নিজস্ব প্রতিবেদক: মিয়ানমারে সামরিক সরকার ক্ষমতায় আসার পর আগের চেয়ে বাংলাদেশে বেশি ইয়াবা প্রবেশ করছে। দেশটির ক্ষমতাচ্যুত নেত্রী অং সান সু চির সরকারের তুলনায় বর্তমান সময়ে আড়াইগুণ বেশি ইয়াবা বাংলাদেশে ঢুকছে। গতকাল বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির বৈঠক সূত্রে এ তথ্য পাওয়া গেছে।
জানা গেছে, কমিটির আগের বৈঠকে বিষয়টি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় বলে কার্যবিবরণী থেকে জানা গেছে। গতকালের বৈঠকে ওই কার্যবিবরণী অনুমোদন দেয়া হয়।
ওই বৈঠকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান বলেন, মিয়ানমারের সামরিক সরকার ক্ষমতায় আসার পর আগের চেয়ে আড়াইগুণ বেশি ইয়াবা বাংলাদেশে ঢুকছে। মিয়ানমার সরকারের সঙ্গে আলোচনা করলেও সেখানকার সামরিক সরকার বরং ইয়াবা কারবারিদের পৃষ্ঠপোষকতা করছে। নাফ নদী ছাড়াও দুর্গম সীমান্ত দিয়ে বাংলাদেশে ইয়াবা ঢুকছে। বান্দরবান ও খাগড়াছড়ির অনেক দুর্গম পথ রয়েছে, যেখানে সার্বক্ষণিকভাবে নজরদারি করা সম্ভব হয় না। সেখানকার একটি বিওপি থেকে অন্য বিওপিতে যেতে দুদিন সময় লেগে যায়। ওইসব এলাকায় বিওপির সংখ্যা বাড়ানো হচ্ছে বলেও তিনি জানান।
কমিটির সভাপতি শামসুল হক টুকু বলেন, মিয়ানমার থেকে আসার পর রোহিঙ্গাদের হাত ধরে বাংলাদেশে ইয়াবার প্রসার শুরু হয়। এরপর সারাদেশে তা ক্রমেই ছড়িয়ে পড়ে। তিনি আক্ষেপ করে বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেও মাদক বাণিজ্য ও সেবন রোধ করা সম্ভব হচ্ছে না।
বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে জানা গেছে, কমিটির আগের বৈঠকে মসজিদ, মন্দির ও গোরস্তানের কমিটি নিয়ে আলোচনা হয়। ওই বৈঠকে সভাপতি টুকু বলেন, সম্প্রতি মসজিদ, মন্দির ও গোরস্তান কমিটি থেকে প্রকৃত ধর্মপ্রাণ ভালো মানুষ ক্রমেই দূরে সরে যাচ্ছেন। মাদক কিংবা সমাজবিরোধী কাজে জড়িত সংশ্লিষ্টরা রাজনৈতিক প্রভাব খাটিয়ে এসব পদে আসছেন। ফলে প্রকৃত সৎ মানুষেরা সমাজ ও দেশের জন্য অবদান রাখতে পারছে না।
এ সময় তিনি বলেন, দেশের সব মসজিদ, মন্দির ও গোরস্তানসহ অন্যান্য ধর্মীয় উপসনালয়ের কমিটি ইসলামিক ফাউন্ডেশনের অধীন গঠিত হলে ইতিবাচক ফল আসবে। পরে কমিটির সুপারিশে অন্য একটি বৈঠকে ইসলামিক ফাউন্ডেশনের মহাপরিচালককে আমন্ত্রণ জানানোর সিদ্ধান্ত হয়।
এদিকে সংসদ সচিবালয়ের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বৈঠকে অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশে অনাকাক্সিক্ষত কোনো ঘটনা যাতে না ঘটে, সেজন্য সবাইকে সতর্ক থাকতে এবং সংসদ সদস্য ভবনের পাশে গাড়ি চলাচলের সময় হর্ন না বাজানোর বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার সুপারিশ করা হয়। এছাড়া স্বামী-স্ত্রী সরকারি চাকরিতে কর্মরত থাকলে তাদের পাশাপাশি কর্মস্থলে পদায়নে বিশেষ লক্ষ রাখার জন্য সুপারিশ করা হয়।
কমিটির সভাপতি শামসুল হক টুকুর সভাপতিত্বে বৈঠকে বৈঠকে কমিটির সদস্য স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান, হাবিবর রহমান, সামছুল আলম দুদু, কুজেন্দ্র লাল ত্রিপুরা, নূর মোহাম্মদ, সুলতান মোহাম্মদ মনসুর আহমদ ও রুমানা আলী অংশ নেন।