মিডিয়াকে সহনশীল হওয়ার অনুরোধ পররাষ্ট্রমন্ত্রীর

প্রতিনিধি, গোপালগঞ্জ : পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, এ দেশ স্বাধীন দেশ। এখানে সবার বাকস্বাধীনতা আছে। ভিন্ন মত প্রকাশের স্বাধীনতা আছে। কোনো কোনো লোক বলে আমরা না কি মিডিয়াকে কন্ট্রোল করি। এটা মোটেও সঠিক না। যতদিন পাবলিক লাইফে আছি অবশ্যই মিডিয়া আমাকে নিয়ে গল্প বানাবে। তবে বেশি বেশি ডাহা মিথ্যা বললে খারাপ লাগে। তাই মিডিয়াকে একটু সহনশীল হওয়ার অনুরোধ করেন মন্ত্রী। গতকাল শুক্রবার গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন।

দ্রব্যমূল্য নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, জিনিসপত্রের দামে আমরা খুব কষ্টে আছি। সব কিছুর দাম হুহু করে বেড়ে যাচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আমরাও উদ্বিগ্ন। মানুষের যাতে কষ্ট না হয় সেটা আমাদের একমাত্র লক্ষ্য। 

এ প্রসঙ্গে এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ডিমের দাম ৯০ টাকা ছিল সেটা হয়ে গেল ১৫০ টাকা। আমি এটার অঙ্ক কোনোভাবে মেলাতে পারি না। আমাদের ডিজেলের দাম বেড়েছে ২৮ টাকা প্রতি লিটারে। একটা ডিম আনতে এক লিটার ডিজেল লাগে না। দাম বাড়া উচিত ছিল ১ টাকা। দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির পেছনে একটা কারসাজি আছে। এত বাড়ার কোনো কারণ নেই। অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির জন্য কিছু লোক সরকারের পেছনে লেগেছে। 

মন্ত্রী বলেন, কেউ কেউ বলছেন আমরা শ্রীলঙ্কা হয়ে যাব, সেই প্রেক্ষিতে আমি বলেছি, বাংলাদেশ শ্রীলঙ্কা হওয়ার মতোর কোনো কারণ নেই। অন্যান্য দেশের তুলনায় আমরা ভালো আছি। আমেরিকায় বছরে শতকরা ১ থেকে ২ ভাগ মূল্যস্ফীতি হয়। এবার ৯ ভাগ হয়েছে। ইল্যান্ডেও শতকরা ১ থেকে ২ ভাগ হয় কিন্তু গতকাল মূল্যস্ফীতি ছিল ১০ ভাগ। পাকিস্তানের ৩৭ ভাগ। আর আমাদের ৭ ভাগ। সুতরাং সেদিক থেকে আমরা অনেক ভালো আছি।

পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, ইসরাইলে যখন যুদ্ধ হয় তখন তেলের দাম বাড়ে আর পৃথিবীতে খাদ্য ঘাটতি হয়। এখন ৫০ বছর পরে আমি তাজ্জব এখনও তেলের দাম বেড়েছে। যুদ্ধ একটা লেগেছে আর খাদ্যদ্রব্যেরও দাম বাড়ছে। এটা খুব আশ্চর্যের বিষয়। তবে আমাদের সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে। কারণ এ দেশটা আমাদের। দেশে যদি অস্থিতিশীলতা তৈরি হয় তাহলে যারা অপপ্রচার করে তারাও ভালো থাকতে পারবে না।

এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, শেখ হাসিনা আছেন বলেই আমাদের দেশের উন্নয়ন হচ্ছে, বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি আছে। অসাম্প্রদায়িক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তুললে সবার মঙ্গল হবে। আর এদেশে যত নাগরিক আছে সে যেকোনো ধর্মের হোক সবার সমান অধিকার। শেখ হাসিনা যদি সরকারে থাকেন তাহলে স্থিতিশীলতা থাকে। আর স্থিতিশীলতা থাকলেই আমাদের উনয়নের মশাল অব্যাহত থাকবে। 

ভারতকে নিয়ে দেয়া বক্তব্য প্রসঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আমি ভারত সরকারকে বলেছি কিছু কিছু লোক সময় সময় অনেক উসকানিমূলক কথা বলে। আপনার দেশেও কিছু দুষ্ট লোক আছে, আমার দেশেও দুষ্ট লোক আছে। তারা তিলকে তাল করে। আপনার সরকার এবং আমার সরকারে দায়িত্ব হলো তিলকে তাল করার সুযোগ না দেয়া। আমরা যদি এটা করি তাহলে আমাদের সাম্প্রদায়ি?ক সম্প্রীতি থাকবে। আমাদের মধ্যে কোনো অস্থিতিশীল পরিবেশ সৃষ্টি হবে না। আমরা চাই শেখ হাসিনা সরকার স্থিতিশীল থাকুক। এ ব্যাপারে আপনারা (ভারত সরকার) সাহায্য করলে খুশি হবো।

মন্ত্রী আরও বলেন, ভারত সরকারকে বলেছি আপনার মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন শেখ হাসিনা থাকায় স্থিতিশীলতা আছে। স্থিতিশীলতা থাকায় আপনাদের দেশের উন্নতি হচ্ছে, আমাদের দেশেও উন্নতি হচ্ছে। ব্যবসা-বাণিজ্যে আমরা আপনাদের দেশে আসছি। ব্যবসা-বাণিজ্য ভালো হচ্ছে। সুতরাং স্থিতিশীলতা সবচেয়ে গুরত্বপূর্ণ। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা খুব দরকার। তাতে আপনার দেশেরও মঙ্গল হবে, আমাদের দেশেরও মঙ্গল হবে।

 

আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
১০১১১২১৩১৪
১৫১৬১৭১৮১৯২০২১
২২২৩২৪২৫২৬২৭২৮
২৯৩০