েছেন। আগে যেখানে একজন খুচরা বিক্রেতা গড়ে প্রতিদিন ৫০০টি ডিম এলাকাভিত্তিক পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিতেন, সেখানে এখন ২৫০-৩০০টি করে নিচ্ছেন।
এদিকে, গত সপ্তাহে প্রতি কেজি ২০০ টাকা করে বিক্রি হওয়া ব্রয়লার মুরগির দাম কমে শুক্রবার ১৮০ টাকা করে বিক্রি হচ্ছে। ব্রয়লার মুরগির পাশাপাশি পাকিস্তানি কক বা সোনালি মুরগির দামও কিছুটা কমেছে। সোনালি মুরগির কেজি বিক্রি হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা, যা গত সপ্তাহে ছিল ৩০০ থেকে ৩২০ টাকা। ডিমের মতোই দাম কমলেও ব্রয়লার মুরগি যে দামে বিক্রি হচ্ছে, তাকে স্বাভাবিক বলছেন না ক্রেতারা। মানিকনগর বাজারে ব্রয়লার মুরগি কিনতে আসা নাসিমা আক্তার বলেন, ‘বাজারে সবকিছুর দাম বাড়তি। ৫০০ টাকা নিয়ে বাজারে গেলে তেমন কিছুই কেনা যায় না।’
বাজারে খোলা সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৮৫ থেকে ১৯০ টাকায়। বোতলজাত সরিষার তেলের লিটার বিক্রি হচ্ছে ৩২০ টাকায়। পামঅয়েল বিক্রি হচ্ছে ১৪৫ থেকে ১৫০ টাকায়।
নাজির ও মিনিকেট চাল বিক্রি হচ্ছে ৭৮ থেকে ৮০ টাকা কেজি দরে। গরিবের মোটা চাল এখন ৫৪ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া মাঝারি মানের চালের দাম ৫৮ টাকা কেজি। প্যাকেট আটা ৬৫ টাকা এবং চিনি বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা কেজি দরে।
এদিকে গত সপ্তাহের তুলনায় এই সপ্তাহে কেজিতে ২০ থেকে ৩০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে শসা বিক্রি হচ্ছে ৮০ টাকা কেজি দরে। আর শিম বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা কেজি। ১০০ টাকা বেশি দামের সবজির তালিকায় রয়েছে টমেটো ও গাজর। সবজি দুটি বিক্রি হচ্ছে যথাক্রমে ১৩০ টাকা ও ১৬০ টাকা করে। কাঁচা মরিচ কেজিতে ১০০ টাকা কমে ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। এছাড়া পেঁপে ২০
টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, কাঁকরোল ৪০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ৪০ টাকা, বেগুন ৬০ থেকে ৭০ টাকা, শসা হাইব্রিড ৮০ টাকা, আর দেশি ৯০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। ওলকচু বড় ৫০ টাকা, জালি কুমড়া প্রতিটি ৪০ টাকা, কাঁচা কলা হালি ২৫ টাকা ও মিষ্টিকুমড়া প্রতি পিস ৩০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ধুন্দল কেজি ৪০ টাকা, কচুরমুখি ৪০ টাকা, করলা ৬০ টাকা, পটোল ৪০ টাকা, আলু ৩০ টাকা, পেঁয়াজ ৪৫ থেকে ৫০ টাকা, রসুন ৮০ থেকে ১২০ টাকা, আদা ১০০ থেকে ১২০ টাকা, কচুর লতি ৫০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। এছাড়া পুঁইশাকের আঁটি ২০ টাকা, লালশাক ১৫ টাকা, মুলাশাক ১৫ টাকা, কলমি শাক ১০ টাকা, ডাঁটা শাক ১০ টাকা, পালং শাক ৩০ টাকা আঁটি দরে বিক্রি করা হচ্ছে।
রুই মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩২০ থেকে ৪৫০ টাকা। তেলাপিয়া, পাঙাশ মাছের কেজি ২০০ টাকা। শিং মাছের কেজি ৩৫০ থেকে ৪৬০ টাকা, আর কৈ মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। পাবদা মাছের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৩৫০ থেকে ৫০০ টাকা। এক কেজি ওজনের ইলিশের কেজি এক হাজার ৬০০ থেকে এক হাজার ৮০০ টাকা। ৭০০-৮০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৯০০ থেকে এক হাজার টাকা। আর ৪০০-৫০০ গ্রাম ওজনের ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা।